Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অনেক মৃত বিপ্লবী স্মরণে || Jibanananda Das

অনেক মৃত বিপ্লবী স্মরণে || Jibanananda Das

তারা সব মৃত ।
ইতিহাসে তবুও তাদের
কেবলি বাঁচার প্রয়োজন ব’লে
তাদের উত্তর অধিকার
কোনো কোনো মানবের হাতে আসে।
তারা ম’রে গেছে।
সবারই জীবনে আলো প্রয়োজন জেনে
সকলের জন্যে স্পষ্ট পরিমিত সূর্য পেতে গিয়ে
তবুও বিলোল অন্ধকারে-
তারা আজ পৃথিবীর নিয়মে নীরব।
এই অই বাক্তির জীবনে
সুসময় শুভ অর্থ পরিচ্ছন্নতার
প্রয়োজন র’য়ে গেছে জেনে নিয়ে তারা,
তবুও, ব্যক্তির চেয়ে ঢের বেশি গহন স্বভাবে উৎসারিত
জীবন-বিসারী ক্ষুব্ধ জনতাসমুদ্র দেখেছিল।
সেইখানে এক দিন মানুষের কাহিনী জন্মেছে;
বেড়ে গেছে;
কাহিনীর মৃত্যু হয় নাই;
কাহিনী ক্রমেই ইতিহাস।
জীবনধারণে- জানি- তবু-
জীবনকে, ভালো ক’রে অর্থময় ক’রে নিতে গিয়ে
ইতিহাস কেবলি আয়ত হয়ে আলো পেতে চায়।
নিজেদের আব্‌ছা ব্যক্তির মত মনে ক’রে তারা,
ইতিহাস স্পষ্ট ক’রে দিতে গিয়ে তবু
আজ এই শতকের শূণ্য হাতে শূন্যতার চেয়ে বেশি দান
দিয়েছিল হয়ত বা।
দেয় নি কি?
আজ এই হেমন্তের অন্ধকার রাতে
আমরা বিহ্বল ব্যক্তি,- তুমি- আমি- আরো ঢের লোক;
মানুষ-সমুদ্রে ঠেকে অন্ধকার বিম্বের মতন
তবুও সবার আগে নিজের আকাশ
নিজের সাহস স্বপ্ন মকরকেতন
আপনার মননশীলতা
গণনার প্রিয় জিনিসের মত মনে ভেবে নিয়ে
অন্য সকলের কথা ভুলে যাই।

সকলের জীবনের শুভ উদযাপনের চেষ্টায়
সূর্যের সুনাম আরো বড় ক’রে দিতে গিয়ে তারা
নিজেদের বিষণ্ণ সূর্যের কথা ভুলে গিয়েছিল।
মানবের কথা বিরচিত হয়ে চলে-
সেই সব দূর আতুর ভঙ্গুর সুমেরীয় দিন থেকে আজ
জেনিভায়,- মস্কৌ-ইংলান্ড্- আত্‌লান্তিক চার্টারে,
ইউ-এন্-ওয়ের ক্লান্ত প্রৌঢ়তায়- সতর্কতায়,
চীন- ভারতের- সব শীত পৃথিবীর
নিরাশ্রয় মানবের আত্মার ধিক্কারে- অন্তর্দানে।
হেমন্তের রাত আজ ক্ষুব্ধতায়- জনতায়- নর্দমায়-ক্লেদে
লোভাতুর ক্রূর রাষ্ট্রসমাজের রতির নৈরাজ্যে
অসম্ভব অন্ধ মৃত্যুতে
ফুরোনো ধানের ক্ষেতে তবু
মৃত পঙ্গপালদের ভিড়ে
নরকের নিরাশার প্রয়োজন র’য়ে গেছে জেনে, তবু বলে :
‘গভীর- গভীরতর তবুও জীবন-
নিজেদের দীনাত্মা ব্যক্তির মত মনে ক’রে ওরা
সকলের জন্যে সময়ের
সুন্দর, সীমিত আলো সঞ্চারিত ক’রে দিতে গিয়ে
প্রাণ দিয়েছিল ।
জীবনধারণে, তবু জীবনের আরো বর্ণনীয়
ব্যাপ্তির ভিতর দিয়ে আরো সুস্থ- আরো প্রিয়তর
ধারণায় ইতিহাস:- ইঙ্গিতের আরো স্পষ্টতায়;
তবে তা’ উজ্জ্বল হ’লে জীবন তবুও
নিরালোক হয়ে রবে কত দিন?
কত দিন হতে পারে!’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *