Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 14

রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

শ্রীরাম বলেন মুনি করি নিবেদন।
ব্রহ্ম-অংশে রাক্ষস জন্মিল কি কারণ।।
তেমনি সন্তান হয় যেরূপ ঔরস।
ব্রাহ্মণের বীর্য্যে কেন জন্মিল রাক্ষস।।
বিশ্বশ্রবার পুত্র যে কুবের দশানন।
দুই ভাই দুই জাতি হৈল কি কারণ।।
কুবের হইল যক্ষ, রাক্ষস রাবণ।
এক বীর্য্যে দুই জাতি হৈল দুই জন।।
বিশ্বশ্রবার দুই পুত্র সর্ব্বলোকে জানে।
রাবণ রাক্ষস কেন কহ মহামুনে।।
অগস্ত্য বলেন, রাম কর অবধান।
কুবেরের জন্মকথা কহি তব স্থান।।
মহামুনি পুলস্ত্য যে ব্রহ্মার নন্দন।
ব্রহ্মার সমান মহাতপে তপোধন।।
সুমেরু-পর্ব্বতে থাকি যোগাসন করি।
কেলি করিবারে এল অনেক সুন্দরী।।
দেবতা গন্ধর্ব্ব-কন্যা আইল বিস্তর।
সখী সখী মিলি কেলি করে নিরন্তর।।
তৃণবৃন্দু মুনি-কন্যা রূপেতে অপ্সরা।
ত্রৈলোক্য-মোহিনী নাম হৈল স্বয়ন্বরা।।
মুনি থাকে তপস্যাতে মুদি দুই আঁখি।
সেইখানে নিত্য আসে কন্যা শশিমুখী।।
নাচে গায় মুনির নিকটে করে রঙ্গ।
প্রতিদিন মুনির তপস্যা করে ভঙ্গ।।
কোপেতে পুলস্ত্য মুনি শাপ দিল তারে।
বিনা পুরুষেতে গর্ভ হইবে উদরে।।
তবু নাহি শুনে কন্যা নাচে গায় সুখে।
কোপেতে পুলস্ত্য মুনি শাপিলেন তাকে।।
না শুন আমার কথা কোন্ অহঙ্কারে।
মুনি-শাপে কন্যার স্তনেতে দুগ্ধ ঝরে।।
অপমান পেয়ে গেল বাপের আলয়।
কন্যার দুর্গতি দেখি পিতা স্তব্ধ হয়।।
তৃণবৃন্দু শুনিয়া সকল বিবরণ।
পুলস্ত্য নিকটে গেল মলিন বদন।।
প্রণাম করিল গিয়া পুলস্ত্যের পায়।
জিজ্ঞাসা করিল মুনি বসতি কোথায়।।
তৃণবৃন্দু বলে থাকি এই গিরিপুরে।
দিয়াছ দারুণ শাপ আমার কন্যারে।।
অনূঢ়া কন্যার গর্ভ শুনি লাগে ত্রাস।
স্তনযুগে দুগ্ধ ঝরে, একি সর্ব্বনাশ।।
মুনি বলে তব কন্যা বড়ই চঞ্চলা।
ভাঙ্গিল তপস্যা মোর করি অবহেলা।।
করিল কুকর্ম্ম যে যৌবন-অহঙ্কারে।
দিয়াছি তাহার মত প্রতিফল তারে।।
তৃণবৃন্দু বলে, দোষ ক্ষম মহাশয়।
তুমি না করিলে দয়া জাতি-নাশ হয়।।
মুনি বলিলেন, আর কি আছে উপায়।
বলেছি যে কথা, তাহা খণ্ডন না যায়।।
তৃণবৃন্দু বলে মুনি কর অবধান।
পরম তপস্বী তুমি ব্রহ্মার সমান।।
তোমার অসাধ্য কিছু নাহিক সংসারে।
ইহাতে সকলি তুমি পার করিবারে।।
