একটা মোরগ ডেকে উঠে, ভোরবেলা, বাগানের দিকে চলে গ্যালো—পৃথিবীর
সমস্ত কবরখানা দরজা, সে-মুহূর্তে
ঝনঝন করে উঠলো, রোদ এসে আছড়ে পড়লো গাছের মাথায়
বিছানায় শুয়ে আমি বুঝলাম—আমি,
এখন মৃতরা সব সারারাত ঘুরে ফিরে আবার কবরে ফিরে যায়
এখন কবর থেকে উঠে এসে জ্যান্ত মানুষেরা— সমস্ত পৃথিবীময় ঘোরাঘুরি করে—
অশরীরী হাওয়া এসে জানলার পর্দা, চুল, মা-র হাসি উড়িয়ে নিয়ে গ্যালো
এখন বৃষ্টি শুরু—ভিজে কাক
দূর থেকে উড়ে এসে নিয়ে এলো দুঃসংবাদ : কয়েকদিন আমাদের গাঁয়ে
বৃষ্টি নেই, হাওয়া নেই : মাঠের ওপারে চাঁদ
ডুবে গ্যালো এইমাত্র—বুঝলাম সবই, আমি বুঝলাম
শস্য নেই, তবু এই নির্জনে পালনে ওঠে ঝড়, ঝড় ওঠে—কিন্তু তুমি কই?
বাপীর কানের মধ্যে আরশোলা ঘুমিয়ে থাকে, সারারাত ঘুরেফিরে
এখন কবরে চুপচাপ, বাপী শুয়ে আছে—
আমিও কবর থেকে উঠে, সাদা তুলো, ছুঁড়ে দিই বাংলাদেশে—এ্যাতো অভিমান
এ্যাতো অভিমান আমি কোথায় রাখবো, দ্রুত
ছুটে যাই বাথরুমে—বাথরুমে স্নানের জল, ফুলে, ফেঁপে
ভয় দেখায় আমাকে—বলে, ‘ডুব দাও’—
আমি হেসে উঠি—পুকুরে ডোবার ইচ্ছে পুরোপুরি ছিলো স্যার
ছিলো আমারও—যখন দুল্কি-চালে
শরীরের ছায়া হাঁটতো পাশাপাশি—পাশাপাশি হাঁটতো আরও কেউ—
সকাল গড়িয়ে তারোপরে, দুপুর অনেক আগে হাত-পা ছড়িয়ে ভেসে গ্যাছে
ফের সন্ধেবেলা—ফের কবরের মধ্যে শুয়ে আমি
চেয়ে দেখি, প্রতিদিনকার মতো সেজেগুজে
আমার কবরে তুমি একটা একটা করে ফুল দিচ্ছো—চেঁচাতে পারিনা, তবু
এ্যাতো ভুল সহ্য হয় না—’আরতি আরতি
তুমিও বুঝলে না
ডাক্তারখানায় যারা ডাক্তারের আগে এসে বসে থাকে, আমি তাদেরই একজন’