Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মিল-অমিল || Sunil Gangopadhyay

মিল-অমিল || Sunil Gangopadhyay

‘চলো যাই, ধরো হাত, আরও একটু দূরে গিয়ে বসি
শহর মিলিয়ে যাক, নিজস্ব নির্জন এক মনোভূমি, মাথার
ওপরে পূর্ণশশী—’
‘হা-হা-হা-হা, সামান্য মিলের লোভে রোজকার চেনাশুনো চাঁদ
হল কিনা শশী, তবে এবার কি আরও কিছু ঘটবে পরমাদ?’
‘মাইকেল মন্দ লিখতেন না, জীবনের সঙ্গে যোগ যদিও নেই
এখনকার
তবুও গাল ভারী শব্দ, কৃত্রিম উপমা, চেষ্টাকৃত অলংকার
অনেকটাই উৎরে গেছে, মাঝে মাঝে মনে এসে যায়, বেশ
লাগে
এই যে পাথর একটা, তিমি মাছের আকৃতি, বসা যাক এর
পুরোভাগে।’
‘তুমি যখন তখন ফিরে যাও পুরনো কালের দিকে, পুরোভাগে,
সে আবার কী?’
‘এমনিই একটু মজা, জ্যোৎস্নার নীল আগুনে তোমার নতুন
মুখখানি একটু দেখি!
হ্যাঁ, হঠাৎ মনে পড়ল, পুরনো না পুরাতন, মনে আছে সেই
গানখানি
যদি পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে যায়, এতে দেখা যায় না
সময় ছাড়ানো হাতছানি?
রবীন্দ্রনাথ যে লিখলেন পুরনোর বদলে পুরাতন, তা কি শুধু
মাত্রা ঠিক রাখতে হবে বলে?’
‘চমৎকার হাওয়া দিচ্ছে, সময় ওড়াচ্ছি আমরা নিতান্তই মিথ্যে
কথাচ্ছলে!
কাছাকাছি কেউ নেই, হু হু হাওয়া, এখন কি গাইতে পারি না
একটা গান?’
‘জীবনানন্দ তো মাত্রা যাত্রা গ্রাহ্যই করতেন না, মনে আছে,
এক মাইল,
শান্তি কল্যাণ?’
‘আবার ওইসব শুরু করলে, কবিতাও না, নিছক শুকনো যত
ছন্দ প্রকরণ
বরং শোনাও না একটা সম্পূর্ণ কবিতা, আমি শুনতে চাই
তোমার নিজস্ব উচ্চারণ।’
‘হবে, একটু পরে হবে। একটা প্রশ্ন মনে আসছে তবু বার
বার
জীবনানন্দ যে ছন্দ ভাঙলেন, সুভাষ, শঙ্খ ও শক্তি কেন তাতে
ফিরলেন আবার?’
‘উত্তর তো স্বাভাবিক, বাংলা কবিতার পক্ষে ছন্দ-মিল
রীতিটাই ভালো’
‘টিকটিকির ঠিক ঠিক, তোমার কথায় দেখো এইমাত্র বিদ্যুৎ
চমকাল!’
‘আকাশেও চোখ আছে? বাতাস উৎসুক, তবু তুমি শুধু
দেখছ না আমাকে’
‘কবিতা তোমার ওষ্ঠে, তোমার অঙ্গুলি স্পর্শে, নখের ধুলোয়
মিশে থাকে
ওষ্ঠে নাকি ঠোঁটে, যদি আরও কাছে আসি, চাই একটি চুম্বন
ও দৃঢ় আলিঙ্গন’
‘তুমি একটি যা-তা, তুমি প্রত্যেক কবির মতো ন্যাকা, তুমি
শব্দের অছিলা নিয়ে
ড়ুব দিয়ে আছ সারাক্ষণ
আমার সময় বেশি নেই, ফিরে যেতে হবে, আমি চেয়েছি
কয়েকটি চুমু ও
তীব্র বুকে বুক ছোঁওয়া জড়াজড়ি
‘চুম্বন’ ও ‘আলিঙ্গন’, যত সব শব্দ মোহ, এখনও হলে না
আধুনিক, লেখো
চাঁদ নিয়ে কাব্য মরিমরি!’
‘শোন, শোন, আরও কিছু কথা আছে, লিখিনি কিছুই, এই
দেখো চেয়ে
ব্যর্থ লেখকের করুণ আঙুল—’
‘জানি জানি, এরপরও মিল দেবে, আঙুলের সঙ্গে ভুল,
কিংবা বুঝি
শিমুল-জারুল!’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress