ছদ্মবেশী
হরিপুরের সুকান্ত পল্লি তোলপাড় হয়
এক যুবতীকে পাচার করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। এক যুবক তার বাইকে দুই যুবতীকে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন জানা যায়।হঠাৎই এক যুবতী বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করতে থাকেন। উপায়ন্তর না দেখে মাঝখানে বসা যুবতী চলন্ত বাইক থেকে লাফ দেন। পথের দুদিক থেকে আসা স্থানীয় লোকেরা চোখের সামনে এই ঘটনা দেখে ওই বাইকটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে। ধরা পড়ার পর ওই যুবক নিজেকে সিবিআই অফিসার বলে দাবি করে। তাতে এলাকাবাসীর সন্দেহ হওয়ায় থানায় খবর দেয়। হরিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুই যুবতী ও যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।
এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। অভিযোগকারী যুবতীর দাবি তাকে ওই যুবক-যুবতী দুজনে সারারাত একটি নির্মীয়মান আবাসনে আটকে রেখে অত্যাচার করে। তাঁর কাছে টাকা দাবি করে। এদিন সাতসকালে তাঁকে জোর করে বাইকে তুলে দিল্লি রোডের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওই যুবতী বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেন। ধৃত তিনজনকেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে ওই যুবক-যুবতী দু’জনে ছদ্মবেশে স্বামী-স্ত্রী। আর ওই যুবতী কলগার্লের কাজ করেন। দক্ষিণেশ্বর থেকে ওই যুবতীকে ছদ্মবেশী দম্পতি নিয়ে আসে।
ছদ্মবেশী দম্পতির যুবতী মুনমুন বড়ুয়া ডিভোর্সি।
তাই তিনি কলকাতা, হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুতে
অর্কেস্ট্রা সিঙ্গারের কাজ পেশা হিসেবে প্রথমে বেছে নেন।
কলকাতার বাসিন্দা হলেও বৈবাহিক সুত্রে মুনমুন থাকতেন বেঙ্গালুরুতে, কেবল সেখানেই তখন অর্কেস্ট্রা বারে গান গাইতেন।
তখনই ওই যুবক হুসেন মন্ডলের সঙ্গে তার আলাপ। আর তার পাতা ফাঁদে পা দেন মুনমুন।
সকালে উঠে মুনমুন আর হুসেন দুজনেই কোনও না কোনও শহরে চলে যেতেন, অভিজাত বাজার আর মলগুলোয় ঘোরাফেরা করতেন, খুঁজে বার করতেন শিকার হওয়ার উপযুক্ত কোনও পয়সাওয়ালাকে, তারপর সুযোগ বুঝে উঠিয়ে নিতেন হাতব্যাগটা। আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসতেন বেঙ্গালুরুর ওই বারে।নিয়মিত বারে
সময় দিতে না পারায় সিঙ্গারের কাজ চলে যায়।
গত কয়েক বছর এই মহিলার খোঁজ করেও খুঁজে পায়নি পুলিশ । এক মহিলা অভিযোগ করেন, মুম্বইয়ের লোয়ার প্যারেলের হাই স্ট্রিট ফিনিক্স মলের জারা শোরুমের বিল কাউন্টার থেকে তাঁর ব্যাগ চুরি যায়। তাতে ফোন, সোনার গয়না ও কয়েক লক্ষ নগদ টাকা ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ দেখে, অভিযোগকারিণী বিল দেওয়ার জন্য ব্যাগটি মাটিতে নামিয়ে রেখেছিলেন, সেটি তুলে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন হুসেন মন্ডল।
তদন্তে নেমে তারা দেখে, লোয়ার প্যানেলের আর একটি জারা আউটলেট এবং শিবাজি পার্কের এক ল্যাকমে বিউটি পার্লারে এমনই অপরাধ ঘটিয়েছেন মহিলা মুনমুন বড়ুয়া।
মুনমুন জানিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায় একই ধাঁচে চুরি করেছেন তিনি।
পুলিশ তাকে খুঁজছে জানতে পেরে আবার চুরির পেশা বদলে নারী পাচার শুরু করেন। এ-ব্যাপারে
হুসেন আগে থেকেই দক্ষ।সিঙ্গার হওয়ায় কর্লগার্লদের সন্ধান পেতে অসুবিধা হয় না মুনমুনের। প্রথমে
কিছু টাকা তাদের অগ্রিম দিয়ে দিত।
তারপর ক্লাবে নিয়ে যাওয়ার নাম করে খুব ভোরে বাইকে চাপিয়ে নির্দেশিত জায়গায় পাচার করত।এইভাবে তারা এই মেয়েটিকে পাচার করার জন্য
এনেছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি,জনতার হাতে
ধরা পড়ে যায়।