কোনো এক শুক্লা একাদশীর রাতে
যখন উঠেছিল বাঁকা চাঁদ
সমস্ত অভিমান ভেঙে
নিঃশব্দ পায়ে চলে গেলে!
আকাশে তখনো জ্বলেছিল তারা
এক টুকরো মেঘ এসে সব ঢেকে দিয়েছিল,
নেমেছিল ঘন আঁধার
তারপর বাইশটা বসন্ত,বাইশটা শীত,
বাইশটা গ্রীষ্ম কেটে গেছে..
আমার স্পর্শ কাতর হাত ছোঁয়নি
বহুদিন তোমার হাত,
কী সহজ সরল ভাবে একাকী চলে যাওয়া
মুখে অমলিন হাসির ছোঁয়া
চোখ বুজলে এখনো স্পষ্ট ভেসে আসে,
আরো ভেসে আসে নিঃশব্দ কথামালা, পিঠোপিঠি দু’ভাইয়ের আলাপচারিতা,
রাত্তির গভীরে অসমাপ্ত কথামালা এসে দীপ্ত কণ্ঠে
উচ্চারিত হয়, আমি স্পষ্ট শুনতে
পাই ‘ ভাই ‘ বলে ডেকে যাওয়া
এক আদুরে সম্ভাষণ
সেই ডাক দূর থেকে দূরে গারোপাহাড়ের বুকে
প্রতিধ্বনি হতে হতে মিলিয়ে যায় !
তোমার নিমীলিত আঁখি, উদাত্ত কণ্ঠস্বর
এখনো ভোগাইয়ের কূল ঘেঁষে
খুঁজে ফিরি কাশবনের ভেতর।
আকাশে ভাসমান কয়েকটা সারস
পাখা মেলে নদী ডিঙিয়ে চলে যায়
অসীম শূন্যতায়।
মনে পড়ে, বৃষ্টিতে রাস্তা কাদা হলে
তোমার পিঠে চড়ে রাস্তা পার হতাম,
তোমার ছোট হওয়া প্যান্ট জামা পরেই ত
আমার অনেক বেড়ে ওঠা,
আজো সেই প্যান্ট ,জামার পুরনো গন্ধ
খুঁজি বিভোর হয়ে।
কী এমন তাড়া ছিল,
চৌত্রিশ বছরের সংখ্যাটি খুব বেশি ছিল?
জীবনের হিসেব মেলাতে মেলাতে
দিশাহীন পথে হেঁটে যাওয়া..
তোমার আকাঙ্খিত সুখ
সুন্দর স্বপ্নগাথা, আজ বকুল ফুলের
মত নিঃশব্দে ঝরে পড়ে।
আজ এই হৃদয় শোকভূমি
নিষিদ্ধ নগরীর শেষ প্রান্তে এসে
চিৎকার করে ডাকতে চাই
তোমার, শুধু তোমার নাম ধরে,
আমার আকাশে আজ পূর্ণিমার চাঁদ
বৃষ্টি নেই, ঝলমল করছে আকাশ
আজ এই নিষিদ্ধ জ্যোৎস্না রাতে
সযত্নে পুষে রাখা সমস্ত অঙ্গার
দু’হাতে ওড়াব আকাশে,
আমি বেশ বুঝতে পারছি
ভীষণ ভাবে তুমি একা
নক্ষত্রের ধুলো ছড়ানো তোমার গায়ে,
আমি জ্যোৎস্না মাখা পথে
অন্তহীন দিশারীর মত খুঁজে বেড়াব
খুঁজে বেড়াব সত্তার আকাশে
উন্মীলিত হৃদয়ের ফেলে আসা
এক বুক ভালবাসা
এক বুক উচ্ছ্বাস!