রামায়ণ : কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড – শ্রীরামের গুণ কথন
রাম নাম বল ভাই মুখে বার বার।
ভেবে দেখ রাম বিনা গতি নাহি আর।।
করিলেন অশ্বমেধ শ্রীরাম যতনে।
অশ্বমেধ ফল পায় রামায়ণ শুনে।।
এমত রামের গুণ কে দিবে তুলনা।
পাদস্পর্শে শিলা নর, নৌকা হয় সোনা।।
পার কর রামচন্দ্র, পার কর মোরে।
দীন দেখি নৌকা রাম লৈয়া গেলে দূরে।।
যার সনে কড়ি ছিল, গেল পার হয়ে।
কড়ি বিনা পার করে, তারে বলি নেয়ে।।
ধ্যান পূজা তন্ত্র মন্ত্রে যার নাহি জ্ঞান।
তারে যদি পার কর তবে জানি রাম।।
যোগ যোগ তন্ত্র মন্ত্র যেই জন জানে।
তারে কি তরাবে রাম তরে নিজ গুণে।।
মোর সঙ্গে কড়ি নাহি পার হব কিসে।
কর বা না কর পার কূলে আছি বসে।।
নেয়ের স্বভাব আমি জানি ভালে ভালে।
কড়ি না পাইলে পার করে সন্ধ্যাকালে।।
আপনি সে ভাঙ্গ প্রভু, আপনি সে গড়।
সর্প হৈয়া দংশ তুমি, ওঝা হৈয়া ঝাড়।।
সকলি তোমার লীলা সব তুমি পার।
হাকিম হয়ে হুকুম দেও পেয়াদা হয়ে মার।।
অধম দেখিয়া যদি দয়া না করিবে।
পতিতপাবন নাম কি গুণে ধরিবে।।
সাধুজনে তরাইতে সর্ব্ব দেব পারে।
অসাধু তরান যিনি, ঠাকুর বলি তাঁরে।।
অহল্যা পাষাণ হৈয়া ছিল দৈববশে।
মুক্তিপদ পাইল তব চরণ পরশে।।
পার কর রামচন্দ্র রঘুকুলমণি।
তরিবারে দুটি পদ করেছি তরণী।।
তুমি যদি ছাড় মোরে আমি না ছাড়িব।
বাজন নূপুর হৈয়া চরণে বাজিব।।
রাম-নদী বহে যায়, দেখহ নয়নে।
তাহে গিয়া স্নান কর কূলে বাস কেনে।।
দেখরে পামর লোক পার হবি যদি।
মন ভরি পান কর বয়ে যায় নদী।।
মৃত্যুকালে একবার রাম বলি ডাকে।
সেই স্বর্গে যায়, যম দাঁড়াইয়া দেখে।।
এমন রামের গুণ কি বর্ণিতে পারি।
হেলায় তরিয়া যাবে মুখে বল হরি।।