ইন দ্যা নেম অফ যীশাশ
বেশ কিছু বছর ধরে চব্বিশ ডিসেম্বর রাত এগারোটা থেকে ডি ডি বাংলায় ক্রিসমাস ক্যারলের যে অনুষ্ঠান সেন্ট পলস্ ক্যাথিড্রাল থেকে সম্প্রচার হয় তা দেখছি। সেখানে আমার
সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ বিশপ পরিতোষ ক্যানিং এর বক্তব্য। কারো হয়ত প্রার্থনা গীত বা শুদ্ধিকরণ বা খ্রীষ্টের রক্ত গ্রহণ দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু অতিমারির ঠিক আগে উনিশ সালে বিশপ বক্তৃতায় একটি গল্প বলেছিলেন। আত্মীয় বন্ধুদের যেভাবে নিজের ভাষায় বলেছি,সেভাবেই বলার চেষ্টা করলাম।
উনি শুরুতে বলেছিলেন যে সময় ইসরাইলে দস্যুদের রাজত্ব চলছে, বিদেশি শাসকদের দৃষ্টি পড়েছে এবং মানুষের চূড়ান্ত দারিদ্র্য সে সময় নায়ক রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ করেছিলেন, এবং অহিংসার চরমোৎকর্ষ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তার জন্মের সময় তারারা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল, বেথলেহেমের আবহাওয়া পাল্টে গেছিল, অনেক মানুষ পূর্বপুরুষের দর্শন পেয়েছিলেন। শুধু তিনি জন্মালেন। তাতেই। শুধু আমরা যে তার নাম করি বা উপদেশ চিন্তা করি, তাতেই অচিন্তনীয় উপকার হয়। কয়েক শতাব্দী আগে ইউরোপের কোনো এক
গ্রামে (নাম মনে নেই) মহামারী দেখা দিয়েছিল। তারা অন্য গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করলে লোকেরা ঢুকতে দিলনা এবং সেই দেশের রাজা যে চিকিৎসক পাঠালেন, তিনি এসে আদেশ দিলেন, “এ রোগ দুরারোগ্য। যাদের হয়নি, তারা প্রয়োজন ছাড়া বাইরে আসবেন না। যাদের হয়েছে তারা সুস্থ লোকের সঙ্গে থাকবেন না।” এই অবস্থায় কতিপয় লোক তাদের ছোট গির্জার বিশপের কাছে সে কথা বলতে তিনি বললেন,” যা বলব, তোমরা ঠিক ঠিক করতে পারলে উপায় হবে। তারা সম্মতি দিলে তিনি বললেন ” আজ রাস্তার ধারে, গাছে, পাঁচিলে,
যত বাড়ি আছে তাদের দরজায় এমন ভাবে “যীশাশ” নামটি লেখ যাতে সবাই সবসময় দেখতে পায়। জিজ্ঞাসা করলে বোলো আমি বলেছি টেবিলে, বেসিনে এমনকি বাথরুমের দরজায় পর্যন্ত ঐ নাম লিখতে, যাতে তাকে মনে আসে বার বার।” এক সপ্তাহ পরে যখন রাজাকে ডাক্তার বলেছিল “রোগ সম্পূর্ণ অদৃশ্য। সবাই ভালো হয়ে গেছে”, তখন সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রাজাকে লোক পাঠাতে হয়েছিল। শুনে ভাবছিলাম, গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলছেন “তুমি যা দেখেছ তা অসংখ্যের এক অংশ মাত্র।” তার নামেই হয়ত এরকম হওয়া সম্ভব।