শুনেছ তো তোমরা কফি হাউসের আড্ডা গানটা
সবার নামগুলো মনে আছে নিশ্চয়ই তোমাদের;
সুজাতাকে তো সবাই তোমরা চিনেই গেছো
সে সময়ে সেইই ছিল সব থেকে বড়লোক
হীরে আর জহরতে আগাগোড়া মোরা ছিল তার।
এতদিন পর জানতে ইচ্ছে করছে না তোমাদের,
কেমন আছে সুজাতা? কি করছে সুজাতা!!
জানতে চাও কি তোমরা সুজাতার খবর
তাহলে শোনো বলছি—
পঞ্চাশ বছরের বিবাহিত জীবনে সুখেই ছিল সে
স্বামী পুত্র কন্যারা সবাই খুবই ভালো ছিল তার
মায়ের কথা অমান্য করার সাহস ছিল না কারো।
প্রতিষ্ঠিত হলো তারা, বিদেশে করে বাস
পারিবারিক সমৃদ্ধি বজায় ছিল তার,
স্বামীর মৃত্যু হল যখন কেউ ছিলনা সাথে যে তার
পুত্ররা তখন ফ্লাইটে করে পাড়ি দিয়েছে দূরদেশ
নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে পিতাকেও গেলো ভুলে।
মনের দুঃখে সুজাতার তখন চোখে বারি ঝরে
কাঁদতে কাঁদতে সুজাতার তখন হাল হয়েছে বেহাল
ধীরে ধীরে শীর্ণকায়া হয়ে গেল যে সে।
সম্পদশালী হয়েও, অভুক্ত থাকতো শেষে
ধীরে ধীরে জীবনশক্তি কমে যে যেতে থাকে
অট্টালিকায় থাকতো একা, যক্ষের ধন আগলে
কিন্তু সেটাও হলো না সহ্য ভগবানের চোখে।
শয্যাশায়ী হয়েও তাই চোখের জলে ভাসে
একাকী শয্যা ভিজে থাকে তারই চোখের জলে
ছেলেমেয়েরা ভালই আছে বিদেশে চলে গিয়ে
শেষ বয়সে পায়না দেখতে ছেলেমেয়েগুলোকে
একাকী জীবন হলো শেষ, প্রতিক্ষার প্রহর গুনে।।