Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সেই অজানার খোঁজে || Ashutosh Mukhopadhyay » Page 15

সেই অজানার খোঁজে || Ashutosh Mukhopadhyay

মনের তলায় আর কোনো রকম উৎকণ্ঠা বা উদ্‌বেগ ছিল না। কেবল এমন এক জীবন-নাটকের শেষ অঙ্ক দেখার জন্য ভিতরটা উন্মুখ হয়ে ছিল।

বক্রেশ্বর থেকে দুদিন আগেই ফিরেছি আমরা। যদিও অবধূত জানতেন তপু নির্দিষ্ট দিনের আগে ছাড়া পাবার কোনো তদবিরই করবে না। তাঁর দিক থেকে আরো দুটো দিন থেকে যাবার সদয় আমন্ত্রণ আসবেই জানতাম। বলেছেন, আরো দুটো দিন থেকে শেষ দেখে যান, তপুটার জন্য আপনাকেও কটা দিন কাছে পেলাম।

কাছে পাওয়ার আনন্দ তাঁর বেশি কি আমার সে-কথা আর তুললাম না। আমি সানন্দে রাজি।

সেই দিন এলো। আমি আর অবধূত সামনের বারান্দায় বসে। কল্যাণী মাঝে মাঝে এসে দাড়াচ্ছেন আবার কাজে চলে যাচ্ছেন। পেটো কার্তিক ঘন ঘন ঘর বার করছে, আর চাপা উত্তেজনায় এক-একবার আমাদের দিকে থমকে থমকে তাকাচ্ছে! সক্কালে এখানে এসেই বলেছে, দোকানে বলে এসেছি আমি আজ যাচ্ছি না—

অবধূত জিজ্ঞেস করেছেন, কেন আজ কি?

—আজ আপনার জামার পকেটে ওই রিভলবার কেন?

—আমার পকেটে রিভলবার বলে তুই দোকান কামাই করবি?

—হুঃ, আপনার পকেটে রিভলবার জানলে তামাম কোন্নগরের লোক দোকান-পাট বন্ধ করে এখানে ছুটে আসবে।

অবধূত বলে উঠেছেন, ও বাবা অত দরকার নেই, আমাকে রক্ষা করার জন্য তুই একলা থাকলেই যথেষ্ট।

আমাদের হাব-ভাব দেখেই হয়তো কার্তিকের মনে এখন খুব একটা দুর্ভাবনা নেই।…কিন্তু পুলিশে ধরিয়ে দেবার ফলে যে আত্মীয় বলে গেছে জেল থেকে বেঁচে বেরুতে পারলে তার প্রথম কাজ হবে বাবাকে খুন করা—সেই লোক আজ জেল ফেরত এখানে আসছে—কার্তিক উত্তেজনা চেপে রাখে কি করে? তাছাড়া বাবার কাওর কি কোনো কিছু বোঝার উপায় আছে—এইদিনে তাঁর পকেটের ভারী জিনিসটা যে রিভলবার সে কি ও জানে না!

পৌনে দশটায় একটা ট্যাক্সি এসে দাড়ালো। নিজের অগোচরে আমি উঠে দাড়িয়েছি। পেটো কার্তিক গেটের সামনে। গাড়ি থামার আওয়াজ পেয়ে কল্যাণীও তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলেন। অবধূত চেয়ারে গা ছেড়ে বসে আছেন।

প্রথমে নাতনীর হাত ধরে বকুল নামল। তারপর রিনা। শেষে তপন— তপু।

আমি দেখছি। দোহারা লম্বা মিষ্টি চেহারা, চোখে মুখে বুদ্ধির ছাপ। দুর থেকে তার দৃষ্টি চেয়ারে বসা জেঠুর দিকে।

পেটো কার্তিক তাড়াতাড়ি বাঁশের গেটটা খুলে দিল।

ওরা এলো। একে একে দাওয়ায় উঠল। অবধূত এইবার উঠে দাড়ালেন। নাতনীর হাত ছেড়ে প্রথমে বকুল অবধূতের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করল! তারপর রিনা। তপু পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছে।

পকেট থেকে রিভলবারটা বার করে অবধূত তার দিকে এগিয়ে দিলেন। গম্ভীর।—নে, লোড করা আছে।

তপু থমকে দাড়ালো। অপলক চেয়ে রইল খানিক। অবধূতও। একটা উদ্গগত অনুভূতি দমন করতে না পেরে তপু তাঁর পায়ের ওপর আছড়ে পড়ল। দু পা জড়িয়ে ধরে কপাল ঘষতে লাগল।

অবধূত মিটি মিটি হাসছেন। —দিনেরবেলায় সকলের চোখের ওপর বুক ফুলিয়ে চলে আসতে তাহলে ভালোই লাগছে বলছিস?

…এমন এক দৃশ্য দেখার ভাগ্য কি জীবনে বেশি আসে? বকুলের চোখে জল। রিনার চোখে জল। পেটো কার্তিকের চোখের কোণও চিকচিক করছে। কেবল কল্যাণী অল্প অল্প হাসছেন আর তপুর দিকে চেয়ে আছেন। আর অবধূত হাসছেন আর তপুকে দেখছেন।

তপু তখনো অবধূতের পায়ে কপাল ঘষছে।

আরো একটা বছর ঘুরেছে। তার মধ্যে প্রথম দুমাসে অবধূতের সঙ্গে আমার দেখা সাক্ষাৎ হয় নি, ফোনে দু চারবার কথা হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার জন্য পেটো কার্তিক একবার এসেছিল। কলকাতায় কি কাজ পড়েছিল সময় করে আমার সঙ্গে একবার দেখা করে গেছল। তখন খুবই বিমর্ষ দেখেছি ওকে। বলেছে, বাবা আর মাতাজী কিছু একটা মতলবে আছেন সার—আমি কিছু বুঝতে পারছি না, কোন্নগরের বাড়িতে মাঝে মাঝে কোথাকার সাধুরা আসছে — কোনো সঙ্ঘ-টঙ্ঘের হবে কিন্তু জিজ্ঞেস করলেই বাবার ধমক, তোর সবই জানতে হবে তার কি মানে। তারপর কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ মাতাজী তাঁর ব্যাঙ্ক থেকে আমার আর সুষমার নামে চল্লিশ হাজার টাকা ট্রান্সফার করে বসলেন, আর হারুর নামে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে দিলেন—এ-সব কি ব্যাপার বলুন তো, আমার দারুণ অস্বস্তি হচ্ছে—

বলেছি, সুখবর তো, অস্বস্তির কি আছে। তাছাড়া টাকা থাকলে সময়ে বিলি ব্যবস্থা করাই তো উচিত।

কিন্তু এ-কথায় পেটো কার্তিকের দুশ্চিন্তা লাঘব হয় নি।

…আমারই কি হয়েছে?

গেলবারের কালীপুজোর রাতে কথায় কথায় ভদ্রলোক বলেছিলেন, তাঁর একটি কর্মের গাছে কোন্ ফল ধরে—বিষফল না অমৃত, তাই দেখার প্রতীক্ষাতে বসে আছেন। যে-ভাবে বলেছিলেন মনে হয়েছে তারপরেই তাঁর কাজ শেষ-ছুটি। অমৃতফলই যে ধরেছে, এক দুখিনী মা তার ছেলে পেয়েছে, জীবন-যুদ্ধে জর্জরিত এক মেয়ে নির্ভয় হবার মতো স্বামী পেয়েছে।…তারপর থেকেই আমার মনের তলায় একটা অনাগত শংকা থিতিয়ে ছিল। যাঁকে অনেক ভাগ্যে হঠাৎ পেয়েছি তাঁকে হঠাৎই হারানোর শংকা।

এবারে অবধূতের বাড়িতে আর কালীপুজো হয় নি। কর্ত্রী নেই, কর্তা নেই, কে করবে কালীপুজো? বছরের পরের ছমাস ধরেই তাঁদের বাড়ি তালাবন্ধ।…তাঁরা নিরুদ্দেশের পথে যাত্রী হয়েছেন এ-রকম চিন্তা অবশ্য তখন ছিল না। আমার বা পেটো কার্তিক কারোরই না। কারণ তার বাবা-মা দুজনেই দেরাদুন ছুটেছিলেন তপুর মেয়েটার মারাত্মক অসুখের খবর পেয়ে। বকুল আর রিনা কাকুতি-মিনতি করে ওঁদের লিখেছিলেন পত্র পাঠ চলে আসতে—তাঁরা না এলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। তাঁদের দুজনকেই ছুটতে হয়েছে। মাস তিনেক পর্যন্ত তিনখানা করে চিঠি লিখে কার্তিক হয়তো একখানা চিঠির জবাব পেয়েছে—তপুর মেয়ের খবর ভালো নয়, এখন নড়তে পারছেন না, কবে পারবেন তা-ও জানেন না। পেটো কার্তিক এসে অভিমান ভরে আমাকে খবরটা জানিয়ে গেছে। বলেছে, আত্মীয় এমনই জিনিস সার, যে-মাতাজী কোথাও নড়েন না তিনিও আত্মীয়ের টানে তিনমাস ধরে ঘর-বাড়ি ছেড়ে বসে আছেন।…না, তপুর মেয়ের কি অসুখ কি বৃত্তান্ত বাবা সে সম্পর্কে কিছুই লেখেন নি।

…আরো তিনমাস বাদে পেটো কার্তিক একদিন আমার কাছে এসে হাউমাউ করে কেঁদেছে। বাবার কাছে চিঠি লিখে-লিখে জবাব না পেয়ে ও পুরুষোত্তম ত্রিপাঠীকে লিখেছিল। তার জবাব এসেছে। বাবা আর মাতাজী তিনমাস যাবৎ দেরাদুন বা হরিদ্বারে নেই। তার ধারণা ছিল তপুবাবুর মেয়েটি মারা যাবার পরে তাঁরা কোন্নগরেই ফিরে গেছেন।

শুনে একটু চমকে উঠেছিলাম। কারণ কি একটা শোনা কথা যেন কানে বাজছে।…হ্যাঁ কংকালমালী মহাভৈরবের ডেরার দাওয়ায় বসে অবধূতই বলেছিলেন। তপুর প্রসঙ্গে অমন সাংঘাতিক সিদ্ধান্ত নেবার আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ওর কপাল আর হাত দেখার কথা।…মনে হয়েছিল, আগের থেকেও ঢের বেশি পরিষ্কার। কিছু সময়ের জন্য ঝামেলা তারপর সব পরিষ্কার— সুস্থ জীবন, দীর্ঘ আয়ু…কেবল একটু শোকের চিহ্ন আছে… কোনো নিকটজনের কিছু হতে পারে। হ্যাঁ এ-কথাই অবধূত বলেছেন, তখনকার উত্তেজনা আর দুশ্চিন্তায় সেই নিকটজন কে হতে পারে তা নিয়ে অবধূত মাথা ঘামান নি।

প্রীতিভাজনেষু, এখানে একটিই বাগ,দেবীর পুজো অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। জনাকতক নবীন-প্রবীণ সাধু আর জনাকয়েক বাঙালী অবাঙালীর আড়ম্বরশূন্য ছোট ব্যাপার দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। বড় ভালো লাগছিল। হঠাৎ এই দিনে আপনাকেই কেন মনে পড়ল জানি না। আমার সাময়িক আবাস অর্থাৎ চালা ঘরে ফিরে এসে লিখতে বসলাম। এখনো এখানে বেশ শীত, আমার রসনা ভালো জিনিস পেলে এখনো সিক্ত হয় জেনেই বোধহয় কল্যাণী সুগন্ধ আতপ, মুগের ডাল আর নানাবিধ আনাজ সেদ্ধ সহযোগে কাঁচা উনুনে কিছু চাপিয়েছে। লিখতে বসে বেশ সুঘ্রাণ নাকে আসছে। হঠাৎ একটু টিপ্পনীর সুর শুনলাম, এখনো আবার পিছু টান কেন… কাকে?

কলম থামিয়ে তাকালাম। আমি তো মশাই লেখক বা কবি-টবি নই, তার ওপর কল্যাণীর এখন আমাকে মনের ঘরে তাড়িয়ে নিয়ে যাবার সংকল্প—তাই আপনাদের সংসার সর্বস্ব মানুষের মতো ভালো লাগাটা আমার উচিত নয়। কিন্তু কি করব, কল্যাণীর স্নান সারা, পিঠে খোলা চুল ছড়ানো স্নিগ্ধ মূর্তিটি বড় ভালো লাগল—হাতে আবার খিচুড়ি নাড়ার খুন্তি গোছের একটা কি। শিশির-ছোঁয়া তাজা ফুঁই ফুলের মতো লাগছিল ওকে। আপনি হলে আরো ভালো উপমা দিতে পারতেন। বললাম, কাকে লিখছি!

শুনে আক্ষেপসূচক মিষ্টি বাক্য—আ-হা, ভদ্রলোক হয়তো খুব ভাবছেন আমাদের জন্য লেখো।

বুঝুন, পিছু-টান নাকি কেবল আমার।

ওপরের ঠিকানা দেখে হয়তো অবাক হচ্ছেন। কিন্তু এই রাতের পর থেকে এ-টুকুর হদিস দেবার সুযোগও হয়তো আর থাকবে না। কারণ কাল সকাল থেকেই আমরা গর-ঠিকানার পথ-যাত্রী। কল্যাণীর বিবেচনায় যে-পথের শেষ মনের ঘরে। লোকে বলে কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম। আমার হয়েছে কর্ত্রীর ইচ্ছেয় কর্ম।

কয়েক জায়গায় ঘুরে মাস দেড়েক হলো এখানে এসেছি। কল্যাণীর পিছু টান নেই, কিন্তু শীতের ভয়ে আমার শরীরের জন্য চিন্তা আছে। হঠাৎ বেশি শীত এখন আর তেমন বরদাস্ত করতে পারি না। তাই এখানে এসে সাময়িক বিরতি। কল্যাণীর দৃঢ় বিশ্বাস, আস্তে আস্তে সইয়ে নিতে পারলে আমার এই দেহটাকেই সে আবার পঞ্চ-তপ অথবা তাপ সহনযোগ্য করে তুলতে পারবে।

তপুর অমন ফুটফুটে সুন্দর মেয়েটা বাঁচল না। লিউকিমিয়া হয়েছিল। বকুল আর রিনা ভেবেছিল আমরা গিয়ে অসাধ্য-সাধন করতে পারব। কিন্তু ঘটনার সাজ তো আমরা সাজাই না আর যা করার করেও অন্য কেউ—আমাদের ক্ষমতা কতটুকু বলুন তো? তবু প্রাণপণ চেষ্টা আমি করেছিলাম, কল্যাণীর চেষ্টার রীতি জানি না—কিন্তু এ-টুকু জানি চেষ্টা সে-ও করেছিল। কিন্তু যা হবার হয়েই গেল। মাঝখান থেকে যে-টুকু জানি বলে গর্ব সেটাই বেদনার কারণ হয়ে উঠল। আপনার মনে আছে, তপুর কপাল আর হাত দেখে দেখে আমার মনে হয়েছিল, শুধু কারো বিয়োগজনিত একটা শোকের চিহ্ন ছাড়া ভবিষ্যত জীবনে ওর আর দুর্দৈব কিছু নেই। তখন ভাবি নি, কিন্তু মুনিয়ার অসুখের খবর পেয়ে এখানে এসে স্পষ্ট বুঝলাম তপুর কপালে আর হাতে কোন্ শোকের চিহ্ন। তখন কেবলই মনে হলো, আমাদের আগে থেকে এই জানার শক্তিটা অভিশাপ ছাড়া আর কিছু নয়। যে সাজায় যে ঘটায় আগে ভাগে এই জানাটা যে তার অভিপ্রেত নয়, এ নিজের বুকের তলার যন্ত্রণা দিয়ে যেমন বুঝেছি তেমন আর কখনো বুঝি নি। যাক, মন খারাপ করবেন না, আমার বিদ্যার এটুকুই সান্ত্বনা যে আমি এ-ও জানি, আবারও ওদের ছেলেমেয়ে হবে—ওরা সুখে থাকবে।

…আচ্ছা মনের ঘরটা কি ব্যাপার বলুন তো মশাই? কোন্নগরে থাকতেও কল্যাণী প্রায়ই তাগিদ দিত, এবারে মনের ঘরের দিকে পা বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত হও, আর বেশিদিন না কিন্তু। আমি ভেবে পাই নি সেটা কোন্ দিকে কোন্ পথে। এই পৃথিবী তার আকাশ বাতাস ফুল ফল জল মাটি—আমার তো খুব ভালো লাগে। এখান থেকে আরো ভালো মনের ঘর আর কোথায় পাব? কল্যাণী হাসে, বলে, ওই যে সব-সময় তোমার এক খোজ—কে ঘটায় কে সাজায় কে করে—তাঁর হদিস পেতে হলে তোমাকে সব-দিক ছেড়ে ওই মনের ঘরের দিকে পা বাড়াতে হবে। ওই মনের ঘরই শক্তির ঘর। সব-কিছুর কলকাঠি এখান থেকেই নড়ে। হয়তো হবে। আমি জানি না বুঝি না এমন ব্যাপারের কি লেখাজোখা আছে? ভাবি, আমার মহাভৈরব গুরু কংকালমালী কি সেই ঘরের দিকেই পা বাড়িয়েছেন? ভৈরবী মা মহামায়া কি সেই ঘরের দিকেই পা বাড়িয়েছেন? হবে বা। শক্তির টান শক্তি বোঝে। ভৈরব-গুরুর মধ্যে এক-রকমের দুর্বোধ্য শক্তি। ভৈরবী মায়ের মধ্যেও দেখেছি। কল্যাণীর মধ্যেও যে দেখেছি আমার ঈর্ষাকাতর সত্তা অনেক-অনেক দিন পর্যন্ত তা স্বীকার করতে চায়নি। আর অস্বীকার করি না। ওর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছি। তাইতেই ভারী শান্তি। ও যদি আরো বড় শক্তির হদিস আমাকে দিতে পারে, দোসর হয়ে সেই মনের ঘরের দিকে আমাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, আমার পা বাড়াতে আপত্তি কি? আরো লেখা কল্যাণীর ভাষায় পিছু-টানের মতো হয়ে যাবে মনে হচ্ছে। এখানেই থামলাম। ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। আপনাদের—কালীকিংকর অবধুত।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
Pages ( 15 of 15 ): « পূর্ববর্তী1 ... 1314 15

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *