বড়দিন এবং খ্রিস্টমাস ট্রি
শীত সন্ধ্যায় আবারও মানুষ উৎসবমুখর। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, আর এদিনেই পার্ক স্ট্রিট হয়ে ওঠে ওয়াকিং স্ট্রিট। অসংখ্য মানুষ এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে উৎসব পালন করেন। ওদিকে আবার চিড়িয়াখানাতেও তিল ধারণের জায়গা নেই। সবমিলিয়ে এক জমজমাট উৎসবে মেতে উঠেছে কলকাতাবাসী। আর বড়দিন মানেই যেন সুস্বাদু কেকে কামড় দিয়ে এক স্বর্গসুখ অনুভব করা ! বস্তুতঃ বড়দিন আর কেক যেন সমার্থক! অতীতের একসময় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষজন বড়দিনের আগের দিন উপবাস করতেন। আর তারপর বড়দিনে প্লাম পরিজ খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করতেন, ঠিক আমরা যেমন ডাবের জল খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করি আর কি ! তাঁরা বিশ্বাস করতেন উপবাসের পরে পরিজ খেলে শরীর খারাপ হয়না এবং পরবর্তী খাবারগুলো হজম হয় । এরপর পরিজ বানানো শুরু হয় ড্রাই ফ্রুটস দিয়ে। সময় থেমে থাকেনি। তারপর মশালা আর মধু মিশিয়ে পরিজ হয়ে যায় খ্রিস্টমাস পুডিং। ষোড়শ শতকে ওটমিলের পরিবর্তে ময়দা, চিনি আর ডিম দিয়ে তৈরি করা হয় অতীব সুস্বাদু পাম কেক । যাইহোক বড়দিনের আরও একটি সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে খ্রিস্টমাস ট্রি দিয়ে ঘর সাজানো । শোনা যায় জার্মানিতে একসময় শীতকালে এই সুদৃশ্য খ্রিস্টমাস ট্রি দিয়ে ঘর সাজানোর রেওয়াজ ছিল। ১৭৫০ সালে এই গাছ দিয়ে সুন্দরভাবে ঘর সাজানো প্রথমবার দেখা যায় সেখানকার ট্রাসবুর্গ শহরে। তাঁর বেশ কয়েক বছর পরে ১৭৭১ সালে জোহান উলফগাং বহন গেটে নামের একজন বিখ্যাত লেখক বড়দিনের ছুটি কাটাতে জার্মানি গিয়ে এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন । তিনি দেখেন জার্মানির ট্রাসবুর্গ শহরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এই দৃশ্য। বেশ অবাক হয়ে যান সেই বিখ্যাত লেখক। আশ্চর্যের বিষয় হল জোহান উলফগাং বহন গেটে তাঁর লেখা ‘ দ্য সাফারিং অব ইয়ং ওয়েরথার ‘ বইতে এই বিশেষ গাছ দিয়ে সুন্দরভাবে ঘর সাজানোর কথা সবিস্তারে বর্ণনা করেন। এরপর কেটে যায় অনেকগুলো বছর। ১৮২০ সালে লেখকের এই বই নিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দেশগুলোতে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়। আশ্চর্যের বিষয় হল, ওইবছর জার্মান রাজকুমার অ্যালবার্টের বিবাহ সুসম্পন্ন হয়। আর তারপরেই সমগ্র ইংল্যান্ডকে খ্রিস্টমাস ট্রি দিয়ে সাজিয়ে বড়দিন উদযাপন করা হয়।।