পয়লা বৈশাখ…..আমার স্মৃতি
পয়লা বৈশাখ মানেএকটা আনন্দের স্মৃতি,একটা মন কেমন করা ভালোলাগা॥আমার ছেলেবেলার পয়লা বৈশাখের আনন্দের স্মৃতি আমার চোখের সামনে ঘুরে ঘুরে আসে, সেই প্রিয় জনরা যারা না ফেরার দেশে চলে গেছে তাদের সাথে কাটানো সোনালী সময়আমার মনেপড়ে ॥ আমাদের কুলদেবতা ”রামচন্দ্র”॥ ভোরবেলা থেকে উঠেই রঘুবীরের সাজানোর জন্য ফুল তুলতে যেতাম॥ফুলতুলে মালা গাথতাম॥ পরে স্নান সেরে ঠাম্মির সাথে মন্দিরে যেতাম!মন্দিরে ভোগ পৌঁছেই ফিরে বাড়ির ”রঘুবীরের” পূজোর জোগাড়ে লাগতাম॥বাড়ি ভর্তি লোকজন গম গম করতো॥ পূজোর শেষে ঠাম্মি,বড়ঠাম্মির সাথে প্রসাদ বিতরণ করতাম॥ দুপুরে অনেক লোকজন আমাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে আসতেন॥ আমাদের বিরাট লম্বা বারান্দায় পংক্তি ভোজনে বসতেন সবাই! আমি ঠাম্মিদের সাথে পরিবেশন করতাম॥ ঠাম্মির হাতে বালতি আমি তা থেকে প্রসাদ পাতে পাতে দিতাম॥খাওয়া হয়ে গেলে হাতধোওয়ার জন্য জল ঢেলে দিতাম হাতে॥
এর পর হতো বস্ত্রদান॥দাদু ঠাম্মির হাত থেকে ধুতি ও শাড়ী নিয়ে ওদের হাতে দিতাম॥সবাই কত্তো আশীর্বাদ করতো॥ঠাম্মি বলতো,,,”নমো করো” আমি মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সবার উদ্দেশ্যে প্রণাম করতাম!আমার খুব ভালো লাগতো॥ ঠাকুর ঘরের ফুল,ধূপধূনো বেলপাতা নৈবেদ্য সবের মিশ্রিত গন্ধে কেমন আবেশ লাগতো॥ বিকেলে দাদুভাই এর সাথে হালখাতায় যেতাম! ”ডাক্তারের নাতিন” বলে সবাই খুব আদর করতো॥ আমিও বাংলা ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির প্যাকেট হাতে ফিরতাম॥আমার খুব ভালো লাগতো হালখাতার জমায়েত,,,,কত মানুষের সাথে দেখা হত! আর ঐ পৌরানিক ছবির ক্যালেন্ডার তো গল্পের আকর॥ বাড়িফিরে ঠাম্মির গল্পের ঝাঁপি থেকে ঐ গল্প শোনা, আমার পয়লা বৈশাখের সাথে একাকার হয়ে আছে॥আজও পয়লা বৈশাখের বাংলা ক্যালেন্ডার আমাকে স্মৃতি মেদুর করে তোলে,! ভুলি কেমনে,?