তখন মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশে
জওয়ানরা লড়ছে প্রাণের পন,
আকাশবাণীর থেকেই প্রচারিত,
” সংবাদ পরিক্রমা”র অনুষ্ঠান!
সাল – মাস? সেই একাত্তরের এপ্রিল,
তারিখটাও তেরো কি পনেরো,
উপেনবাবুর উপস্থাপনাতেই
জওয়ানরা উদ্বুদ্ধ হন আরো!
মুজিব যবে ওপার বাংলা হতে,
দেন এক ভাষণ ” বঙ্গবন্ধু ” হয়ে
পুনঃপ্রচার বেতারে তার কথা
সবাই শোনেন মাথাটি সব নুয়ে!
এমন মোহিত করা সে কণ্ঠস্বর,
গমগমিয়ে উঠলো নগর গ্রাম,
দেশপ্রেমের বীজ ছড়িয়ে দিলো
প্রতি গ্রাম, জেলা ও শহর!
ভাষণ প্রচার ময়মনসিংহতে
দিনটাও সে এপ্রিলেরই সাত,
ভাষণ সাথে, একটি যে গান হলো,
তা শুনে পূব বাংলা কুপোকাত!
বঙ্গবন্ধু মুজিব তখন জেলে
পাকিস্তানের বন্দী বটে হায়!
সেই সময়ের এমন ভাষণখানি
বঙ্গবন্ধু আর কি ভোলা যায়?
গড়িয়া সে তখন মফস্বলি
তারই ভাঙা চায়ের দোকান পরে,
কয়েকজন গুণী মানুষ মিলে,
চার পাঁচজন,আড্ডা বটে ধরে!
উপেন তরফদার সে একজন,
ছিলেন সেথা গৌরীপ্রসন্ন সে
অংশুমান ও দীনেন্দ্র চৌধূরী,
মুজিব কণ্ঠ শুনেই প্রসন্ন যে!
গৌরীবাবু সিগারেটের মোড়ক,
রাঙতারই এক পিছেই কিছু লেখেন,
অংশুমান রায় তা টেনে নিয়ে,
হঠাৎ তাতে সুর দিয়ে গান বাঁধেন!
ভাষণকালের সময় কিছু কম,
” সংবাদ পরিক্রমা ” যতটানা,
প্রযোজক উপেনবাবু তাই,
সেই গান দিয়েই গো ভরেন সময়খানা!
অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং ও হয়,
অংশুমানের গান সাথে ভাষণ,
বিপুল জনপ্রিয়তা সে লভে,
পূব – পশ্চিম, ভরলো বাঙাল মন!
সে গান তখন ডিস্কে ইতিহাস,
এপ্রিলের বাইশে রেকর্ডিং,
হিন্দুস্তান রেকর্ডে বেরুলো,
” এ মিলিয়ন মুজিবর’স সিংগিং! “
( শোনো একটি মুজিবরের থেকে,
লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের
ধ্বনীর প্রতিধ্বনী,
আকাশে বাতাসে ওঠে রণি!
বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশে….”)