Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বেণীসংহার – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay

বেণীসংহার – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay

সকালবেলা ব্যোমকেশ তার কেয়াতলার বাড়িতে চায়ের পেয়ালা এবং খবরের কাগজ নিয়ে বসেছিল। শীতের সকাল‌, বেলা আন্দাজ আটটা। অজিত ইতিমধ্যেই তাড়াতাড়ি চা খেয়ে বেরিয়ে গেছে‌, একজন প্রখ্যাত লেখকের বাড়িতে গিয়ে দেখা করতে হবে। লেখক মহাশয় একটি নতুন বই দেবেন প্রতিশ্রুত হয়েছেন‌, কিন্তু প্রখ্যাত লেখকদের অনেক উমেদার‌, বইটা আগেভাগে হস্তগত করা দরকার।

খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের পাতাগুলি শেষ করে ব্যোমকেশ চায়ের পেয়ালা তুলে নিল। পেয়ালার অবশিষ্ট চা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে‌, সে এক চুমুকে পেয়ালা নিঃশেষ করে আবার কাগজ তুলে নিল। এবার খবর পড়তে হবে।

আজকাল খবরের কাগজ পড়লেই বোঝা যায় পৃথিবীর অবস্থা প্রকৃতিস্থ নয়। ভূমিকম্প জলোচ্ছাস অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি তো আছেই‌, তা ছাড়া মানুষগুলোও যেন ক্ষেপে গেছে। যুদ্ধ বিপ্লব অন্তর্বিবাদ ধর্মঘট ঘেরাও বোমা কাঁদানে গ্যাস লাঠালাঠি। পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা এত বেড়ে গেছে বলেই বোধহয় কারুর প্রাণে শান্তি নেই। যেখানে এত গাদাগাদি ঠাসাঠাসি সেখানে শান্তি কোথা থেকে আসবে?

কাগজের পাতা ওল্টাতে হলো না। প্রথম পৃষ্ঠাতেই দেখা গেল এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ব্বিরণ। পরশু রাত্রে খুন হয়েছে‌, কাল সকালে জনাজানি হয়‌, আজ কাগজে বেরিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার ঘটনা‌, ব্যোমকেশের বাড়ি থেকে বেশি দূর নয়; সদর রাস্তায় বেরিয়ে দক্ষিণে কিছু দূর গেলেই তিনতলা প্রকাণ্ড বাড়িটা চোখে পড়ে‌, তার কপালের ওপর বড় বড় অক্ষরে লেখা-বেণীমাধব। ব্যোমকেশ অনেকবার বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করেছে। কিন্তু বাড়ির অধিবাসীদের সঙ্গে আলাপ ছিল না। কাগজ থেকে জানা গেল বাড়ির মালিক বৃদ্ধ বেণীমাধব চক্রবর্তী এবং তাঁর দেহরক্ষীকে কেউ নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

ব্যোমকেশ নিবিষ্ট মনে হত্যার ব্বিরণ পড়ল‌, তারপর অন্যমনস্কভাবে সিগারেট ধরাল। পরশু। রাত্রে পাড়াতে এমন একটা লোমহর্ষণ খুন হয়ে গেছে‌, অথচ সে খবর পায়নি। রাখাল এই এলাকার দারোগা‌, সে নিশ্চয় তদন্তের ভার নিয়েছে; কিন্তু ব্যোমকেশকে কিছু জানায়নি। হয়তো সোজাসুজি ব্যাপার‌, রহস্য বা জটিলতা কিছু নেই‌, তাই রাখাল আসেনি। আজকাল জটিল রহস্যও বড়ই দুর্লভ হয়ে পড়েছে—

টেলিফোন বেজে উঠল। ব্যোমকেশ হাত বাড়িয়ে ফোন কানের কাছে ধরতেই ওপার থেকে আওয়াজ এল–’ব্যোমকেশদা? আমি রাখাল। আজকের কাগজ পড়েছেন?’

ব্যোমকেশ বলল–’পড়েছি। বেণীসংহার?’

‘কি বললেন-বেণীসংহার? ওঃ হ্যাঁ হ্যাঁ‌, বেণীসংহারই বটে‌, তার সঙ্গে মেঘরাজ বধ। আমি অকুস্থল থেকে কথা বলছি।’

‘কি ব্যাপার?’

‘ব্যাপার একটু প্যাঁচালো ঠেকছে। কাল সকাল থেকে তদন্ত শুরু করেছি। এখনো কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আপনি কি খুব ব্যস্ত আছেন?’

‘না।‘

‘তাহলে একবারটি এদিকে আসবেন? আপনার বাড়ি থেকে বেশি দূর নয়‌, পাঁচ মিনিটের রাস্তা। বাড়ির নাম বেণীমাধব।’

‘জানি।’

‘কখন আসছেন?’

‘অবিলম্বে।’

Pages: 1 2 3
Pages ( 1 of 3 ): 1 23পরবর্তী »

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress