Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 34

রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

মুনি বলে, একদিন ঘটিল এমন।
রথোপরি চড়িয়া ভ্রমিছে দশানন।।
হেনকালে গগনে হইল চন্দ্রোদয়।
দেখিয়া হইল রুষ্ট দুষ্ট স্পষ্ট কয়।।
আমার বাণেতে মেরু নাহি ধরে টান।
আমার উপর দিয়া করিছে পয়ান।।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতাল কম্পিত যার ডরে।
লঙ্কার রাবণ আমি গ্রাহ্য নাহি করে।।
দেখিব কেমন চন্দ্র কত তার বল।
তাহারে জিনিব আর হরিব সকল।।
এইমত ভাবিয়া সে উঠিল আকাশে।
চন্দ্রলোকে গেল চন্দ্রে জিনিবার আশে।।
চন্দ্রলোক দুই লক্ষ যোজনের পথ।
সপ্ত-স্বর্গ জিনিয়া যাইবে চড়ি রথ।।
উঠিল প্রথম স্বর্গে রাজা দশানন।
পর্ব্বত এড়িয়া উঠে সহস্র যোজন।।
উঠিল দ্বিতীয় স্বর্গে যাইতে যাইতে।
সহস্র যোজন উঠে পর্ব্বত হইতে।।
উঠিল তৃতীয় স্বর্গে সেই মহারথী।
সেই স্বর্গে বিরাজিতা গঙ্গা ভাগীরথী।।
রাজহংস আদি পক্ষী চরে গঙ্গানীরে।
রাবণ কটক সহ গঙ্গাস্নান করে।।
গঙ্গাতটে নিত্যকর্ম্ম করি সমাপন।
সকল কটক সহ গঙ্গাস্নান করে।।
গঙ্গাতটে নিত্যকর্ম্ম করি সমাপন।
সকল কটক রথে করিল গমন।।
আছেন শঙ্কর গৌরী তাহার উপর।
রথে চড়ি সেই স্বর্গে গেল লঙ্কেশ্বর।।
গৌরীভক্ত যেজন পূজিয়াছে পার্ব্বতী।
সে স্থানে রাবণ দেখে তাহার বসতি।।
তদুপরি শিবালোকে উঠিল রাবণ।
দেখে যক্ষ পিশাচ সে শঙ্করের গণ।।
তিন কোটি দেব ছিল ধূর্জ্জটির পাশে।
রাবণে দেখিয়া তারা পালায় তরাসে।।
তদুপরি বৈকুণ্ঠেতে উঠিল রাবণ।
পুরী প্রদক্ষিণ করি করিল গমন।।
ব্রহ্মলোকে গেল সে ব্রহ্মার নিজ স্থান।
আড়ে দীর্ঘ তার দশ সহস্র প্রমাণ।।
তাহাতে সহস্র স্বর্গ দেখিল নির্ম্মাণ।
বিশ্বকর্ম্মাকৃত পুরী অদ্ভুত বিধান।।
সপ্ত-স্বর্গ জিনিয়া সে উঠিল রাবণ।
চন্দ্রের সহিত পরে হইল মিলন।।
রাবণে দেখিয়া চন্দ্রদেব বড় রোষে।
সহস্র সহস্রগুণ তুষার বরিষে।।
হিম বরিষণে কটকের হৈল জাড়।
কটকের হস্তপদ জাড়ে হৈল আড়।।
হস্ত পদ নাহি সরে বদ্ধ হয় জাড়ে।
তথাপি রাবণ রাজা রণ নাহি ছাড়ে।।
প্রহস্ত বলিছে জাড়ে জোর নাহি হাতে।
পলাইয়া চল যাই বাঁচি কোন মতে।।
রাবণ কাতর হৈল যুঝিতে না পারে।
প্রাণ যায় তথাপি সংগ্রাম নাহি ছাড়ে।।
রাবণ করিল এই উপায় বিধান।
বাহির করিল অগ্নিময় মহাবাণ।।
ব্রহ্ম-অগ্নি জ্বলে সে বাণের অগ্রভাগে।
সে বাণের প্রতাপে সবার জাড় ভাঙ্গে।।
অগ্নিবাণ এড়িলেক রাজা লঙ্কেশ্বর।
বাণে বিদ্ধ চন্দ্রমা হইল জরজর।।
বাণাঘাতে চন্দ্রমা হইল অচেতন।
পাইয়া চেতন পুনঃ উঠিল তখন।।
উভরড়ে চন্দ্রমা পলায় ত্যজি রণ।
চীৎকার ছাড়িয়া পলায় যত তারাগণ।।
প্রাণ লয়ে গেল চন্দ্র গণিয়া প্রমাদ।
ব্রহ্মলোকে গিয়া চন্দ্র করেন বিষাদ।।
ক্রন্দন করেন চন্দ্র ব্রহ্মা পান দুঃখ।
ত্বরিতে গেলেন ব্রহ্মা রাবণ-সম্মুখ।।
ব্রহ্মা বলিলেন শুন অবোধ রাবণ।
চন্দ্রের সহিত যুদ্ধ কর কি কারণ।।
সর্ব্বলোকে বন্দে দেখ দ্বিতীয়ার চন্দ্র।
পূর্ণিমার চন্দ্র করে জগৎ আনন্দ।।
সর্ব্বলোকে হরষিত ধবল-রজনী।
চন্দ্রের সহিত কেন কর হানাহানি।।
কারো মন্দ না করে সবার করে হিত।
হেন চন্দ্রে মারিতে তোমার অনুচিত।।
শুন রে রাবণ তোর মন্ত্র কহি কাণে।
পরেরে মারিতে পাছে নিজে মর প্রাণে।।
দুইজনে যুদ্ধ হইলে মরে এক জন।
অতঃপর ক্ষমা দেহ অবোধ রাবণ।।
বিধাতার বচন লঙ্ঘিবে কোন্ জন।
রাবণ প্রবোধ মানি করিল গমন।।
অগস্ত্যের কথা শুনি হৃষ্ট রঘুমণি।
পুনর্ব্বার জিজ্ঞাসা করেন কহ মুনি।।
চন্দ্রকে জিনিয়া কোথা গেল দশানন।
কহ দেখি মুনি শুনি পুরাণ-কথন।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress