সেই বিরাট খামারটিতে কোনো বৃষ্টি হয় না
আমার কপালে ঘাম দিয়ে গাছগুলিকে
তৃষ্ণা মেটাতে হয়
সেখানে যে কফি ফসে আর চেরীগাছে
যে টুকটুকে লাল রঙের বাহার ধরে
তা আমারই ফোঁটা ফোঁটা রক্ত
যা জমে কঠিন হয়েছে।
কফিগুলোকে ভাজা হবে, রোদে শুকুতে হবে
তারপর গুঁড়ো করতে হবে
যতক্ষণ না তাদের গায়ের রঙ হবে
আফ্রিকার কুলির জামার রক্তে ঘোর কৃষ্ণবর্ণ
যে পাখিরা গান গায়, তাদের জিজ্ঞাসা করো,
যে ঝরনারা নিশ্চিন্ত মনে এদিক ওদিক
ছুটোছুটি করছে তাদের
এই মহাদেশের মধ্যকার মানচিত্র থেকে
যে বাতাস মর্মরিত হচ্ছে, তাদের—
কে ভোর না হতেই ওঠে ? কে তখন থেকে খেটে মরে ?
কে লাঙল কাঁধে দীর্ঘ রাস্তা কুঁজো হয়ে হাঁটে,
আর কেই বা শস্যের বোঝা বইতে বইতে
ক্লান্ত হয় ?
কে বীজ বপন করে আর তার বিনিময়ে
যা পায় তা হল ঘৃণা, বাসি রুটি,
পচা মাংসের টুকরো, শতচ্ছিন্ন নোংরা পোশাক
কয়েকটা নয়া পয়সা ?
আর এর পরেও কাকে পুরস্কৃত করা হয়
চাবুক আর বুটের ঠোক্কোর দিয়ে
কে সেই মানুষ ?
কে ওপরওয়ালাকে গাড়ি যন্ত্রপাতি,
মেয়েমানুষ কেনার টাকা
আর মোটরের নিচে চাপা পড়ার জন্য
নিগ্রোদের মুণ্ডুগুলি যোগান দেয় ?
কে সাদা আদমিকে বড়লোক করে তোলে
তাকে রাতারাতি ফাঁপিয়ে তোলে,
পকেটে টাকা যোগায় ?
—কে সেই মানুষ ?
তাদের জিজ্ঞাসা করো! যে পাখিরা গান গায়,
যে ঝর্ণারা নিশ্চিন্ত মনে এদিক ওদিক
ছুটোছুটি করছে
যে বাতাস এই মহাদেশের মধ্যকার
মানচিত্র থেকে মর্মরিত হয়,
তারা সকলেই উত্তর দেবে : —
—ওই কালো রঙের মানুষটা ;
যে দিনরাত গাধার খাটুনি খাটছে।
আহা! আমাকে অন্তত ওই তালগাছটার
চূড়োয় উঠতে দাও
সেখানে বসে আমি মদ খাবো
তালগাছ থেকে যে মদ চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ে ;
আর মাতলামোর মধ্যে আমি নিশ্চয়ই,
ভুলে যাব, ভুলে যাব, ভুলে যাব—
যে আমি একজন কালো রঙের মানুষ,
আমার জন্যেই এই সব।
(আন্তোনিও জাসিন্টোর মূল রচনা থেকে অনুবাদ।)