Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মেঘ মল্লারের দেশে || Nivedita De

মেঘ মল্লারের দেশে || Nivedita De

মেঘ মল্লারের দেশে

গারো,খাসি ,জয়ন্তীয়া পাহাড়ে ঘেরা ছোট গ্রাম চেরাপুঞ্জি। প্রতিনিয়তই সেখানে বৃষ্টির অবাধ যাতায়াত। আকাশের বুকে মেঘেদের আনাগোনা। এই মেঘমল্লারের দেশে না এলে বোঝা যায় না যে আকাশের সাথে মেঘ আর বৃষ্টির সখ্যতা যেন যুগ যুগান্তরের। পুজোর ছুটিতে বেড়াতে এসেছে অনিমেষ ও নন্দিতা। বিয়ের পর এই প্রথম দীর্ঘ ছুটিতে কোথাও তাদের বেড়াতে যাওয়া। নইলে পুজোর আনন্দ,পুজো মন্ডপ,বন্ধু,আর জমাটি আড্ডা ছেড়ে কোথাও যেতে ওরা নারাজ।পুজোর কাজে সময় কাটাতেই নন্দিতার আনন্দ সবচেয়ে বেশি।

গৌহাটি থেকে শিলং হয়ে বৃষ্টি ধোয়া চেরাপুঞ্জি গ্রামে এসে ওরা পৌঁছালো। থেকে থেকেই বৃষ্টি। কারণে অকারণে বৃষ্টি। ধোঁয়া ধোঁয়া মেঘ, যেন হাত বাড়ালেই মেঘ আর জল! বৃষ্টির জল যাতে ঝরে যায়, সেই আদলে ছোট ছোট ঘর বসতি। অবাক কান্ড হল,সেখানে ছোট ছোট ছেলে, মেয়ে ও ঘর সংসারের কাজ সামলাচ্ছেন বাড়ির ছেলেরা। মেয়েরা অর্থ রোজগারে ঘরের বাইরে অমানুষিক খাটছেন। এমনই এক পরিবারে দুই ভাই কে বিয়ে করেন, মিংমা। এক ভাই মিংমার চেয়ে বয়সে বেশ বড়, আর ছোট ভাই মিংমার চেয়ে বয়েস ছোট। যেহেতু রীতি অনুযায়ী মেয়েরা বিয়ে করে স্বামী কে ঘরে আনেন, তাই বিয়ের পর ছেলেদের মেয়ের বাড়িতেই থাকতে হয়। সংসারে আয় ব্যায়,অর্থনীতি পুরোপুরি পরিচালনা করেন মিংমা ও তার মা ওয়াং। ওদের হোটেল ব্যবসা। সারাদিন কতো লোকের আনাগোনা। মিংমা যথেষ্ট সুন্দরী, আর সর্বত্র তার কড়া নজর। কাজে কোথাও এতটুকু ভুল হবার উপায় নেই। একজন স্বামী ঘর সামলান। আর একজন স্বামী ব্যবসার জন্য বাইরে খাটেন। ওদের তিন সন্তান। কোন টা কার সন্তান বোঝার কোনও উপায় নেই।
কাজ শেষ হলে মিংমার বন্ধু রেওতাং রোজ আসে মিংমার সাথে গল্প হাসি, আড্ডা মারে।একে অপরের গায়ে ঢলে পড়ে,হাসে কথা বলে বয়স্ক স্বামী সব দেখেও চুপ থাকেন।

নন্দিতারা বেড়াতে গিয়ে সব দেখেশুনে খুব অবাক হয়।
ওদের ওখানে মেয়েদের কন্যা সন্তান হলে সংসারে সকলের আনন্দ বেশি।সংসারে খুশির বান আসে। একদিন রাতে নন্দিতার খুব জল তেষ্টা পেলে, নিচে হোটেলে নেমে আসতেই নন্দিনী দেখে বৃদ্ধ স্বামী ওদের ভাষায় কি যেন বলছেন, আর মিংমা, সেই কথায় পাত্তা না দিয়ে বৃদ্ধ স্বামীকে চিৎকার করে বকছে আর মারছে। শিশুর মতোন কাঁদছেন বৃদ্ধ লোকটি। সেই দেখে নন্দিতার মন খুব খারাপ হয়ে যায়। হোটেলের রুমে এসে অনিমেষ কে সব ঘটনা বলার পর একটু চুপ থেকে আবারও বলে আমি যদি তোমার সাথে এমন করতাম, কি করতে তুমি? অনিমেষ কোন উত্তর না দিয়ে, নন্দিনীর হাতে হাত রেখে বললেন, পুরুষ হোক কি নারী যে ক্ষমতায় আসেন সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, একে অপরের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেন। নন্দিতা একটু চুপ থেকে বললো, পুরো ভারতবর্ষ যদি নারী তান্ত্রিক দেশ হতো, তবে বেশ হতো!
বেড়াতে গিয়ে এক নতুন ধরনের অভিঞ্জতা নিয়ে নন্দিনীরা কোলকাতায় এলো। সাথে সুগন্ধি এলাচ ও চা পাতা , সবুজ প্রকৃতি ও অনেক স্মৃতি নিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress