এটা কাঁপার সময় নয়, যদি সারা রাজধানি থরথর করে ওঠে
ভূমিকম্পে, ভেঙে পড়তে থাকে টাওয়ার গম্বুজ, তাহলেও স্থির দাঁড়িয়ে
থাকতে হবে একলা তোমাকে, পঞ্চাশ তোমাকে সেই দায়িত্ব দিয়েছে।
স্থির দাঁড়িয়ে থাকবে, অবিচল, মুহূর্তের জন্যেও একটুও টলবে না।
তুমি তো জানোই তোমার সামনে আর কিছু নেই, সামনের কিছুই আর
মূল্যবান নয়, সবই তুচ্ছ নিরর্থক তোমার নিজের জন্যে,
তবুও তোমাকে বুনে যেতে হবে বীজ নামাতে হবেই বৃষ্টি সারা ক্ষেত জুড়ে।
স্থির জ্ঞানী চাষীর মতোই বীজ বুনে যাবে, মুহূর্তও অন্যমনস্ক হবে না।
তোমার সামনে আছে মরুভূমি, তোমার দায়িত্ব ওই মুমূর্ষ মাটিকে
সবুজের সমারোহে আদিগন্ত ভ’রে তোলা; তোমার সামনে শুধু বিকট পাথর,
তোমার দায়িত্ব ওই পাথরের দেহ থেকে রূপ ছেনে আনা।
প্রাজ্ঞ শ্রমিকের মতো কাজ করে যাবে, মুহূর্তের জন্যেও বিশ্রাম নেবে না।
কিছুই নিজের জন্যে নয় মনে রেখো, ভুলে যাও কামুক ওষ্ঠ আর আলিঙ্গন,
আর স্বর্ণচাপা; তার জন্যে কামময় পুরুষ রয়েছে; তোমার দায়িত্ব
শুধু নিজেকেই জ্বেলে জ্বেলে রূপময় শরতের জ্যোত্সা ঢেলে যাওয়া।
চোখ অন্ধ করে জ্যোৎস্না জ্বালো, তুমি দেখবে না, অন্যরা দেখুক।
কাঁপবে না, একবারও টলে উঠবে না; হও অদ্বিতীয় নৃশংস নিষ্ঠুর
নিজেরই প্রতি, কোনো দীর্ঘশ্বাস যেনো বুক থেকে
বেরিয়ে না আসে, শুধু বেরোক ঝরনা পাখি চাঁদ অথবা কবিতা।
এটা কাঁপার সময় নয়, স্থির হও, মুহূর্তের জন্যেও আর কেঁপে উঠবে না।