বালিকা আমার কন্যা, বিবাহ না হয়।
হেন কন্যা গর্ভবতী শুনে লাগে ভয়।।
শাপেতে হইল গর্ভ কেহ না বুঝিবে।
বলহ কেমনে মুনি জাতি-রক্ষা হবে।।
মুনি বলে, তৃণবৃন্দু কি আছে যুকতি।
কিসেতে হইবে তব কন্যার নিষ্কৃতি।।
তৃণবৃন্দু বলে যদি হইলে সদয়।
সেই কন্যা বিভা তুমি কর মহাশয়।।
মুনির হইল মন বিভা করিবারে।
তৃণবৃন্দু কন্যা দান করিল মুনিরে।।
করিল মুনির সেবা কন্যা গুণবতী।
মুনি তারে দিল বর হয়ে হৃষ্টমতি।।
মম শাপে গর্ভ হয়ে পেলে অপমান।
মম বরে প্রসবিবে উত্তম সন্তান।।
সেই গর্ভে জন্মেন বিশ্বশ্রবা মহামুনি।
ভরদ্বাজ-কন্যা বিভা করিলেন তিনি।।
ভরদ্বাজ-মুনিকন্যা নাম তার লতা।
তার গর্ভে জন্মিল কুবের মহারথা।।
বিশ্বশ্রবার ঔরসেতে কুবেরের জন্ম।
কুবের করিল তপ আরাধিয়া ধর্ম্ম।।
কুবের করিল তপ সহস্র বৎসর।
তার তপ দেখিয়া ব্রহ্মার লাগে ডর।।
ব্রহ্মার বরেতে কুবের হইল অমর।
অমর হইল আর হৈল ধনেশ্বর।।
পবন বরুণ যম অগ্নি পুরন্দর।
সবে মিলি কুবেরেরে দিল বহু বর।।
পাইল পুষ্পক-রথ কি কব বাখান।
আপনার হাতে ব্রহ্মা করিল নির্ম্মাণ।।
রথ সজ্জা করি দিল রথের সারথি।
রাজহংসে বহে রথ পবনের গতি।।
দশ যোজন রথখান অতি সুচিকণ।
পৃথিবী ভ্রমিতে পারে যদিকরে মন।।
বর পেয়ে কুবের প্রফুল্ল হৈল মনে।
প্রণাম করিল গিয়া বাপের চরণে।।
অতুল ঐশ্বর্য্য ব্রহ্মা দিল বরদান।
সবে মাত্র নাহি দিলা থাকিবার স্থান।।
পিতার নিকটে যক্ষ করিল মিনতি।
আজ্ঞা কর কোথা পিতা করিব বসতি।।
বিশ্বশ্রবা বলেন তুমি ধন-অধিকারী।
তোমার বসতি-যোগ্য স্বর্ণ-লঙ্কাপুরী।।
রাক্ষসের রাজ্য সেই পুরী মনোহর।
রাক্ষপ পলায়ে গেছে পাতাল ভিতর।।
কুবের বলেন পিতা করি নিবেদন।
রাক্ষস পলায়ে গেছে কিসের কারণ।।
বিশ্বশ্রবা বলেন দুষ্ট নিশাচরগণ।
দুষ্ট দেখি রিপু হইলেন নারায়ণ।।
বিষ্ণুর সঙ্গেতে যুদ্ধ করিল বিস্তর।
বিষ্ণুচক্রে মরিল অনেক নিশাচর।।
কোপেতে করিল আজ্ঞা দেব শ্রীনিবাস।
পৃথিবীতে থাকিলে করিব সর্ব্বনাশ।।
বিষ্ণু-ভয়ে ভঙ্গ দিল যত নিশাচর।
লুকায়ে রয়েছে ‍গিয়া পাতাল ভিতর।।
সে অবধি শূন্য পড়ি আছে লঙ্কাপুরী।
তথা গিয়া থাক পুত্র ধন-অধিকারী।।
পিতৃ-আজ্ঞা পেয়ে সে কুবের হৃষ্টমতি।
লঙ্কার ভিতরে গিয়া করেন বসতি।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress