বেহুলা লখিন্দরের কাহিনী যে কথা মনে পড়ায়
দেবতারা সব রূপবান বটে ধোয়া তুলসীপাতাটি নয়।
সব দেবতাই পুজো নিতে চায়, মানুষরা পুজো দেবে
পূজ্য দেবতা মানছি তবু কেন জোর করে পুজো নেবে!
মানুষেরা পুজো করলেই তবে দেবতারা নাকি সুখী
এটাই প্রমাণ হচ্ছে তাহলে দেবতারা কতো অসুখী।
প্রতিষ্ঠা পেতে মানুষ যে ভাবে নিজেকে তৈরী করে
দেবতারা দেখি প্রতিশোধ নেয় মানুষের পুজো না পেলে।
অলীক কাহিনী গল্প গাথাতে কোনো সত্যতা নেই
প্রমাণ অভাবে আজগুবি সবই এ গল্পটার কথাতেই।
বেহুলার কোনো দোষ ছিলো নাকো তবু সে বিধবা হয়
লখিন্দরের দোষ ছিলো নাকো তবু তাকে সাপে কেটে যায়।
চাঁদ বেনে ছিলো শিবের পূজারী মনসা তাকেই চায়
সে পুজো করলে মনসার পুজো চলবে বিশ্বময়।
রাজি নয় চাঁদ তাই কোপে পড়ে সর্পের দেবী মনসার
সাত ডিঙা ডোবে পুত্রকে সাপে কাটে বাসর ঘরেই মারা যায়।
ঘুমের ঘোরে বাসর ঘরে কালনাগিনী সাপ ঢোকে
ষড়যন্ত্রের শিকার হিসেবে লখিন্দর কে কাটে।
বেহুলার ছোড়া যাঁতি লেগে সাপের পুচ্ছ দেশটা কাটে
প্রমাণ আঁচলে বেঁধে সে বেহুলা গাঙুরের জলে ভাসে।
সব বাধা ঠেলে মৃত স্বামী লয়ে স্বর্গে বেহুলা যাবে
বিনাদোষে কাটে কালনাগিনী স্বামীর জীবন ফেরাতে হবে।
দেবতারা সব খুব আমোদপ্রিয় নাচ গানে মেতে থাকে
বেহুলাকে বলে নাচো আগে তুমি সন্তুষ্ট হলে বর পাবে।
নাচ দেখে সন্তুষ্ট দেবতা মনসাই বেঁকে বসে
চাঁদ বেনে কেই পুজো দিতে হবে মনসাকে ভালোবেসে।
জলে জঙ্গলে ভরা এ বঙ্গ সাপ খোপ অগুনিত
তাদের ঠেকাতে চারণ কবিরা গল্প বানায় ইচ্ছামত।
ডিঙি বেয়ে যদি স্বর্গে যাওয়া যায় সকলেই সেথা যাবে
প্রমাণ অভাবে চারণ কবির গল্পের কি যে হবে।
ভয় ভক্তি ও পুজো প্রচলন এক ঢিলে দুই পাখি
মানুষের পুজো পাওয়াটা ওদের খুব দরকার নাকি?