Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সে এক পরবাসে || Shamsur Rahman

সে এক পরবাসে || Shamsur Rahman

যা কিছু আমার প্রিয় সব ছেড়ে ছুড়ে পরবাসে
এসেছি হঠাৎ, বড় ফাঁকা লাগে, বড় একা-একা।
কারো বসে-থাকা, চকচকে চোখ তাকানো এবং
নিঝুম আনত মুখ, নতজানু কেউ; সন্ধ্যারাতে
মায়ের জরিয়ে ধরা, সুরা
পড়ে ফুঁক দেয়া এই আমার সত্তায়,
বেদনার ছায়া মুখে কনিষ্ঠ কন্যার আস্তে সুস্থে
সুটকেশ নিপুণ গোছানো, উদাসীন কারো অব্যক্ত বচন,
এসব সে কবে ঘটেছিল মনে হয়।

দুপুরে বন্ধুর দেয়া স্যান্ডুইচ, কোকাকোলা; সাত তাড়াতাড়ি
হেঁটে যাওয়া টিউব ষ্টেশনে, পড়ি বিজ্ঞাপন, পাতালে
দেয়ালে
ইয়েটস-এর পংক্তিমালা, চমকানো। কখন পৌঁছুবো
পিকাডেলি সার্কাসে? নেমেছে ঝুপ সন্ধ্যা, ফুটপাতে
হেঁটে যেতে যেতে দেখি এ কি এখানেও
আধখানা চাঁদ, আকাশের কানে দুল।
কত জনপদ আর সমুদ্র, পর্বত
ডিঙিয়ে চাউনি তার, চুম্বনের ঘ্রাণ,
হাতের ব্যাকুল ছাপ ছুঁয়ে যায় বার বার। ফিরে
আবার পাবো তো তাকে যেমনটি চাই? যদি ফেরা
না হয় কখনো আর? মৃত কবিসংঘ দেখে রাতে
আটাশে এডিংটন ড্রাইভে উদ্দীপ্ত ফিরে আসা।

মনে পড়ে দূরে ফেলে-আসা গলি, মিনি
সুপার মার্কেট অতি সাধারণ, বাসার কাছেই
খুর্বুটে দোকানদার, যার টকটকে লাল দু’টো
চোখ সিগন্যাল বাতি, হাসি আন্তরিক; প্রেমে-পড়া ঘুর ঘুর
তরুণ কুকুর মহল্লার, বাতিজলা রাতের কলোনী আর
পথিকের আসা-যাওয়া, যুগল কবর,
টিএসসি সড়ক দ্বীপ, মুখর কবিতা পরিষদ।
ছায়াচ্ছন্ন সিঁড়ি, টুকরো কথা, হাসি মনে পড়ে, মনে পড়ে।

শামসুর রাহমান সঙ্গেই আছেন সর্বক্ষন; চুপচাপ
প্রায়শঃই, মাঝে-মধ্যে গল্প, কখনো মাতেন তর্কে, গানে,
থিয়েটারে সিনেমায় যান,
বৃটিশ মিউজিয়ামে পড়েন ঈষৎ ঝুঁকে ক্ষীণায়ু কীটস-এর
উজ্জ্বল চিরায়ু পাণ্ডুলিপি,
হেঁটে যান মিসরীয় যুগে, অতীতের সামগ্রীতে
বেজে ওঠে শব্দহীন কলবর, শনেন কাব্যিক
অনুভবে।
ছিঁড়ে খান খান করি অমোঘ স্মৃতির তন্তুজাল।

তবু এক হাহাকার তাকে করে ম্রিয়মাণ, বুকে
গহন তলানি জুড়ে কবিতার কলকলানি কেবল,
অথচ নিষ্ঠুর হিমে জমে যায় শব্দের স্পন্দন।
দেখি তার অসহায়তার ছায়া দ্রুত আমাকেও
করে গ্রাস, সম্ভাবনাময়
আত্মহত্যা কম্বল সরিয়ে দেখে নেয়
চকিতে আমার মুখ, ভীত
ভীষণ সিঁটিয়ে থাকি বিছানায় তার ছায়াতলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress