শীত এলই না, বইতে লাগল বসন্তের হাওয়া
(হাওয়া’র বদলে প্রথমে বাতাস লিখেও কেটে দিয়েছি)
এবার ক্যালেন্ডারে বসন্তের আগে ভাগেই পাত পেড়ে
বসে যাবে গ্রীষ্ম
হিংসের মতন রোদ্দুর বুক চাটবে ধরিত্রীর
(ধরিত্রী, না পৃথিবী, না মাটি পাথরের বস্তুবিশ্ব?)
তা আসুক না চড়া রোদ, আমি গরম ভয় পাই না!
সইয়ে নিতে হবে গরম, আরো বাড়বে, গরম তো ক্রমশই বাড়বে
শরীর গরম, আমার নোখের ধুলোও গরম
(আরও কোনো কোনো অঙ্গ তপ্ত লোহার মতন হলেও তা
লেখা ঠিক কী?)
বাজার গরম, হাওয়া গরম, চোখ গরম, চাটু গরম
এমনকী কোনো দুঃখও আর স্যাঁতসেঁতে হবে না,
পান করতে হবে গরম গরম
(এক সঙ্গে এত গরম কি কবিতা সহ্য করে? উষ্ণ শব্দটি
যে ঠিক মানাচ্ছে না!)
দুঃখ কি পান করি, না উপভোগ, না গায়ে মাখি?
হিমবাহগুলি গলে যাচ্ছে, জ্বলছে চিরহরিৎ অরণ্য
(গুলি না গুলো? অরণ্যের বদলে বন, না জঙ্গল, না
শুধু গাছপালা?)
তার আগে দুঃখের মীমাংসা হোক, কার দুঃখ, কীসের দুঃখ
ধরা যাক, একটা সীমান্তে আমরা দাঁড়িয়ে আছি,
এক্ষুনি ভেঙে পড়বে রেলিং
(আগের লাইনটি আবার একটু অন্যরকম)
ধরা যাক, ঠেলতে ঠেলতে আমাদের নিয়ে আসা হয়েছে এক সীমান্তে
পাশেই একটা সুবিশাল খাদ, যেমন গ্র্যান্ড কেনিয়ান, এখানে
দুঃখের কি কোনো স্থান আছে,
না আমরা ডানা চাইব?
ধরা যাক, দরজার আড়ালে উন্মুখ নারীর সঙ্গে চকিতে
শরীর মিশিয়েছি, পাখির মতন
ঠোঁটে ঠোঁট, হঠাৎ এসে পড়ল কোনো শিশু
(আঃ ফের ঝামেলা, নারী না মেয়ে? পাখির উপমা কেন,
শিশুটি কি বাচ্চাবেলার আমি?)
ধরা যাক, সূর্য নিবে গিয়ে জ্বলে উঠল জুপিটার
সমস্ত গরমের চেয়েও গরম এক অগ্নি-নরক টান মেরেছে
মানব সভ্যতাকে
তখন কি দুঃখ নামে এক সমুদ্রে ড়ুব দেওয়াই
একমাত্র বাঁচা?
আচ্ছা, অঙ্ক কষা ভবিষ্যৎ থাক, কল্পনায় কাছাকাছি আসা যাক
সে রকম কোনো দিনে তুমি আর কবিতা পড়বে না? তোমাকে
আর চিঠি লিখব না?
তোমাকে ভালোবাসা জানাব কোন্ ভাষায়?
(এত প্রশ্ন চিহ্ন, এত প্রশ্ন চিহ্ন)
হঠাৎ ভেতর থেকে উঠে এল একটা প্রবল অট্টহাসি
সমস্ত প্রশ্নের গালে থাপ্পড় কষিয়ে বলল, ওরে পাগলা
এত গরম, ঘাম, নর্দমা, বিষ বাষ্প, গ্রীন হাউজ এফেক্ট
সব কিছু ছাপিয়ে এক পরিষ্কার শূন্যতায় যে ছবিখানি,
অসংখ্য হাত বাড়ানো রয়েছে সেদিকে, দেখছিস না?
একটা মালা দুলছে, একটা মালা দুলছে,
দুলছে, দুলছে, দুলতে দুলতে চলে যাচ্ছে।