অপরাজিতা
“আমাকে ক্ষমা করো নিশা, আমার পক্ষে বাড়ির অমতে গিয়ে তোমাকে বিয়ে করা অসম্ভব ।”
” নিলেশ এতোদিন প্রেম করে আমাকে এই ভাবে…! “
নিলেশ আর দাঁড়ায় নি।
নিশার জীবনের সাদা পাতা সাদাই রয়ে গেল।
সাত বছর পর…
“নিলেশ! শুনছি নতুন বস যে এসেছে সে খুব কড়া ধাঁচের মহিলা।”
“তুমি থামো তো বিমলদা! কত বস দেখলাম।”
সকালে নতুন বসের কেবিনে নিলেশের ডাক পড়েছে।
“ম্যাডাম আসবো?”
“আসুন। বহুদিন ধরে কোম্পানির বহু টাকার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। আপনার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ আছে। কোম্পানির টাকা তছরুপের অভিযোগে আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে।”
কথাগুলো বলে মহিলা নিলেশের দিকে ফিরল।
নিলেশ বিস্মিত হয়ে গেল বসের চেয়ারে নিশাকে দেখে । সেই নিশা যার সাথে আজ থেকে সাত বছর আগে প্রেম করেও বিয়েতে প্রত্যাখ্যান করেছিলো।
” নিশা! তুমি !”
“নিশা না! ম্যাডাম। তুমি না! আপনি। “
“ম্যাডাম প্লিজ আমার চাকরিটা চলে গেলে বৌ বাচ্চা নিয়ে….”
“আপনি এখন আসতে পারেন।”
পরদিন সকালে নিশার বাড়ির সামনে একজন মহিলা বাচ্চা কোলেনিয়ে
“ম্যাডাম আসতে পারি?”
“আসুন!”
“ম্যাডাম আমার স্বামীর চাকরিটা চলে গেলে আমার বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। আপনিতো একজন মহিলা; আপনি অন্তত বুঝবেন।প্লিজ ম্যাডাম, নিলেশ আর কোনোদিন এ কাজ করবে না আমি কথা দিচ্ছি। আমাদের দয়া করুন। আমি আপনার পায়ে ধরছি, অন্তত আমার বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে ওকে আপনি মাফ করে দিন ম্যাডাম। “
“বেশ নিলেশেকে আমি চাকরি থেকে বরখাস্ত করছি না। কিন্তু ওকে এই পোস্টে আর রাখতে পারবো না। অনেক নিচু পোস্টে কাজ করতে হবে। ও কি রাজি?”
“হ্যাঁ ম্যাডাম ও রাজি। আপনার অনেক দয়া। আমি এখুনি নিলেশকে গিয়ে বলছি ম্যাডাম আমাদের দয়া করেছেন।”
মহিলা চলে গেলে নিশা ভাবতে লাগল, ভাগ্যের কি পরিহাস, একদিন যে আমাকে মুহূর্তে ছুঁড়ে ফেলে দিতে দ্বিধা বোধ করেনি আজ সে আমার দরজায় ভিখারির মতো দাঁড়িয়ে আছে।
জীবন বড় বিচিত্র। কোন মোড়ে কি অপেক্ষা করছে কেউ জানে না।