Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এবার কাকাবাবুর প্রতিশোধ || Sunil Gangopadhyay » Page 7

এবার কাকাবাবুর প্রতিশোধ || Sunil Gangopadhyay

এরপর চারদিনের মধ্যেও সন্তুর জ্ঞান ফিরল না।

ডাক্তার জয়ন্ত দাস ছাড়াও আরও তিনজন স্থানীয় ডাক্তার দেখছেন তাকে। সন্তুর পেট থেকে একটা গুলি বের করা গিয়েছে। আর-একটা বের করতে তাঁরা সাহস পাচ্ছেন না। হার্টে খোঁচা লেগে যাওয়ার ভয় আছে।

এই চারদিনে একটা অদ্ভুত পরিবর্তন হয়েছে জোজোর। সকলে মিলে একটা গেস্ট হাউজে থাকছেন এই কদিন। সব ব্যবস্থা বাদশাই করছে। জোজো এর মধ্যে কিছুই খাচ্ছে না, একটা কথাও বলছে না। কাকাবাবু তবু মাঝে মাঝে শুধু টোস্ট আর কফি খাচ্ছেন। জোজো কোনও খাবারই মুখে দেবে না। বাদশা অনেক চেষ্টা করেছে, তবু জোজো কিছু ছোঁবে না।

কাকাবাবুও তাকে বলেছেন, জোজো, একটু কিছু খাও। শুধু শুধু তোমার শরীরও খারাপ করে তো লাভ নেই।

জোজো শুধু মুখ তুলে তাকিয়েছে কাকাবাবুর দিকে। দুচোখের নীচে শুকনো জলের রেখা। মুখে কোনও শব্দ নেই। কাকাবাবুর অনুরোধেও সে কিছু খায়নি।

চারদিন পর ডাক্তার জয়ন্ত দাস বললেন, কাকাবাবু, এখানে আমরা যত দূর সাধ্য করেছি। এখানে অনেক যন্ত্রপাতি নেই। শেষ চেষ্টা হিসেবে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে দেখতে পারেন।

কাকাবাবু জিজ্ঞেস করলেন, কলকাতায় নিয়ে যাওয়া যাবে?

ডাক্তার দাস বললেন, ট্রেনে নিয়ে যান। খুব সাবধানে। সঙ্গে একজন। ডাক্তার থাকলে ভাল হয়।

কাকাবাবু বললেন, তা হলে আপনিই চলুন, অনুগ্রহ করে। আপনার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

জয়ন্ত দাস বললেন, ওরকম করে বলছেন কেন? আমরা কি আপনার কথা, সন্তুর কথা জানি না? সন্তু কত অভিযানে আপনার সঙ্গী হয়েছে। সন্তুকে বাঁচিয়ে তুলতে পারলে আমাদের ডাক্তারি শেখা সার্থক হবে। কিন্তু এখানে আর বেশি কিছু করা সম্ভব নয়। গুলিটা এমন বিশ্রী জায়গায় আটকে আছে। আমি যাব আপনাদের সঙ্গে।

আগেই টেলিফোনে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা ছিল। হাওড়া স্টেশন থেকেই সন্তুকে সোজা নিয়ে যাওয়া হল পি জি হাসপাতালে। এখানে অনেকেই কাকাবাবুর জানা। তখনই ডাক্তারদের মধ্যে সাড়া পড়ে গেল।

ঘণ্টা দু-এক বাদে এই হাসপাতালের সুপার ডাক্তার রফিকুল আহমেদ কাকাবাবুকে আলাদা ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, কাকাবাবু, আপনি এখন বাড়ি যান। কিংবা আমার কোয়ার্টারে গিয়েও বিশ্রাম নিতে পারেন। শুধু শুধু হাসপাতালে বসে থাকবেন কেন? পেশেন্টের যা অবস্থা, এখনই অপারেশন করা যাবে না। একদিন-দুদিন অন্তত অবজারভেশনে রাখতে হবে।

কাকাবাবু বললেন, রফিকুল, একটা সত্যি কথা বলো তো? সন্তুর বেঁচে থাকার চান্স কতখানি?

