রাজা তো তিনিই হন যিনি করেন অসহায়কে রক্ষণ!
আঁধার আবহ থেকে সবাইকে যিনি করেন আলোতে উত্তরণ,
কর্মে তথা জ্ঞানে যিনি করেছিলেন সমাজের নবজাগরণ;
তিনিই তো প্রণম্য সমাজ সংস্কারক আমাদের রাজা রামমোহন।
হুগলী জেলার রাধানগরে বৈষ্ণব পিতা রামকান্তের ঘরে-
জন্মেছিলেন আলোর স্ফুলিঙ্গ হয়ে জ্ঞানের পাহাড় অন্তরে,
অজানাকে জানার মোহে গৃহত্যাগী হয়ে দূরন্ত কৈশোরে;
ফিরেছিলেন বিবিধ ভাষার বৈচিত্র্যের অন্তঃসারটুকু সংগ্রহ করে।
‘ঈশ্বর একামেবাদ্বিতীয়ম্’-জ্ঞানে সর্বধর্মসমন্বয়ের দিশায়-
অধীত বেদান্ত,উপনিষদ,বাইবেল ও কোরাণের একাত্মতায়-
‘আত্মীয়সভা’র প্রতিষ্ঠা করে ব্রাক্ষ্মসমাজের অববাহিকায়;
আঘাত করেছিলেন তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের গোড়ায়।
কৌলিন্য প্রথার কালিমালিপ্ত সেই সেদিনের অন্ধকার সংসারে,
অকালবৈধব্য প্রাপ্তা সুকুমারীদের সহমরণ যাত্রা রুদ্ধ করে,
বিদ্রোহের আগুন জ্বলেছিল
‘সম্বাদ কৌমুদী’র অভ্যন্তরে;
নারীর ত্রাতা হয়ে গর্জে উঠেছিলেন একা ঘরে-বাইরে।
শত আচার-বিচারের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল সেদিনের অসহায়া নারী,
সতীদাহ প্রথার নৃশংসতায় অকালে ঝরেছে কত শত কিশোরী,
হে রাজা!যদিবা আপনার সমাজ পুনর্গঠনের সব কীর্তি ভুলতেও পারি,
তবু ভুলি কি করে রাজাকে যিনি সর্বজয়াদের উত্তরণের কাণ্ডারী।
ধর্মের নামে সেদিনের সব ভণ্ডামি আর নিপীড়ন-
কুশিক্ষার কক্ষপথ থেকে এই জাতির ঘটাতে মানসিক পরিণমন,
দু’শো একান্ন বছর আগেই যে মহাপুরুষ করেছিলেন জন্মগ্রহণ;
অবিনশ্বর কীর্তির আধার তিনিই পরমপূজ্য রাজা রামমোহন।।