Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » একটি গৃহিণী গ্রাম, গ্রামবাসী || Nirmalendu Goon

একটি গৃহিণী গ্রাম, গ্রামবাসী || Nirmalendu Goon

এই গ্রাম উঠে যাবে, সভ্যতার কুটিল কুৎসায়,
ধিক্কারে, ষড়যন্ত্রে শুষ্ক হবে নদী।
এই গ্রাম উঠে যাবে;
সরল নিসর্গাবলী বন্দী হবে শহরে, সিটিতে।

Ambrose Wheelturner*
–শ্রদ্ধেয় অমিয়বাবু এরকম ভয়ে ভীত,
অথচ একটি গ্রাম তো প্রায় উঠে গেল
কেড়ে নিল সর্বনাশা ভয়াল নীলিমা;
অসভ্য নিসর্গ এসে ভেঙে দিল তাকে।

কৃষ্ণচূড়ার গাছ, টিউবল, তালপাতা, সোনা মসজিদ,
রহিমা খালার বাড়ি, গোরুর গোয়াল,
ধ্বংসকারী একটি বোমার চেয়ে বেশি বীর্যবান
ডেস্ট্রাকটিভ একটি গোধূলি হাওয়া
টর্নেডোর নাম ধরে এসে একাকার করে দিয়ে গেল,
সংসার, নিসর্গ-প্রীতি, বাড়ি-ঘর, মানুষ-মাটিকে।

চোখের দু’হাত দূরেই কালো নদী দিয়ে ঘেরা
একটি গ্রাম তো প্রায় বুকের কাছেই
বুক পকেটের মতো বুকে লেপ্টে ছিল–;
গ্রামবাসী, অভাব, গোলাপ, পাখি, বনমাখা চাঁদ।

একটি গ্রাম তো প্রায় ছিন্নমাথা
দ্বিখন্ডিত ইমামের মতো তপস্যায়
শুয়ে থাকতো পথে, মসজিদে,
বর্ষার অঝোর বৃষ্টি, গ্রীষ্মে-শরতে
শরীরে লুকাতো হাওয়া।
রাবেয়া খালার মেয়ে সুফিয়ার অনির্দিষ্ট প্রেম,
তার নগ্ন-পদযুগলের দিওয়ানা শোভায়
একটি ক্লান্ত গ্রাম শ্রমিকের মতো
বাওয়ানীর চটকল থেকে রঙিন হাওয়াই শার্ট
গায়ে মেখে ফিরতো রাত্রিতে।
একটি গ্রাম তো প্রায় বুকের কাছেই ছিল
চোখের কাছেই ছিল, হৃদয়ের খুব কাছাকাছি।

লোভন হিংসায় নয়, সেই গ্রাম উঠে গেল
মদখোর মাতাল বৈশাখে।
পরিত্যক্ত স্যুটিংয়ের শেষে
যেমন অক্ষম ক্রোধে সেট দেখে
শিল্পী, ক্যামেরাম্যান, পরিচালকের ফেরা;
তেমনি বিধ্বস্ত তুমি, হে গ্রাম,
করুণ সেটের মতো দেখছো আকাশে ঝড়,
বাস্তবের সকরুণ সর্বনাশী ফেরায়
ধুইছে সবল দেহ তোমার যুবতী কন্যা,
স্ত্রী ও সন্তান।

অনেক দুখের চাঁদ বুকে নিয়ে,
অনেক সুখের স্বপ্ন মুখে নিয়ে,
অনেক বছর ধরে গড়ে-ওঠা,
বেড়ে-ওঠা একটি গ্রাম তো প্রায়
রথের মেলার মতো উঠে গেল
আষাঢ়ের অপূর্ণ সন্ধ্যায়।
নিসর্গের কুটিল ধিক্কারে,
নববর্ষ বরণের ভোরে
একটি গ্রাম তো প্রায় উঠে গেল।

হায়, একটি গৃহিণী গ্রাম, গ্রামবাসী,
মানুষ কি সোনালি ধান?
শ্রাবণের রৌদ্রে উঠে যাবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *