ওরে আশা , কেন তোর হেন দীনবেশ !
নিরাশারই মতো যেন বিষণ্ন বদন কেন —
যেন অতি সংগোপনে
যেন অতি সন্তর্পণে
অতি ভয়ে ভয়ে প্রাণে করিস প্রবেশ ।
ফিরিবি কি প্রবেশিবি ভাবিয়া না পাস ,
কেন , আশা , কেন তোর কিসের তরাস ।
আজ আসিয়াছ দিতে যে সুখ – আশ্বাস ,
নিজে তাহা কর না বিশ্বাস ,
তাই হেন মৃদু গতি ,
তাই উঠিতেছে ধীরে দুখের নিশ্বাস ।
বসিয়া মরমস্থলে কহিছ চোখের জলে —
“ বুঝি হেন দিন রহিবে না ,
আজ যাবে , আসিবে তো কাল ,
দুঃখ যাবে , ঘুচিবে যাতনা । ”
কেন , আশা , মোরে কেন হেন প্রতারণা ।
দুঃখক্লেশে আমি কি ডরাই ,
আমি কি তাদেব চিনি নাই ।
তারা সবে আমারি কি নয় ।
তবে , আশা , কেন এত ভয় ।
তবে কেন বসি মোর পাশ
মোরে , আশা , দিতেছ আশ্বাস ।
বলো , আশা , বসি মোর চিতে ,
“ আরো দুঃখ হইবে বহিতে ,
হৃদয়ের যে প্রদেশ হয়েছিল ভস্মশেষ
আর যারে হত না সহিতে ,
আবার নূতন প্রাণ পেয়ে
সেও পুন থাকিবে দহিতে ।
করিয়ো না ভয় ,
দুঃখ – জ্বালা আমারি কি নয় ?
তবে কেন হেন ম্লান মুখ
তবে কেন হেন দীন বেশ ?
তবে কেন এত ভয়ে ভয়ে
এ হৃদয়ে করিস প্রবেশ ?