ঝরাপাতা || Taslima Nasrin
ঝরাপাতাদের জড়ো করে পুড়িয়ে দেব ভেবেছি অনেকবার,রাত হলেও যত রাতই…
ঝরাপাতাদের জড়ো করে পুড়িয়ে দেব ভেবেছি অনেকবার,রাত হলেও যত রাতই…
আশ্চর্য একটা গাছ দেখি পথে যেতে যেতে, যে গাছে সারা…
তার চেয়ে ঘাস হয়ে যাই চল,তাকে বলেছিলাম, সেবলেছিল চল।বলেছিল, তুমি…
যার দিয়ে অভ্যেস, হাত পেতে কিছু নিতে গেলে আঙুলগুলোগুটিয়ে আনে…
১. ঠিক জানালার ওপারেই দাঁড়িয়ে আছে মৃত্যু।দরজা খুললেই চোখের দিকে…
হিমের কুয়াশা নাকে—তারপর—মৃত্যু একদিন—তবু তার আগে মৃত্যু হানা দেয়দিবসের আর্তেরা…
হয়তো বা কোনো দূর পিরামিড দেখা যাবে—অন্ধকার সূর্যমন্দিরের পাশেজনরবহীন বালির…
স্ট্রেচারের ‘পরে শুয়ে কুয়াশা ঘিরিছে বুঝি তোমার দু—চোখ:ভয় নেই, মৃত্যু…
সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানেকাটায়েছি—অনেক গম্ভীর কথা নির্জন পেঁচার মতোমেধায় ভাবিব ব’লে—জন্ম…
সূর্যের আলো মেটায় খোরাক কার:সেই কথা বোঝা ভার।অনাদি যুগের অ্যামিবার…
সান্ত্বনার কথা ঢের ভাবা গেছে আঁধার রভসেতিতিরের ডিম থেকে আকাশের…
সময়কে ধরে রাখা মহা দায়গভীর মাশুলে তারে কেনা যায়তবুও হাঁটিতে…
রজনীর অন্ধকার এইরকম।তবুও আরও অন্য এক অন্ধকার আসেমোমের প্রদীপ হাতে—কোনোদিন—কিশা…
যেন কোনো যাদুঘরে ঘুমায়েছে—মনে হয়পেটের ভিতরে খড় পুরেচিতাবাঘিনীর মতো সুন্দর,…
যারা মরে গেছে তাহাদের কথা ভেবেপাদপ্রদীপ পায় না তো তার…
যদিও রয়েছি বেঁচে ১৯৩৮—এ আজো মোরা—তবু আমাদের জন্ম যেন হয়েছিল…
মনে হয় হেমন্তের জ্যোৎস্নায়সাদা তাম্বুর মতো কুয়াশায়আজও ঢের লোক দূর—দূর…
মনে হয় যেন মূল চাহুনিতে দিনরাতগুলো ছেঁকেবেকুব চাদরে বারবার সব…
প্রেম কি জাগায় সূর্যকে আজ ভোরে?হয়তো জ্বালায়ে গিয়েছে অনেক—অনেক বিগত…
প্রথম যৌক্তিক জন্ম নিল—জন্মিতেই হবে বলে—নয়—এইখানে পৃথিবীর পরিসরপীন তুলটের ঘ্রাণ—উয়ে—কাটা…
না জানি কী সব মঙ্গলের দিকে চেয়েআমরা নেমেছি মাকড়সা—মৃত সিঁড়ির…
তখন সকল প্রেম মরে যাবে—সব প্রণয়ীরাসূর্যাস্তের আভা আসে টের পেয়ে—সচকিত…
ঢের দূর থেকে বন্ধুজনারে চেনা যায়দূরবীন—খেকো বিষম আমোদ নীলিমা হয়েছে…
ঢের কবি মরে গেছে সচকিত হয়ে যেন নিশীথের ভূতের মতনসহসা…
জীবনের সাথে আমাদের রূঢ় পরিচয় হয়েছিলহয়তো বা হয়েছিল মূঢ় পরিচয়অনুরাধা—শতভিষা…
কোথাও নতুন বুদ্ধের যেন জন্ম হয়এই ভেবে চলিতেছিবহুদিন ধরে স্ফুরিতেছি…
কোথাও অনেক দূর যেতে হবেকিংবা খুব নিকটেইতবু ব্যবধান যেন—এক জীবনের—শানিত…
কৃষ্ণ যজুর্বেদ যারা রচেছিল একদিনআর যারা পিরামিড সৃষ্টি করেছিল—দিকে দিকে…
কালো মখমল দস্তানার মতো ধীরে ধীরে আসেঅন্ধকারআমাদের শরীরের শীত তারে…
কবে চণ্ডীদাস মরে গেছে—বিদ্যাপতি—কৃত্তিবাস ওঝাশেক্ষসীর—ক্র্যাশ—ব্যাসরায়গুণাকর—ডান—বোদলেয়ার—ভিলোঁ—ভার্লেন—কীটসতাহাদের মৃত মুদ্রা যেন ভৌতিক কলমের…
ওইখানে বনানীর তৃণঘিরে আছে তোমারে হরিণওই এক মরকত: জীবনের ছবিএ…
এইখানে কাকজ্যোৎস্না।নক্ষত্রের আলো এসে গম্বুজের পরেঘড়ির কাঁটার রোল সব শান্ত…
Powered by WordPress