Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সীমান্ত-হীরা – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay » Page 2

সীমান্ত-হীরা – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay

চাবি দিয়া সেক্রেটারিয়ট টেবিলের দেরাজ খুলিয়া কুমার বাহাদুর একখানা চিঠি বাহির করিয়া দিলেন। ছোট ছোট সুছাঁদ অক্ষরে লেখা বাঙলা চিঠি, তাহাতে লেখা আছে,

কল্যাণীয় খোকা,
দুঃখিত হয়ো না। তোমরা দিতে হাওনি, তাই আমি নিজের হাতেই নিলাম। বংশলোপ হবে বলে যে কুসংস্কার আছে, তাতে বিশ্বাস করো না। ওটা আমাদের পূর্বপুরুষদের একটা ফন্দি মাত্র, যাতে জিনিসটা হস্তান্তরিত করতে কেউ সাহস না করে। আশীর্বাদ নিও।
ইতি
তোমার কাকা
শ্রীদিগিন্দ্রনারায়ণ রায়

ব্যোমকেশ নিঃশব্দে চিঠি ফেরত দিল। কুমার বলিতে লাগিলেন, “চিঠি পড়েই ছুটলাম তোষাখানায়। লোহার সিন্দুক খুলে হিরের বাক্স বার করে দেখলাম, হীরা ঠিক আছে। দেওয়ান মশায়কে ডাকলাম, তিনি জহরতের একজন ভালো জহুরি, দেখেই বললেন, জাল হীরা। কিন্তু চেহারায় কোথাও এতটুকু তফাত নেই, একেবারে অবিকল আসল হীরার জোড়া।”

কুমার দেরাজ খুলিয়া একটি ভেলভেটের বাক্স বাহির করিলেন। ডালা খুলিতেই সুপারির মতো গোলাকার একটা পাথর আলোকসম্পাতে ঝকমক করিয়া উঠিল। কুমার বাহাদুর দুই আঙুলে সেটা তুলিয়া ব্যোমকেশের হাতে দিয়া বলিলেন, “জহুরি ছাড়া কারুর সাধ্য নেই যে বোঝে এটা ঝুটো। আসলে দুশ টাকার বেশি এর দাম নয়।”
অনেকক্ষণ ধরিয়া আমরা সেই মূল্যহীন কাচখণ্ডটাকে ঘুরাইয়া ফিরাইয়া দেখিলাম; তারপর দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়িয়া ব্যোমকেশ সেটা ফিরাইয়া দিল, বলিল, “তাহলে আমার কাজ হচ্ছে সেই আসল হীরাটা উদ্ধার করা?”
স্থিরদৃষ্টিতে তাহার দিকে চাহিয়া কুমার বলিলেন, “হঁযা। কেমন করে হীরা চুরি গেল, সে নিয়ে মাথা ঘামাবার কোনও দরকার নেই। আমি শুধু আমার হীরাটা ফেরত চাই। যেমন করে হোক, যে উপায়ে হোক, আমার ‘সীমন্ত হীরা’ আমাকে ফিরিয়ে এনে দিতে হবে। খরচের জন্যে ভাবনা করবেন না, যত টাকা লাগ, যদি বিশ হাজার টাকা দরকার হয়, তাও দিতে আমি পশ্চাৎপদ হব না জানবেন। শুদু একটি শর্ত, কোনও রকমে এ কথা যেন খবরের কাগজে না ওঠে।”
ব্যোমকেশ তাচ্ছিল্যভরে জিজ্ঞাসা করিল, “কবে নাগাদ হীরাটা পেলে আপনি খুশি হবেন?”
উত্তেজনায় কুমার বাহাদুরের মুখ উদ্দীপ্ত হইয়া উঠিল। তিনি বলিলেন, “কবে নাগাদ? তবে কি, তবে কি আপনি হীরাটা উদ্ধার করতে পারবেন বলে মনে হয়?”
ব্যোমকেশ হাসিল, বলিল, “এ অতি তুচ্ছ ব্যাপার। আমি এর চেয়ে ঢের বেশি জটিল রহস্য প্রত্যাশা করেছিলুম। যা হোক, আজ শনিবার; আগামী শনিবারের মধ্যে আপনার হীরা ফেরত পাবেন।” বলিয়া সে উঠিয়া দাঁড়াইল।

কলিকাতায় ফিরিয়া প্রথম দিনটা গোলমালে কাটিয়া গেল।
রাত্রে দুইজনে কথা হইল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “প্ল্যান অফ ক্যাম্পেন কিছু ঠিক করলে?”
ব্যোমকেশ বলিল, “না। বাড়িটা দেখে কিছু সংবাদ সংগ্রহ করা যাক, তার পর প্ল্যান স্থির করা যাবে।”
“হিরেটা কি বাড়িতেই আছে মনে হয়?”
“নিশ্চয়। যে জিনিসের মোহে খুড়ো মহাশয় শেষ বয়সে ভাইপো’র সম্পত্তি চুরি করেছেন, সে জিনিস তিনি এক দণ্ডের জন্যও কাছ ছাড়া করবেন না। আমাদের শুধু জানা দরকার, কোথায় তিনি সেটা রেখেছেন। আমার বিশ্বাস -”
“তোমার বিশ্বাস?”
“যাক, সেটা অনুমানমাত্র। দিগিন্দ্রনারায়ণ খুড়া মহাশয়ের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা না হওয়া পর্যন্ত কিছুই ঠিক করে বলা যায় না।”
আমি ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া বলিলাম, “আচ্ছা ব্যোমকেশ, এ কাজের নৈতিক দিকটা ভেবে দেখেছ?”
“কোন কাজের?”
“যে উপায় অবলম্বন করে তুমি হিরেটা উদ্ধার করতে যাচ্ছ।”
“ভেবে দেখেছি। ডাহা নিছক চুরি, ধরা পড়লে জেলে যেতে হবে। কিন্তু চুরি মাত্রেই নৈতিক অপরাধ নয়। চোরের পর বাটপাড়ি করা মহা পুণ্যকার্য।”
“তা যেন বুঝলুম, কিন্তু দেশের আইন তো সে কথা শুনবে না।”
“সে ভাবনা আমার নয়। আইনের যাঁরা রক্ষক, তাঁরা পারেন, আমাকে শাস্তি দিন।”
পরদিন দুপুর বেলা ব্যোমকেশ একাকী বাহির হইয়া গেল; যখন ফিরিল, তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। হাত মুখ ধুইয়া জলযোগ করিতে বসিলে জিজ্ঞাসা করিলাম, “কাজ কত দূর হল?”
ব্যোমকেশ অন্যমনস্কভাবে কcুরিতে কামড় দিয়া বলিল, “বিশেষ সুবিধা হল না। বুড়ো একটি হর্তেল ঘুঘু। আর তার একটি নেপালি চাকর আছে, সে বেটার চোখ দুটো ঠিক শিকারি বেড়ালের মতো। যা হোক, একটা সুরাহা হয়েছে, বুড়ো একজন সেক্রেটারি খুঁজছে, দুটো দরখাস্ত করে দিয়ে এসেছি।”
“সব কথা খুলে বল।”

চায়ে চুমুক দিয়া বাটি নামাইয়া রাখিয়া ব্যোমকেশ বলিল, “কুমার বাহাদুর যা বলেছিলেন, তা নেহাত মিথ্যে নয়, খুড়ো মহাশয় অতি পাকা লোক। বাড়িটা নানা রকম বহুমূল্য জিনিসের একটা মিউজিয়াম বললেই হয়; কর্তা একলা থাকেন বটে, কিন্তু অনুগত এবং বিশ্বাসী লোকলস্করের অভাব নেই। প্রথমত বাড়ির কম্পাউণ্ডে ঢোকাই মুস্কিল, ফটকে চারটে দারোয়ান অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে বসে আছে, কেউ ঢুকতে গেলেই হাজার রকম প্রশ্ন। পাঁচিল ডিঙিয়ে যে ঢুকবে, তারও উপায় নেই, আট হাত উুঁচু পাঁচিল, তার উপর ছুঁচলো লোহার শিক বসানো। যা হোক, কোনও রকমে দারোয়ান বাবুদের খুশি করে ফটকের ভিতর যদি ঢুকলে, বাড়ির সদর দরজায় নেপালি ভৃত্য উজরে সিং থাপা বাঘের মতো থাবা গেড়ে বসে আছেন, ভালোরকম কৈফিয়ত যদি না দিতে পার, বাড়িতে ঢোকবার আশা ঐখানেই ইতি। রাত্রির ব্যবস্থা আরও চমৎকার। দারোয়ান, চৌকিদার তো আছেই, তার উপর চারটে বিলিতি ম্যাস্টিফ কুকুর কম্পাউণ্ডের মধ্যে ছাড়া থাকে। সুতরাং নিশীথ সময়ে নিরিবিলি গিয়ে যে কার্যোদ্ধার করবে সে পথও বন্ধ।”
“তবে উপায়?
“উপায় হয়েছে। বুড়োর একজন সেক্রেটারি চাই – বিজ্ঞাপন দিযেছে। দেড় শ’টাকা মাইনে – বাড়িতেই থাকতে হবে। বিজ্ঞানশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি থাকা চাই এবং শর্টহ্যাণ্ড টাইপিং ইত্যাদি আরও অনেক রকম সদগুণের আবশ্যক। তাই দুটো দরখাস্ত করে দিয়ে এসেছি, কাল ইন্টারভিউ দিতে যেতে হবে।”
“দুটো দরখাস্ত কেন?”
“একটা তোমার একটা আমার। যদি একটা ফস্কায়, অন্যটা লেগে যাবে।”

পরদিন অর্থাৎ সোমবার সকালবেলা আটটার সময় আমরা স্যর দিগিন্দ্রনরায়ণের ভবনে সেক্রেটারি পদপ্রার্থী হইয়া উপস্থিত হইলাম। শহরের দক্ষিণে অভিজাত পল্লীতে তাঁহার বাড়ি; দারোয়ানের ভিড় ঠেলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিতেই দেখিলাম, আমাদের মতো আরও কয়েকজন চাকরি অভিলাষী হাজির আছেন। একটা ঘরের মধ্যে সকলে গিয়া বসিলাম এবং বক্রকটাক্ষে পরস্পরের মুখাবলোকন করিতে লাগিলাম। ব্যোমকেশ ও আমি যে পরস্পরকে চিনি, তাহার আভাসমাত্র দিলাম না। পূর্ব হইতে সেইরূপ স্থির করিয়া গিয়াছিলাম।

বাড়ির কর্তা ভিতরের কোনও একটা ঘরে বসিয়া একে একে উমেদারদিগকে ডাকিতে ছিলেন। মনের মধে উৎকণ্ঠা জাগিতেছিল, হয়তো আমাদের ডাক পড়িবার পূর্বেই অন্য কেহ বহাল হইয়া যাইবে। কিন্তু দেখা গেল, একে একে সকলেই ফিরিয়া আসিলেন এবং বাঙনিষ্পত্তি না করিয়া শুষ্ক মুখে প্রস্থান করিলেন। শেষপর্যন্ত বাকি রহিয়া গেলাম আমি আর ব্যোমকেশ।
বলা বাহুল্য, ব্যোমকেশ নাম ভাঁড়াইয়া দরখাস্ত করিয়াছিল; আমার নতুন নামকরণ হইয়াছিল জিতেন্দ্রনাথ এবং ব্যোমকেশের নিখিলেশ। পাছে ভুলিয়া যাই, তাই নিজের নামটা মাঝে মাঝে আবৃত্তি করিয়া লইতেছিলাম, এমন সময় ভৃত্য আসিয়া জানাইল কর্তা আমাদের দুইজনকে একসঙ্গে তলব করিয়াছেন। কিছু বিস্মিত হইলাম। ব্যাপার কি? এতক্ষণ তো একে একে ডাক পড়িতেছিল, এখন আবার একসঙ্গে কেন? যাহা হোক, বিনা বাক্যব্যায়ে ভৃত্যের অনুসরণ করিয়া গৃহস্বামীর সম্মুখীন হইলাম।

প্রায় আসবাবশূন্য প্রকাণ্ড একখানা ঘরের মাঝখানে বৃহৎ সেক্রেটারিয়েট টেবিল এবং তাহারই সম্মুখে দরজার দিকে মুখ করিয়া হাতকাটা পিরান পরিহিত বিশালকায় স্যর দিগিন্দ্র বসিয়া আছেন। বুলডগের মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি গোঁফ গজাইলে যে রকম দেখিতে হয়, সেই রকম একখানা মুখ – হঠাৎ দেখিলে ‘বাপ রে’ বলিয়া চেঁচাইয়া উঠিতে ইচ্ছা হয়। হাঁড়ির মতো মাথা, তাহার মধ্যস্থলে টাক পড়িয়া খানিকটা স্থান চকচকে হইয়া গিয়াছে। প্রকাণ্ড শরীর এবং প্রকাণ্ড মস্তকের মাঝখানে গ্রীবা বলিয়া কোনও পদার্থ নাই। দীর্ঘ রোমশ বাহু দুটা বনমানুষের মতো দৃঢ় এবং ভয়ঙ্কর; কিন্তু তাহার প্রান্তে আঙুলগুলি ‘ভারতীয় চিত্রকলার’ মতো সরু ও সুদৃশ্য, একেবারে লতাইয়া না গেলেও পশ্চাদ্দিকে ঈষৎ বাঁকিয়া গিয়াছে। চক্ষু দুইটি ক্ষুদ্র এবং সর্বদাই যেন লড়াই করিবার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজিতেছে। মোটের উপর আরব্য উপন্যাসের দৈত্যের মতো এই লোকটিকে দেখিবামাত্র একটা অহেতুক সম্ভ্রম ও ভীতির সঞ্চার হয়, মনে হয়, ইহার ঐ কুদর্শন দেহটার মধ্যে ভালো ও মন্দ করিবার অফুরন্ত শক্তি নিহিত রহিয়াছে।

