মন্ত্রীমশাই আসবেন আজ বিকেলবেলায় । সকাল থেকে
অনেকরকম বাদ্যিবাদন, পুলিশবাহার । আমরাও সব যে-যার মতো জাপটে আছি
ঘরখোয়ানো পথের কোনা ।
মন্ত্রীমশাই আসবেন আজ, তখন তাঁকে
একটি কথা বলব আমি ।
বলব যে এই যুক্তিটা খুব বুঝতে পারি
সবাইকে পথ দেবার জন্য কয়েকজনকে সরতে হবে
তেমন-তেমন সময় এলে হয়তো আমায় মরতে হবে ।
বুঝতে পারি ।
এ-যুক্তিতেই ভিটেমাটির ঊর্ণা ছেড়ে বেরিয়েছিলাম
অনেক আগের রাতদুপুরে ঘোরের মতো
কন্ঠাবধি আড়িয়ালের ঝাপটালাগা থামিয়েছিলাম
কম্বুরেখায় অন্ধরেখায় মানিয়েছিলাম
ছাড়তে হবে
সবার জন্য কয়েকজনকে ছাড়তে হবে ।
কিন্তু সবাই বলল সেদিন, হা কাপুরুষ হদ্দ কাঙাল
চোরের মতো ছাড়লি নিজের জন্মভূমি !
জন্মভূমি ? কোথায় আমার জন্মভূমি খুঁজতে খুঁজতে জীবন গেল ।
দিন কেটেছে চোরের মতো দিনভিখারির ঘোরের মতো
জাগতে গিয়ে স্পষ্ট হলো
সবার পথে সবার সঙ্গে চলার পথে
আমরা শুধু উপলবাধা ।
আমরা বাধা ? জীবন জুড়ে এই করেছি ?
দেশটাকে যে নষ্ট করে দিলাম ভেবে কষ্ট হলো ।
এখান থেকে ওখানে যাই এ-কোণ থেকে ওই কোনাতে
একটা শুধু পুরোনো জল জমতে থাকে
চোখের পাশে
আনিয়ালের কিনার ঘেঁষে, কিন্তু তবু বুঝতে পারি
সবার জন্য এই আমাদের কয়েকজনকে মরতে হবে ।
একটা কেবল মুশকিল যে, মন্ত্রীমশাই
ওদের মতো সবার মতো এই ভুবনের বিকেলবেলায়
জন্মভূমি পায়ের কাছে সন্ধ্যা নেমে আসার মতো
মাঝেমধ্যে আমারও খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে—
তার কী করা ?