Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কাকাবাবু ও মরণফাঁদ || Sunil Gangopadhyay » Page 15

কাকাবাবু ও মরণফাঁদ || Sunil Gangopadhyay

গগনের মোটরবাইকটা তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের জিপে।

আলমের গাড়িতে কাকাবাবুর সঙ্গে বসেছে সন্তু আর গগন।

কাকাবাবু সন্তুকে জিজ্ঞেস করলেন, হ্যাঁ রে, সুকোমল ভাল আছে? তাকে কোথায় পেলি?

সন্তু এক পলক গগনের দিকে তাকিয়ে বলল, একটা দ্বীপে। না, ওকে মারধর করেনি। এমনই ভাল আছে।

কাকাবাবু গগনকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এর মধ্যে জড়িয়ে পড়লে কী করে? তোমার তো নিজস্ব ভালই ব্যবসাট্যাবসা আছে।

গগন বলল, বিশ্বাস করুন, কাকাবাবু, টাকার লোভে যাইনি। এদের সঙ্গে হাত মেলাতে হয়েছে প্রাণের ভয়ে। একটা বিরাট গ্যাং ছড়িয়ে আছে সারা দেশে। তাদের সব কাজ ভাগ ভাগ করা। আমাকে বলেছিল, মানুষ ধরে ধরে এনে মুক্তিপণের ব্যবস্থা সব ওরা নিজেরাই করবে, আমাকে শুধু লুকিয়ে রাখার জায়গাটা দিতে হবে। যদি রাজি না হই কিংবা পুলিশের কাছে মুখ খুলি, তা হলে আমাকে খুন করে ফেলবে। ওরা এমনই সাঙ্ঘাতিক যে, ওদের হাত ছাড়িয়ে বাঁচার উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে রাজি হয়েছিলাম। একসময় নিজের ওপর ঘেন্না হল, মনে হল, এ আমি কী করছি, মুক্তিপণ আদায় করতে না পারলে এরা ছোট ছেলে কিংবা বয়স্ক লোক যে-ই হোক, তাকে মেরে ফেলে, আমি তাতে সাহায্য করছি! নিজের ওপর ঘেন্না হতেই প্রাণের ভয়টা কেটে গেল।

কাকাবাবু বললেন, শুধু মানুষ চুরি নয়, এদের পরিকল্পনা ছিল আরও সাঙ্ঘাতিক। এয়ারপোর্ট উড়িয়ে দেওয়া, রেল স্টেশন, ট্রেন ধ্বংস করা, অনেক কিছু। দেখো, বেশিরভাগ মানুষ শান্তিই চায়, শুধু কিছু কিছু মানুষ টাকার জন্য, ক্ষমতার জন্য সারা পৃথিবী জুড়েই অশান্তির সৃষ্টি করে চলেছে। যাক গে, সেসব কথা পরে হবে। সন্তু, আমাদের লক্ষণের শক্তিশেল নাটকটা কিন্তু বন্ধ করা চলবে না। আবার রিহার্সাল দিয়ে স্টেজে নামাতেই হবে?

সন্তু বলল, হ্যাঁ, আর কয়েকদিন রিহার্সাল দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

গগন বলল, কাকাবাবু, আমাকে একটা পার্ট দেবেন?

কাকাবাবু বললেন, আর তো পার্ট বাকি নেই। তা ছাড়া এটা ছোটরাই। করবে। তুমি প্রম্পটার হতে পারো। উইংসের পাশে দাঁড়িয়ে প্রম্পট করবে, যদি কেউ পার্ট ভুলে যায়—-

গগন বলল, আমি তাতেই রাজি।

কাকাবাবু বললেন, তোর পার্ট মনে আছে সন্তু, তুই তো জাম্বুবান। আচ্ছা এই জায়গাটা বল তো, রামের সামনে সবাই মিলে খুব জরুরি আলোচনা হচ্ছে, এর মধ্যে মন্ত্রী জাম্বুবান ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন ধাক্কাধাক্কি করে তাকে জাগিয়ে দেওয়ার পর তুই কী বলবি?

সন্তু বলল, হ্যাঁ রে, আমার কাঁচা ঘুম ভাঙিয়ে দিলি! ব্যাটা বেল্লিক, বেআক্কেল, হড়িমুখো ভূত!

কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ, ঠিক হয়েছে। আচ্ছা, সেই গানটা মনে আছে? সবাই মিলে গাইবে, রাবণ ব্যাটায় মারো—

সন্তুর সঙ্গে সঙ্গে কাকাবাবুও গান করলেন :

রাবণ ব্যাটায় মারো, সবাই রাবণ ব্যাটায় মারো
(তার) মাথায় ঢেলে ঘোল, (তারে) উলটো গাধায় তোল
(তার) কানের কাছে পিটতে থাকো চোদ্দো হাজার ঢোল।
কাজ কি ব্যাটার বেঁচে, (তার) চুল দাড়ি দাও চেঁচে
নস্যি ঢোকাও নাকে ব্যাটা মরুক হেঁচে হেঁচে।
(তার) গালে দাও চুনকালি, (তারে) চিমটি কাটো খালি
(তার) চোদ্দো পুরুষ উড়িয়ে দাও পেড়ে গালাগালি
(তারে) নাকাল করো আরও, যে-যেরকম পারো
রাবণ ব্যাটায় মারো সবাই রাবণ ব্যাটায় মারো—

গগন বলল, ওই শঙ্খচূড় ব্যাটাকেও এইভাবে মারা দরকার!

কাকাবাবু শুরু করলেন আর-একটা গান।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
Pages ( 15 of 15 ): « পূর্ববর্তী1 ... 1314 15

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress