Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হতাশের আক্ষেপ || Hemchandra Bandyopadhyay

হতাশের আক্ষেপ || Hemchandra Bandyopadhyay

( ১ )
আবার গগনে কেন সুধাংশু উদয় রে!
কাঁদাইতে অভারারে, কেন হেন বারে বারে,
গগন মাঝারে শশী আসি দেখা দেয় রে।
তারে যে পাবার নয়, তবু কেন মনে হয়,
জ্বলিল যে শোকানল, কেমনে নিবাই রে।
আবার গগনে কেন সুধাংশু উদয় রে!

( ২ )
অই শশী অইখানে, এই স্থানে দুই জনে,
কত আশা মনে মনে কত দিন করেছি!
কত বার প্রমদার মুখচন্দ্র হেরেছি!
পরে সে হইল কার, এখনি কি দশা তার,
আমারি কি দশা এবে কি আশ্বাসে রয়েছি!

( ৩ )
কৌমার যখন তার, বলিত সে বারম্বার,
সে আমার আমি তার অন্য কারো হবো না।
অরে দুষ্ট দেশাচার, কি করিলি অবলার,
কার ধন কারে দিলি, আমার সে হলো না!

( ৪ )
লোক-সজ্জা মান ভয়ে, মা বাপ নিদয় হয়ে,
আমার হৃদয়-নিধি অন্য কারে সঁপিল,
অভাগার যত আশা জন্ম-শোধ ঘুচিল।

( ৫ )
হারাইনু প্রমদায়, তৃষিত চাতক প্রায়,
ধাইতে অমৃত আশে বুকে বজ্র বাজিল ; —
সুধাপান অভিলাষ অভিলাষি থাকিল।
চিন্তা হলো প্রাণাধার, প্রাণতুল্য প্রতিমার
প্রতিবিম্ব চিত্তপটে চিরাঙ্কিত রহিল,
হায়, কি বিচ্ছেদ-বাণ হৃদয়েতে বিঁধিল!

( ৬ )
হায় সরমের কথা, আমার স্নেহের লতা,
পতিভাবে অন্য জনে প্রাণনাথ বলিল ;
মরমের ব্যথা মোর মরমেই রহিল।

( ৭ )
তদবধি ধরাসনে, এই স্থানে শূন্যমনে
থাকি পড়ে, ভাবি সেই হৃদয়ের ভাবনা ;
কি যে ভাবি দিবানিশি তাও কিছু জানি না।
সেই ধ্যান সেই জ্ঞান, সেই মান অপমান—
অরে বিধি, তারে কি রে জন্মান্তরে পাব না ?

( ৮ )
এ যন্ত্রণা ছিল ভালো, কেন পুনঃ দেখা হলো,
দেখে বুক বিদারিল, কেন তারে দেখিলাম।
ভাবিতাম আমি দুখে, প্রয়সী থাকিত সুখে,
সে ভ্রম ঘুচিল, হায়, কেন চখো দেখিলাম!

( ৯ )
এই রূপে চন্দ্রোদয়, গগন তারকাময়,
নীরব মলিনমুখী অই তরুতলে রে ;
এক দৃষ্টে মুখপানে, চেয়ে দেখে চন্দ্রাননে,
অবিরল বারিধারা নয়নেতে ঝরে রে ;
কেন সে দিনের কথা পুনঃ মনে পড়ে রে ?

( ১০ )
সে দেখে আমার পানে, আমি দেখি তার পানে,
চিতহারা দুই জনে বাক্য নাহি সরে রে ;
কতক্ষণে অকস্মাৎ, “বিধবা হয়েছি নাথ”
বলে প্রিয়তমা ভূমে লুটাইয়ে পড়ে রে।

( ১১ )
বদন চুম্বন করে, রাখিলাম ক্রোড়ে ধরে,
শুনিলাম মৃদু স্বরে ধীরে ধীরে বলে রে—
“ছিলাম তোমারি আমি, তুমিই আমার স্বামী,
ফিরে জন্মে, প্রাণনাথ পাই যেন তোমারে।”—
কেন শশী পুনরায় গগনে উঠিল রে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *