অসৎ চরিত্রের কাহিনী
এক ছোট্ট গ্রামে এক যুবক ছিল, যার নাম ছিল রোহিত। দেখতে ভালো, কথায় মিষ্টি, কিন্তু তার ভিতরের মানুষ ছিল একেবারে আলাদা। রোহিত ছিল একটা চরিত্রহীন ছেলে, যে কখনও সত্যের পথে হাঁটে না। তার জীবন ছিল একেকটা মিথ্যা আর আড়ালের গল্প। সে ভাবত, যত বেশি মিথ্যা বলবে, তত বেশি মানুষের কাছে তার মূল্য বাড়বে। কিন্তু সে জানত না যে, মিথ্যা মানুষের জীবন শুধুই তিক্ত করে, কিন্তু কখনও সত্যের চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।
গ্রামের মানুষ তাকে ভালোবাসত, কারণ সে সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলত, তাদের সাহায্য করত এবং সবসময় মিষ্টি কথা বলত। কিন্তু তার হৃদয়ে সৎ উদ্দেশ্য ছিল না। একদিন রোহিত একটি বড় ব্যবসার সুযোগ পায়। তার সামনে ছিল এক নতুন দুনিয়া, যেখানে টাকা, ক্ষমতা আর প্রভাব সবই ছিল। কিন্তু এই দুনিয়ায় প্রবেশ করার জন্য তাকে যে পন্থা অবলম্বন করতে হত, সেটা ছিল একেবারে অসৎ।
সে শুরু করে মিথ্যা কথা বলার, অন্যদের ঠকানোর, তাদের বিশ্বাস ভেঙে দেওয়ার। সে জানত না যে, একদিন এই মিথ্যা তার নিজের জীবনকে ধ্বংস করে দেবে। একদিন গ্রামে এক বৃদ্ধা মহিলা তাকে নিজের জমি বিক্রি করতে চাইলেন। রোহিত সেখান থেকে জমি কিনে তাকে কম দাম দিয়ে প্রতারণা করল। বৃদ্ধা মহিলা, যিনি তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন, অনেক কষ্টে তার জমি বিক্রি করেছিলেন।
কিন্তু রোহিত যে ব্যবসা শুরু করেছিল, তাতে তাকে কিছুদিন পর চরম বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। সে ভুল পথে চলছিল, আর সেই পথে একের পর এক ধাক্কা খেতে লাগল। তার মিথ্যা ভেঙে পড়েছিল, আর সত্য একদিন সামনে চলে এসেছিল। রোহিত নিজের মিথ্যাগুলির মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিল। তার সমস্ত অর্জন মুহূর্তের মধ্যে হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
গ্রামের মানুষরা রোহিতকে কখনোই মাফ করল না। তাকে একঘরে করা হলো। তার ভিতরের আত্মবিশ্বাস একেবারে ভেঙে পড়ল, কারণ সে উপলব্ধি করতে শুরু করল যে, একবার চরিত্র হারালে তা আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। রোহিত জানত না যে, যে পথ সে বেছে নিয়েছিল, তা একমাত্র তাকে ধ্বংস করবে। কিন্তু এখন তাকে বুঝতে হয়েছে যে, সত্যের রাস্তায় হাঁটা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
শেষমেষ, রোহিত একদিন গ্রামের এক বৃদ্ধ মানুষের কাছে গিয়ে তার ভুল স্বীকার করে। বৃদ্ধ মানুষ তাকে বললেন, “এটাই জীবন, ছেলে। তুমি যদি সত্য পথে চল না, তবে একদিন সে সত্যই তোমাকে খুঁজে বের করবে। তবে তুমি যদি এখন থেকেই সৎ হও, তোমার জীবন ফের পেতে পারে।”
এই কথা রোহিতের জীবনে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল। সে বুঝতে পারল যে, শুধুমাত্র টাকা, ক্ষমতা আর মিথ্যার জোরে কিছুদিন সুখী থাকা সম্ভব হলেও, শেষমেশ সত্যের কাছে পরাজিত হতে হয়। সত্যই একমাত্র পথ, যা তাকে শিখিয়ে গেল জীবনকে সঠিকভাবে চালানোর আসল কৌশল।
এভাবেই রোহিত জীবনের কঠিন শিক্ষাগুলো শিখল, এবং শেষে সে নিজের ভুলগুলো শুধরে সৎ পথে হাঁটতে শুরু করল।