কিভাবে সাজাই তোমায় বলতো ?
বহুদিনের ইচ্ছে আমার মনের মাধুরী দিয়ে তোমার ছবি আঁকি স্রোতস্বিনী।
এক সসপ্যান দুধে দশটা টকটকে লাল গোলাপ ফোঁটালে যে নির্যাস শোনিতের মতো বেরিয়ে আসে,
সেই রং তোমার সারা শরীরে।
তুমি যখন বনাঞ্চলে হেঁটে যাও গাছপালা ঘেরা গভীর অরণ্যে,
তখন পূর্ণিমা না থাকলেও সারা বন জুড়ে পাখিরা ডেকে ওঠে পূর্ণিমা ভেবে বারবার।
স্রোতস্বিনী, তুমি যখন কোনো শ্মশানে এসে দাঁড়াও,
তখন শব দেহের শরীর থেকে
মুহূর্তে উড়ে যায় স্থবিরতা ।
বিষাদের সুরেও বারবার বেজে ওঠে ইমনের রাগ।
ঝংকৃত হয় মিষ্টি বাঁশীর সুর।
কখনো ভেবেছি, কিছু জোনাকি গুঁজে দেবো তোমার কুন্তলে।
কুন্তুলে গোঁজার আগেই জোনাকিরা সব মারা গেছে,
তোমার উজ্জ্বলতার প্রভাবে।
তুমি যখন নীলাদ্রির চূড়ায় চূড়ায় কলকল খলখল বয়ে যাও,
নীলাদ্রিও জাগ্রত হয়ে সংকীর্তন শুরু করে খোল-করতাল নিয়ে।
কত রাত ভীষণ নিকটে এসেছো স্রোতস্বিনী।
তারপর আমার সব স্বপ্নকে কুড়িয়ে নিয়ে গ্যাছো কবরের নির্জনতায়।
আমার স্বপ্নরা তোমাকে দেখলেই চুপ করে যায়।
কত রাত জাগিয়েছ আমায় স্রোতস্বিনী।
আমার উঠোনে পুতেছো কতো রকমের আশার বীজ।
তবু এ জন্মে সাজানো হলোনা তোমায়।
তুমি বয়ে চলো একদম একাকী সম্পূর্ণ নির্জনতায়।
স্রোতস্বিনী, একবার গভীরে এসো।
ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস কোরো,
“কেমন আছো তুমি?
কতো দূরে তোমার নিবাস?”
কবির কোনো গৃহ নেই।
কবি ভীষণ বাউন্ডুলে।
কবি তাই কোনো গীত গাইতে পারেনা খোল-করতালে।
কবিকে নির্জনেই থাকতে দাও।
স্রোতস্বিনী আসো,
ফিরে যাও বারবার।
আমাকে ভাবতে দাও
কি দিয়ে সাজাই তোমায় ?
যা ভেবেই চলেছি জন্ম থেকে জন্মান্তর।