এখানে দরজা ছিল, দরজার ওপর মাধবী-
লতার একান্ত শোভা। বারান্দায় টব, সাইকেল
ছিল, তিন চাকা-অলা, সবুজ কথক একজন
দ্বারবন্দি। রান্নাঘরে থেকে উঠত রেশমী ধোঁয়া।
মখমল গায়ে কেউ, এঁটোকাঁটাজীবী, অন্ধকারে
রাখত কখনো জ্বেলে এক জোড়া চোখ। ভোরবেলা
খবর কাগজে মগ্ন কে নীরব বিশ্ব-পর্যটক
অকস্মাৎ তাকাতেন কাকময় দেয়ালের দিকে।
ভাবতেন শৈশবের মাঠ, বল-হারানোর খেদ
বাজত নতুন হয়ে। মুহূর্তে মুহূর্তে শুধু বল
হারাতেই থাকে, কোনো হুইসিল পারে না রুখতে।
ক্ষতির খাতায় হিজিবিজি অঙ্কগুলি নৃত্যপর।
এখানে দরজা ছিল, দরজায় ওপর মাধবী-
লতার একান্ত শোভা। এখন এখানে কিছু নেই,
কিচ্ছু নেই। শুধু এক বেকুর দেয়াল, শেল-খাওয়া,
কেমন দাঁড়ানো, একা। কতিপয় কলঙ্কিত ইট
আছে পড়ে ইতস্তত। বাঁ দিকে তাকালে ভাঙাচোরা
একটি পুতুল পাবে, তা ছাড়া এখানে কিছু নেই।
ভগ্নস্তূপে স্থির আমি ধ্বংসচিহ্ন নিজেই যেনবা;
ভস্ম নাড়ি জুতো দিয়ে, যদি ছাই থেকে অকস্মাৎ
জেগে ওঠে অবিনাশী কোনো পাখি, যদি দেখা যায়
কাবুর হাসির ছটা, উন্মীলিত স্নেহ, ভালোবাসা।