শুরুতে অন্ধকারে উঁকিঝুঁকি,
পরে অস্থির ডানা-ঝাপটা,
শেষে কাগজে এসে ব’সে পড়া;
কখনও একটু আধুট
নড়াচড়া,ঈষৎ ওলোট পালট। নিজের লেখা
পঙ্ক্তিমালার দিকে ব্যাকুল
তাকিয়ে থাকি, যেমন সালিম আলি
গভীর নিরীক্ষণ করতেন পাখিদের
আমি চাই না আমার কবিতা
শুধু আটকে থাকুক বইয়ের
পাতায়, আমার প্রবল সাধ,-
রচিত পঙ্ক্তিমালা
উড়াল দিক দূর দিগন্তে,
স্পর্শ করুক মেঘমালা; গাছপালা এবং
পাখপাখালির সঙ্গে কথা বলুক, কোকিল
হ’য়ে ডাকুক মানুষের অন্তরে প্রহরে প্রহরে।
আমি চাই আমার কবিতা প্রজাপতি রূপে
চুম্বন করুক প্রিয়তমাকে,
নিঃসঙ্গ মানুষের মন থেকে
সরিয়ে দিক
বেদনার গহন ছায়া,
ক্ষুধার্তদের সানকিতে ঝরুক
রকমারি খাবার হ’য়ে
হারিয়ে-যাওয়া শিশুকে ঠিক
পথ দেখিয়ে নিয়ে যাক মায়ের আলিঙ্গনে।
আমি চাই কবিতা মিছিলের যুবার
সাহসের দীপ্তি হ’য়ে ছড়িয়ে যাক সবখানে,
শহীদের মাথার পেছনে আমার কবিতা হোক জ্যোতির্বলয়।
এ-ও তো হয়, হঠাৎ কোনওদিন পথের পাশে
আহত পাখির ছিন্নভিন্ন পালকগুচ্ছ দেখে আমার
কবতার খাতার কাটাকুটিময় কয়েকটি
মৃত পঙ্ক্তির কথা মনে প’ড়ে যায়। নিশ্চয়ই
কোনও জখমি কিংবা মুমূর্ষু পাখি দেখে
সালিম আলি শিউরে উঠতেন।