ডাক্তার আহমেদ বললেন, সত্যি কথাই তো বলতে হবে। পাঁচ জন ডাক্তারকে নিয়ে একটা মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। অবশ্য আনঅফিশিয়ালি। এর চেয়ে ভাল চিকিৎসা আর এদেশে সম্ভব নয়। কিন্তু কাকাবাবু, খুবই দুঃখের কথা, এখনও পর্যন্ত সন্তুর যা কন্ডিশন, তাতে ওর-বাঁচার সম্ভাবনাই নাইনটি পার্সেন্ট!

একটুক্ষণ চুপ করে থেকে কাকাবাবু বললেন, তাও তো এখনও টেন পার্সেন্ট আশা আছে। তাই না?

ডাক্তার আহমেদ বললেন, তা ঠিক।

কাকাবাবু বললেন, আমি আশাবাদী। তোমরা শেষ চেষ্টা করো। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে কাকাবাবু একটা ট্যাক্সি নিলেন। সঙ্গে জোজো। সে এখনও কথা বলছে না।

কাকাবাবু জোজোর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন, জোজো, এত ভেঙে পড়লে চলবে না। ডাক্তাররা বলেছেন, এখনও আশা আছে। আমরা আশা রাখব। তার জোরেই সন্তুকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে।

জোজোকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে কাকাবাবু ট্যাক্সিটা ঘোরাতে বললেন।

এই কদিন অন্য কিছু চিন্তা করার সময় পাননি। এখন তাঁর মনে পড়ল। সেই কর্নেল ধ্যানচাঁদের কথা। সে নিজেই সন্তুকে গুলি করেছিল, না কোনও খুনিকে পাঠিয়েছিল? ওরা নিশ্চয়ই এখনও তাঁকে অনুসরণ করছে। এই ট্যাক্সির পিছনে ওদের গাড়ি আছে? ধ্যানচাঁদ বলেছিল, সে দিল্লি ফিরে যাবে। সেটা বাজে কথা। লড়াইটা ছমাস চলার কথা। সে প্রথম দিনেই আঘাত হানতে এসেছিল।

হঠাৎ কাকাবাবু একটা অদ্ভুত কাজ করলেন।

ট্যাক্সিটা ময়দানের মধ্যে দিয়ে আসছে, রেড রোডের কাছে এসে তিনি ড্রাইভারকে বললেন, এখানে থামাও!

ট্যাক্সি ড্রাইভার বেশ অবাক। সে জিজ্ঞেস করল, আপনি এখানে নামবেন? এই অন্ধকারের মধ্যে?

কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ, এখানে আমার দরকার আছে।

তিনি ভাড়া মিটিয়ে দিলেন। তারপর নেমে গেলেন পাশের অন্ধকার মাঠে। ওরা যদি তাঁকে অনুসরণ করে থাকে, তা হলে আসুক এখানে। সামনাসামনি লড়াই হোক। একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যাক। সামনাসামনি লড়াই হলে কেউ তাঁকে মারতে পারবে, এটা কাকাবাবু কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারেন না। ধ্যানচাঁদ তো বলেছিল, সামনাসামনি লড়াই হবে, পিছন থেকে আক্রমণ করবে না। কই, আসুক এখানে!

রাস্তার ধারের পাঁচিলের পাশে এসে দাঁড়াল একটি মেয়ে। ও কে? সেই লায়লা নাকি? না, এ-মেয়েটি একটু বেশি লম্বা।

একটু পরেই সে মেয়েটি চলে গেল। দূর থেকে হেঁটে আসতে আসতে একটা লোক সেখানে দাঁড়াল সিগারেট ধরাবার জন্য। প্যান্ট-কোট পরা। এ কি ধ্যানচাঁদ? হ্যাঁ, তাই মনে হয়। লোকটি লাইটার জ্বেলে সিগারেট ধরাতে যাচ্ছে, আর বারবার নিভে যাচ্ছে।

কাকাবাবু চেঁচিয়ে বললেন, এই যে ধ্যানচাঁদ, আমি এখানে।

লোকটি মুখ তুলে একবার তাকাল, আবার মুখ ফিরিয়ে নিল। তারপর সিগারেটটা ধরিয়েই সে হাঁটতে শুরু করে দিল সামনের দিকে।

কাকাবাবু আবার চেঁচিয়ে উঠলেন, কোথায় ধ্যানচাঁদ? এসো, তোমার লড়াইয়ের সাধ এবার মিটিয়ে দেব।

প্রায় আধ ঘণ্টা কাকাবাবু সেখানে রইলেন, কেউ এল না। এবার কাকাবাবু বুঝলেন, কেউ তাঁকে হাসপাতাল থেকে অনুসরণ করেনি।

বড় রাস্তায় এসে তিনি খানিক পরে একটা ট্যাক্সি পেয়ে চলে এলেন বাড়িতে।

কাল বাড়িতে আর সকলে খবর পেয়ে গিয়েছেন। সন্তুর বাবা আর মা ঘুরে এসেছেন হাসপাতাল থেকে।

কাকাবাবু একতলায় বসবার ঘরে সন্তুর বাবার সামনে বসে পড়ে তাঁর হাঁটু চেপে ধরে বললেন, দাদা, আমার ক্ষমা চাইবারও মুখ নেই। সন্তু আমার সঙ্গে গিয়েছিল বলেই এরকম বিপদ হল। এখন কী হবে?

সন্তুর বাবা বললেন, আরে রাজা, তুই এরকম করছিস কেন? তুই তো জোর করে নিয়ে যাসনি। সন্তু ইচ্ছে করেই তোর সঙ্গে যায়। ও এইসব ভালবাসে। আমরা কোনওদিন ওকে বাধা দিইনি। লেখাপড়াতেও ফাঁকি দেয় না, ভাল রেজাল্ট করে।

সন্তুর মা বললেন, তোমরা তো গেলে ভূত দেখতে। হঠাৎ গুলিটুলি করল কে? ভূতে কি গুলি করে?

কাকাবাবু বললেন, না, গুলি করেছে আমার কোনও এক শত্রু।

সন্তুর মা বললেন, তুমি তো অনেক শত্ৰু মাথায় নিয়ে ঘোরো। কেন যে যাও ওসব করতে। আমার মন বলছে, সন্তু ঠিক বেঁচে যাবে। আমি ওর জন্য পুজো দেব।

কাকাবাবু বললেন, মায়ের মন, তুমি যখন বলছ, সেটাই সত্যি হবে। আমাদের সকলের ইচ্ছেশক্তিই সন্তুকে বাঁচিয়ে তুলবে।

এরপর দিনের পর দিন চলল, যাকে বলে, যমে-মানুষের লড়াই। এক-এক দিন ডাক্তাররা বলেন, আর আশা নেই। পরের দিনই ডাক্তাররা আবার বলেন, দাঁড়ান, দাঁড়ান, সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

এগারো দিন পর সন্তু প্রথম চোখ খুলল।

ডাক্তার আহমেদ এসে কাকাবাবুকে সেই খবর দিয়ে বললেন, এখনও আপনারা ভিতরে যেতে পারবেন না। পেশেন্ট কথা বলার অবস্থায় নেই। আর-একটা কথা আপনাকে জানিয়ে রাখছি কাকাবাবু, সন্তু চোখ মেলেছে। বলেই খুব বেশি কিছু আশা করবেন না। কোমা থেকে ফিরে এলে দুএকদিন ভাল থাকে, কথাটথা বলে। মনে হয়, একেবার ভাল হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তারপরই আবার…. প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে একবার দপ করে জ্বলে ওঠে, জানেন তো?

কাকাবাবু জিজ্ঞেস করলেন, এখনও কত পার্সেন্ট আশা করা যায়?

ডাক্তার বললেন, ওই বড়জোর দশ পার্সেন্ট।

কাকাবাবু বললেন, তাই যথেষ্ট। আমি এখনও আশাবাদী। সন্তু বেঁচে উঠবেই।

ডাক্তার বললেন, আমিও তাই প্রার্থনা করছি!

সেদিন মাঝ রাত্তিরে কাকাবাবুর ঘরে টেলিফোন বেজে উঠল।

গম্ভীর গলায় একজন বলল, কী রাজা রায়চৌধুরী, ভয় পেয়ে গেলেন? আপনার ভাইপোকে মেরেছি বলে এখন বাড়ির মধ্যে লুকিয়ে থাকবেন? খেলাটা আর চালিয়ে যাওয়ার সাহস নেই? আমি কিন্তু আপনাকে ছাড়ছি না।

কাকাবাবু বললেন, তুমি ফোন করে ভাল করেছ। আমি তোমাকেই খুঁজছি। আমার ভাইপো এখনও মরেনি, সে বেঁচে উঠবে। তবু, তুমি তাকে মারতে চেয়েছিলে, এর জন্য শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। চলে এসো সামনাসামনি, আমি তোমাকে শেষ করে দেব।

কর্নেল হা হা করে হেসে বলল, এই তো আসল পরিচয়টা বেরিয়ে এসেছে। এবার। তুমি বলেছিলে খুব বড়াই করে যে, তুমি মানুষ মারতে চাও না!

কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ, বলেছিলাম, এখন মত পালটে ফেলেছি। তোমার মতো যারা মানুষের বেশে শয়তান, তাদের মেরে ফেলাই উচিত। তুমি পৃথিবীর যে-প্রান্তেই থাকো, ঠিক প্রতিশোধ নেব।

কর্নেল আবার হেসে বলল, তোমার ভাইপোর জন্য তুমি খেপে গিয়েছ। এখন বুঝতে পারছ তো, আমার নির্দোষ ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য আমার কত কষ্ট হয়েছে? আমি কেন প্রতিশোধ নিতে চাইছি?

আমি বারবার বলেছি, তোমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী নই। আমি তাকে চোখেও দেখিনি। আর তুমি একটা নির্দোষ ছোট ছেলেকে গুলি করে মারতে গেলে? আবার হাসছ? তুমি সত্যিই একটা নরপশু!

তুমি আমায় গালাগালি দিচ্ছ, রায়চৌধুরী! শত্রু হচ্ছে শত্রু, তার আবার ছোট-বড় কী? শত্রুর হাতে অস্ত্র থাকলে তাকে প্রথম সুযোগে মেরে ফেলাই নিয়ম। তবু আমি তোমার ভাইপোকে তিনবার সাবধান করে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, তুই নীচে চলে যা। তোর কাকাকে ডেকে দে। সে শোনেনি, সে-ই প্রথম আমার দিকে গুলি চালিয়েছে।

সন্তু প্রথম তোমার দিকে গুলি চালিয়েছে?

আলবাত! ওর যদি জ্ঞান ফেরে জিজ্ঞেস কোরো। শুধু শুধু ওর হাতে অস্ত্র দিয়েছিলে কেন? গুলি চালাতেই জানে না, টিপ নেই একটুও। গুলিটা আমার মাথার অনেকখানি উপর দিয়ে গিয়েছে।

সন্তুর হাতের টিপ দুর্দান্ত। ও ইচ্ছে করেই তোমাকে মারেনি। শুধু ভয় দেখাতে চেয়েছিল।

হা-হা-হা-হা। আমাকে ভয় দেখাবে! আমাকে?

অত কথার দরকার নেই। কাল ভোরেই কিংবা সন্ধেবেলা ময়দানে চলে এসো। ড়ুয়েল হোক। তোমার লড়াইয়ের শখ আমি মিটিয়ে দেব।

ময়দানে আমি তোমার সঙ্গে লড়তে যাব? তুমি আগে থেকে পুলিশকে খবর দিয়ে রাখবে। পুলিশ এসে আমায় ধরবে! আমি কি এত বোকা?

না, পুলিশকে খবর দেব না। কথা দিচ্ছি।

তোমার কথায় কোনও বিশ্বাস নেই। বাঙালিরা খুব মিথ্যে কথা বলে। আমি তো কলকাতায় অনেক দিন ছিলাম। বাঙালিদের চিনি। একা-একা লড়াই করার সাহস নেই। বাঙালিরা কাপুরুষ!

একটা ছোট ছেলেকে একেবারে খুন করার জন্য যারা গুলি চালায়, তারা কাপুরুষেরও অধম। তুমি বাঙালিদের এখনও চেনোনি। একজন খোঁড়া লোকের হাতেই তোমার প্রাণ যাবে। তুমি কোনও একটা জায়গা ঠিক করে বলো, আমি সেখানেই যাব। আর কেউ থাকবে না।

সেখানেও তুমি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যাবে। ওসব চলবে না। তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবে হঠাৎ কোনও জায়গায়। আগে থেকে তুমি কিছুই বুঝতে পারবে না। সেটাই এই খেলার নিয়ম। সেটা কালও হতে পারে। দুসপ্তাহ পরেও হতে পারে। লাইন কেটে দিল কর্নেল।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress