প্রায় চোখ-মুখ বুঁজে ছুটছি, ছুটছি ঊধ্বর্শ্বাসে,
এক্ষুণি পৌঁছুতে হবে বিমান বন্দরে। রাস্তাঘাট
কেবলি পিছলে যাচ্ছে পায়ের তলায়। গাছপালা,
ভিখিরী, দোকানপাট, রিক্সঅলা, আইসক্রীমের
বাক্স, হকারের মুখ এবং বিজ্ঞাপনের ফুল্ল
ব্রা-পরা তরুণী গ’লে যাচ্ছে ক্রমাগত এলেবেলে
আমার চোখের মধ্যে; আমি শুধু ছুটছি ছুটছি
কুকুর ট্রাফিক আইল্যান্ড, নারী স্মৃতি হয়ে যায়।
এইতো আমার মুখ আমার মুখের কাছ থেকে
এবং আমার হাত আমার হাতের কাছ থেকে
এবং আমার চোখ আমার চোখের কাছ থেকে
বারবার সরে যাচ্ছে অতিদ্রুত, বড় নৈর্ব্যক্তিক।
দেখছি আমার মুখ একটি মৌচক হ’য়ে ভাসে,
এবং আমার হাত ছায়ার ক্ল্যারিওনেট হ’য়ে
বাজতে বাজতে শূন্যে লীন হয়ে যায়, মেঘ হয়
এবং আমার চোখ পাখি হ’য়ে হাওয়ায় উড্ডীন।
এয়ারপোর্টের প্রতি আমার গভীর অনুরাগ,
এয়ারপোর্টের প্রতি ছুঁড়ে দিই গোলাপের তোড়া,
এয়ারপোর্টের সঙ্গে খুনসুটি ভালো লাগে খুব,
তার ওষ্ঠে ওষ্ঠ রাখি, তাকে নিয়ে ঘুমাই গভীর,
কখনো সাজাই তাকে স্বপ্নময় প্রধান ঝালরে,
কখনোবা গাঢ় গোধূলির মতো মনো-বেদনায়।
এক্ষুণি পৌঁছেতে হবে, কিন্তু পথ দীর্ঘ হ’য়ে যায়,
শুধু দীর্ঘ হ’য়ে যায়, তবু আমি ছুটছি ছুটছি।
প্লেনের সিঁড়ির কাছে ছিমছাম স্টুয়ার্ড অথবা
সুস্মিতা এয়ারহোস্টেসকে বলবো কায়দা ক’রে-
তোমার স্বাগত সম্ভাষণের প্রত্যাশী নই আর
আমার নিজস্ব সীট আমি নিজে খুঁজে নিতে জানি।
বস্তুত এয়ারপোর্ট হন্তদন্ত, ক্লান্ত পৌঁছে দেখি-
আমাকে ফেলেই প্লেন নীলিমায় ধাতব মরাল।