সুখটানে মত্ত
ঘুমের ঘোরে পাশ ফিরে হাতটা রাখতে গিয়েই ছ্যাঁকা খেয়ে হাতটা গুটিয়ে উঠে বসলাম।পাশে দুই আঙ্গুলের ফাঁকে সিগারেট ধরে মহাশয় মোবাইল পর্দায় খবরে চোখ বুলাতে ব্যস্ত। বিপদ ঘটতে পারে খেয়াল নেই।
এই সিগারেটের শুরু কোথায় ও কীভাবে?তুমি জানো?
‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ এই কথাটি জেনেও তোমরা হামেশাই ধূমপান করে যাও।
আমার দিকে ফিরে হেসে মোবাইলটা এগিয়ে দিয়ে বলল দেখ,শুধু মানুষ নয় অন্যান্য প্রাণীরাও সিগারেট খায়। খবরে দেখছি সিগারেটে সুখটান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়ছে সমুদ্রের লাল দশ-পা।
কথায় আছে পাগলে কি না বলে ছাগলে কি না খায়। যদিওবা এই প্রাণীটি ছাগল নয় বরং একটি জলজ জীব কিন্তু বিষয়টা এক।
বলতে পারো সিগারেটের আবিষ্কারক কে?
এটা বলা বেশ কঠিন। কারণ সিগারেট এসেছে
তামাকপাতা থেকে।এই তামাক পাতা সর্বপ্রথম দেখেন বিখ্যাত নাবিক এবং আবিষ্কারক ক্রিস্টোফার কলম্বাস।আদিবাসিরা উপহার স্বরূপ
তাঁকে কাঠের তৈরি যুদ্ধাস্ত্র বন্যফলমূল ও তামাক
পাতা দিয়েছিলেন। তিনি তামাক পাতা কেন ফেলে
দিয়েছিলেন জানা নেই।
তবে জনসন্মুখে সর্বপ্রথম ধূমপান করেন ইউরোপিয়ান স্পেনের নাগরিক নাম
এরপর ওয়াশিংটন ডিউক প্রথম সিগারেট রোল
করে বিক্রি করা শুরু করেন।
এরপর জেমস বনস্যক যে সিগারেট কোম্পানি শুরু করেন সেটাই ছিল আমেরিকান টোবাকো
কোম্পানি।
বেশ আর বলতে হবে না।সকালেই সিগারেটের
মহাকাব্য শুনে,
মোবাইলটা নিয়ে দেখি ঘটনাটি কোন সমুদ্র পাড়ের ঘটনা।একটি কাঁকড়া একেবারে মানুষের মতো দুই দাঁড়ার ফাঁকে সিগারেট ধরেছে এবং তাতে টান দিচ্ছে। আবার হালকা হালকা ধোঁয়া বের হচ্ছে সেখান থেকে। মনে হচ্ছে কোন চলচ্চিত্র দৃশ্য।
কাঁকড়াকে সমুদ্র সৈকতে গা এলিয়ে সিগারেটে টান দিতে দেখে মনে পড়ে গেল আর অবাক হয়ে
বললাম প্রেমে ব্যথা পেয়ে দেবদাস হয়ে হাতে মদের গ্লাস বা প্যাকেটের পর প্যাকেট সিগারেট শেষ হতে তো অনেক যুবককে দেখা গেছে।
সেও কি প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এই সিগারেটে সুখটান দিতে ব্যস্ত ছিল?
বিস্মিত হই ঘটনাটি কি করে ঘটলো! মনে মনে ভাবলাম।কোন ধূমপায়ী ব্যক্তির হাত থেকে জলন্ত সিগারেট নিশ্চয়ই পড়ে গিয়েছিল। কাঁকড়া টি সেটাই তুলে নিয়েছে নিজের দাঁড়ায় করে। দেখতে ভীষণ মজা লাগলেও মনে দুরকম প্রতিক্রিয়া হয়েছে আমার। একদিকে যেমন মজা হিসেবে দেখেছি অন্যদিকে ঐরকম কাণ্ডকারখানা দেখে রাগান্বিত হয়েছি।এরকম জলন্ত সিগারেট থেকে প্রাণীদের ক্ষতি হতে পারে বলে প্রতিবাদ করা উচিত মনে হয়েছে আমার।
এই সিগারেটের আগুন কতটা ক্ষতিকারক ধূমপায়ীরা জানে না।নিজেদের ভিতরও পোড়ায় এবং বাইরের জীবজগতকেও পোড়ায়। নিজেরা শুধু সুখটানে মত্ত থাকে।