চড়াই পাখিরা গাছে বাসা বাঁধে না
তারা মানুষের কাছাকাছি থাকতে চেয়েছিল
ছেলেবেলায় আমাদের পড়ার ঘরের ঘুলঘুলিতে দেখেছি
চড়াই পাখির বাসা
একদিন একটা বাচ্চা চড়াই পড়ে গেল মাটিতে
বেচারি এখন উড়তে শেখেনি
চড়াই পাখির মায়েরা নিজের সন্তানদের কোলে নিতে পারে না
মাটিতে পড়ে থাকা সন্তানদের তুলবে কী করে,
আমার মা দুধে সলতে ড়ুবিয়ে বাচ্চাটাকে খাওয়াবার
চেষ্টা করলেন
তাঁর মাথার ওপর কিচির মিচির করে ঘুরছে মা পাখিটা
এই দৃশ্যটি এত কাল আমার মাথায় গেঁথে আছে
এখন যেখানে থাকি, সেখানে কোনো ঘরেই
ঘুলঘুলি নেই
কোনো কংক্রিটের বাড়িতেই আর ঘুলঘুলি থাকে না
লম্বা টানা বারান্দাগুলোও অদৃশ্য
চড়াই পাখিরা কোথায় যাবে
মানুষের ওপর অভিমান করে চড়াই পাখির দল
নিরুদ্দেশে চলেছে
বেশি উঁচুতে উঠতে পারে না, আজ তারা মরণপণে
উঠে যাচ্ছে চিল-শকুনদের ছাড়িয়ে
বিদ্যুৎ তরঙ্গ ছাড়িয়ে, মানুষের সভ্যতা ছাড়িয়ে
ছোট্ট ছোট্ট বুকে অনেকখানি দুঃখ নিয়ে
তারা বিদায় নিচ্ছে।
হিমালয় পার হয়ে, মরুর দেশ, মেরুর দেশ পার হয়ে
আমাদের বাল্যকালের সব চড়াই পাখিরা