একটি মৃত্যু কথা
আমি এখন তোমার কথায় রাগ করি না , জানি তোমার কথা বলার ধরন এমনটাই ! যদি অনেকদিন দেখা না হয় ,প্রথমেই তুমি জিজ্ঞেস করবে , ‘ এতদিন কোন শ্মশানে ছিলে ‘ ? অথবা খুব দেখতে ইচ্ছে হলে , তুমি বলবে … ‘ মাঝে মাঝে আমার বাড়িতে এসে মরতে পারো না ‘।
বাসে ট্রেনে অনেকেই তোমার কথায় তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে ! সেদিন যেমন বনগাঁ লোকালে …. বারাসাত পর্যন্ত আয়েশ করে জানলার পাশে বসে থাকা মাঝ বয়সী ভদ্রলোকটিকে তুমি জিজ্ঞেস করলে , আর কতক্ষণ আপনি জীবিত থাকবেন ? লোকটা এই মারে কি সেই মারে ! অনেক কষ্টে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তখনকার মতো সামলে দিলেও , ট্রেন থেকে নেমে রিক্সাওয়ালার সাথে আবার ঝামেলা বেধে গেলো ! কি দরকার ছিলো শীতকালের ভর সন্ধ্যেয় খেটে খাওয়া লোকটিকে জিজ্ঞেস করার , এই দুটো মরা নিয়ে যেতে কত নেবে ?
এরকম হামেশায় হয় তোমার সাথে !
একদিন অনেক করে বোঝালাম , বয়স হয়েছে এবার কথার ধরনটা পাল্টাও । তুমি হাসতে হাসতে বললে , যেদিন মরবো সেদিন সব পাল্টে যাবে ! জানি এসব কথায় তুমি কোনদিন পাল্টে যাবে না ।
কিন্তু আজ আমি সত্যি তোমার উপর খুব রেগে গেছি ! আজ তোমার বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান ! বাড়ি ভর্তি লোক , সবাই আনন্দে মত্ত ! সন্ধ্যেবেলা তোমার ছেলে বরবেশে যাত্রা করবে , কেউ একজন জিজ্ঞেস করলো , তুমি যাবে না ? তুমি হাসতে হাসতে বললে , না ভাই আমি তোমাদের সাথে শ্মশানযাত্রী হব না ।
তখন হয়তো কেউই ভাবেনি আর কিছুক্ষণ পরই আমাদের সত্যি সত্যিই শ্মশানযাত্রী হতে হবে তোমাকে কাঁধে নিয়ে ।