Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » টেনিদা আর সিন্ধুঘোটক || Narayan Gangopadhyay » Page 7

টেনিদা আর সিন্ধুঘোটক || Narayan Gangopadhyay

তারপর যা বললেন, তা সংক্ষেপে এই :

তিনি একটা ছবি আরম্ভ করবেন, বিজয়কুমারকে তার নায়ক করতে চান। কিন্তু বিজয়কুমার বলে বসেছেন গজানন মাইতির পথে পথে বিপদে ছবির কাজ শেষ না হলে তিনি কোনও ছবিতে নামবেন না। এখন গজানন মাইতির সঙ্গে হরিকিঙ্কর ভড় চৌধুড়ীর ঘোর শত্রুতা। হরিকিঙ্কর তাই পণ করলেন গজাননের ছবির শুটিং পণ্ড করে দেবেন।

কাল রাতেই ছিল গজাননের ছবির প্রথম শুটিং।

গজানন ঘুঘু লোক—সে হুকুম দিয়েছিল, তার শুটিং-এ কোনও বাইরের লোক ঢুকতে পারবে না। সুতরাং এমন কাউকে দরকার যে চট করে স্টুডিয়োতে ঢুকে যেতে পারে। আর সে পারে কম্বলরাম।

কিন্তু কম্বলরাম তো দেশে চলে গেছে। তাই তিনি চারদিন ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছেন—ঠিক কম্বলরামের মতো একটা লোক কোথায় পাওয়া যায়।

তারপর গড়ের মাঠে আমাদের দেখে–

–কিন্তু বিজয়কুমারের নস্যির কৌটোর মানে কী? আর সিন্ধুঘোটক সাজবারই বা আপনার কী দরকার ছিল?

হরিকিঙ্কর মিটি মিটি হাসলেন। বিজয়কুমার ছেলেবেলায় খুব নস্যি নিতেন। একদিন স্কুলের ক্লাসে বসে নস্যি নিচ্ছেন, হেডমাস্টারমশাই দেখতে পেয়ে কান ধরে নিয়ে গিয়ে আচ্ছা করে বেত পিটিয়ে দিলেন সেই থেকে নস্যির নাম শুনলেই বিজয়কুমার খেপে যান। এখন ফিল্মে ঢুকেও বিজয়কুমারের প্রতিজ্ঞা—তার ছবি তোলার সময় কেউ নস্যি টানলে কিংবা নস্যির নাম উচ্চারণ করলে তিনি তক্ষুনি স্টুডিয়ো থেকে চলে যাবেন। আর সিন্ধুঘোটক?

—লোকে আড়ালে গজাননকে সিন্ধুঘোটক বলে। গজানন তা জানেন, তাঁর ধারণা কথাটা অপয়া, শুটিংয়ের সময় ওটা কানে গেলে একটা কিছু কেলেঙ্কারি হবেই।

টেনিদা বললে, এর জন্যে এত কাণ্ড করলেন আমাদের নিয়ে? যদি গজাননবাবু আমাদের ধরে ঠেঙিয়ে দিতেন, তা হলে?

–তা হলে আমি তোমাদের হাসপাতালে পাঠাতুম। সে-সব ব্যবস্থা ছিলই।

হরিকিঙ্কর আবার ফিক ফিক করে হাসতে লাগলেন : যাক সব কিছুই ভালোয় ভালোয় হয়ে গেছে, আজ সকালে নিজে থেকে এসেই বিজয়কুমার আমার সঙ্গে ছবির কন্ট্রাক্ট সই করে গেছেন।

—কিন্তু আপনি আমাদের ঠিকানা জানলেন কী করে?

–কাল অবলাকান্ত তোমাদের রাস্তার মোড়ে পৌঁছে দিয়ে গেল না? আর পটলডাঙার টেনি শর্মা তো বিখ্যাত লোক, তাকে খুঁজে বের করতে কতক্ষণই বা লাগে?

আমরা চুপ!

হরিকিঙ্কর বললেন, এইবার কাজের কথা, তোমাদের কিছু পুরস্কার দেব বলেছিলুম। অনেক কষ্ট করেছ, রং-চং মাখিয়ে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছি–আমার একটা কৃতজ্ঞতা তো আছে। এই প্যাকেট তোমাদের দুজনকে দিয়ে গেলুম, আমি যাওয়ার পরে খুলে দেখো।

কাগজে মোড়া দুটো ভারি বাক্স তিনি তুলে দিলেন আমাদের দুজনের হাতে। টেনিদা গাঁইগুঁই করে বললে, আমাদের একদিন ছবির শুটিং দেখাবেন স্যার?

–আলবাত—আলবাত। যেদিন ভালো শুটিং হবে, সেদিন আগে থেকে খবর দিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে তোমাদের নিয়ে যাব। চাই কি জনতার দৃশ্যে নামিয়ে দিতে পারি।

একটু হেসে আবার বললেন, সেখানে গিয়ে যেন নস্যির কৌটো-ফৌটো বলো না যেন আবার।

—পাগল! আর বলে!—আমরা দুজনে একসঙ্গে সাড়া দিয়ে উঠলাম।

—তা হলে আমি, আমি—টা-টা—

হরিকিঙ্কর চলে গেলেন। আমরা দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে দেখলুম, গলির মোড়ে একটা মস্ত লাল মোটর দাঁড়িয়েছিল, সেইটেতে চড়ে তিনি দেখতে-দেখতে উধাও হলেন।

তারপর হাতের প্যাকেট দুটো খুললুম আমরা।

কী দেখলুম?

টেনিদার হাতের প্যাকেটে একটা ট্রানজিস্টার রেডিয়ো আর আমার প্যাকেটে একটা ক্যামেরা।

দুটোই নতুন–ঝকঝক করছে।

আর আকাশ ফাটিয়ে টেনিদা হাঁক ছাড়ল : ডি-লা-গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস—

আমি বললুম, ইয়াক-ইয়াক!

Pages: 1 2 3 4 5 6 7
Pages ( 7 of 7 ): « পূর্ববর্তী1 ... 56 7

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress