নিশ্চিন্তের একটা ঘুম
মুষল ধারে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা সামলাতে নাকি নিজেকে। দূর ছাই বলে ছাতা বন্ধ করে গাড়ি বারান্দার নীচে দাঁড়িয়ে রইলো। থামুক হাওয়ার টানে যেতেই পারছে না। আস্তে আস্তে জল জমতে আরম্ভ করলো। চার ধাপ সিঁড়ি পেরিয়ে দরজার সাথে সেটে দাঁড়িয়ে রইলো। অন্ধকারে ভিজে গায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বেশ ভয় ভয় করছে।।
চোখে ঘুম এসে গেছিলো কখন হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে জানে না। কড়াতে লেগে শব্দ হতে দরজা খুলে দিলেন কেউ, আর ব্যালেন্স না রাখতে পেরে হুড়মুড় করে পড়ে গেল। চেয়ে দেখে দশ বছরের একটা ছেলে। ভিতর থেকে এক ভদ্রমহিলা আওয়াজ, খোকন কে এলো, এক আগন্তুক মা। ভেতরে কি আসতে বলবো। না না কে কোথাকার, দরজা বন্ধ করে দাও। মা আগন্তুক কিন্তু মহিলা। ভদ্রমহিলা তড়িঘড়ি এসে আমাকে দেখে অবাক, এ মা আসুন আসুন, ভিতরে আসুন, আপনি তো ভিজে গেছেন।
গুটি গুটি পায়ে ঢুকে পড়লাম। কারন অনেক লোক তখন গাড়ি বারান্দার নীচে আশ্রয় নিয়েছে।
নিন ধরুন, জামা কাপড় পাল্টে নিন, চা বানাচ্ছি খাব আর গল্প করবো। ভ্রু কুঁচকে তাড়াতাড়ি পাল্টে এলাম আর চা খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলাম খোকন বাবু তুমি আগন্তুক মানে জানো। হুঁ আমি আর মা টিভিতে দেখছিলাম সিনেমাটা। খুব ভালো লাগছিলো।
ম্যাডাম আমার মোবাইল কাজ করছে না। যা বৃষ্টি বাড়ি যেতে দেরি হবে যদি আপনি আমার মাকে ফোনে জানিয়ে দেন। হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যালো আমি বিশাখা কর বলছি বৃষ্টিতে আমার বাড়িতে আপনার মেয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আজ আর ছাড়ছি না, ম্যানিকিওর পেডিকিওর সব করবো ওনার কাছে। আপনার চিন্তা নেই। আমি আপনার মেয়ে যেখানে কাজ করে সেখানেই যাই। আজ থেকে যাক কাল যাবে।
আপনি তবে আমাদের ক্লায়েন্ট, বাবা খুব বাঁচা বেঁচে গেলাম। এই ঝড় জল বৃষ্টিতে খুব মুশকিল হতো। এমন সময় এক আগন্তুক সত্যি এসে উপস্থিত হলো সে কিন্ত চারপেয়ী জীব। মানুষের মত কড়া নাড়তে লাগলো। ছেলে খুলবে মা দেবে না। চলল টানা পোড়েন। সাড়া শব্দ না শুনে খুলে দেখে চলে গেছে।
অতএব সকলে মিলে গল্প গাঁথা রাতে খিচুড়ি বেগুন ভাজা খেয়ে নিশ্চিন্তে একটা ঘুম।