ছায়া সিনেমার মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমার অল্প বয়েস
নয় কি এগারো, হাত মুঠো করে চেঁচিয়ে পড়ছি কবিতা
‘বল বীর, চির উন্নত মম শির…’ সামনেই বাবা
ভয়ে উদগ্রীব, যদি ভুল করি, যদি মুখস্থ ফসকায়
আমি নির্ভয়, সেই সভা ঘরে ক্ষুদে আবৃত্তিকার
হাততালি কম পায়নি, এবং একটা রুপোর মেডেল!
বাংলার স্যার একদিন নিয়ে গেলেন কবির কাছে
জন্মদিনের উৎসব, কত ভক্ত এবং ফুলটুল
কবি রয়েছেন নির্বাক, চোখ কারুকেই দেখছে না
প্রণাম করেছি, পিঠে খোঁচা মেরে স্যার বললেন, শোনাও
কবিকে শোনাও সেই কবিতাটা, অন্য অনেক লোকেরা
তারাও বলল, শোনাও ও খোকা, শুরু করো, শুরু করো
কিন্তু আমার গলা থেকে আর বেরুল না কোনো শব্দ
পালাতে পারলে বাঁচি, ভিড় ঠেলে কী করে কোথায় লুকোব
ভয়ে লজ্জায় কুঁকড়ে মুকড়ে আমি যেন অদৃশ্য!
অত গোলমাল, অত স্তবস্তুতি কবির সহ্য হল না
গলার মালাটা একটানে ছিঁড়ে দিলেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে
একখানা ফুল ছিটকে পড়ল আমার বুকের ওপর
চট করে সেটা তুলে নিই কেউ দেখল কি দেখল না
সেই ফুলখানা আজও রাখা আছে আমার খাতার ভাঁজে…