আমরা বিনীতভাবে নমস্কার করিয়া টেবিলের সম্মুখে গিয়া দাঁড়াইলাম। সেই ক্ষুদ্র চক্ষু দুইটি আমার মুখ হইতে ব্যোমকেশের মুখে দ্রুতবেগে কয়েকবার যাতায়াত করিয়া ব্যোমকেশের মুখের পর স্থির হইল। তারপর এই প্রকাণ্ড মুখে এক অদ্ভুত হাসি দেখা দিল। বুলডগ হাসিতে পারে কি না জানি না; কিন্তু পারিলে বোধ করি ঐ রকমই হাসিত। এই হাস্য ক্রমে মিলাইয়া গেলে জলদগম্ভীর শব্দ হইল, “উজরে দরজা বন্ধ করে দাও।”
নেপালি ভৃত্য উজরে সিং দ্বারের নিকটে দাঁড়াইয়াছিল, নিঃশব্দে বাহির হইতে দ্বার বন্ধ করিয়া দিল। কর্তা তখন টেবিলের উপর হইতে আমাদের দরখাস্ত দুইটা তুলিয়া লইয়া বলিলেন, “কার নাম নিখিলেশ?”
ব্যোমকেশ বলিল, “আজ্ঞে আমার।”
কর্তা কহিলেন, “হুঁ। তুমি নিখিলেশ। আর তুমি জিতেন্দ্রনাথ? তোমরা দুজন সল্লা করে দরখাস্ত করেছ?”
ব্যোমকেশ বলিল, “আজ্ঞে, আমি ওঁকে চিনি না।”
কর্তা কহিলেন, “বটে! চেনো না? কিন্তু দরখাস্ত পড়ে আমার অন্য রকম মনে হয়েছিল। যা হোক, তুমি এম, এস, সি পাশ করেছ?”
ব্যোমকেশ বলিল, “আজ্ঞে হাঁ।”
“কোন য়ুনিভার্সিটি থেকে?”
“ক্যালকাটা য়ুনিভার্সিটি থেকে।”
“হুঁ। টেবিলের উপর হইতে একখানা মোটা বই তুলিয়া লইয়া তাহার পাতা খুলিয়া কহিলেন, “কোন সালে পাশ করেছ?”
সভয়ে দেখিলাম, বইখানা য়ুনিভার্সিটি কর্তৃক মুদ্রিত পরীক্ষোত্তীর্ণ ছাত্রদের নামের তালিকা। আমার কপাল ঘামিয়া উঠিল। এই রে! এবার বুঝি সব ফাঁসিয়া যায়।
ব্যোমকেশ কিন্তু নিষ্কম্প স্বরে কহিল, “আজ্ঞে, এই বছর। মাসখানেক আগে রেজাল্ট বেরিয়েছে।”
হাঁফ ছাড়িয়া বাঁচিলাম। যাক, একটা ফাঁড়া তো কাটিল, এ বছরের নামের তালিকা এখনও বাহির হয় নাই।
কর্তা ব্যর্থ হইয়া বই রাখিয়া দিলেন। তারপর অরও কিছুক্ষণ ব্যোমকেশের পর কঠোর জেরা চলিল, কিন্তু বৃদ্ধ তাহাকে টলাইতে পারিলেন না। শর্টহ্যাণ্ড পরীক্ষাতেও যখন সে সহজে উত্তীর্ণ হইয়া গেল, তখন কর্তা সন্তুষ্ট হইয়া বলিলেন, “বেশ। তোমাকে দিয়ে আমার কাজ চলতে পারে। তুমি বসো।”
ব্যোমকেশ বসিল। কর্তা কিয়ৎ কাল ভ্রুকুটি করিয়া টেবিলের দিকে তাকাইয়া রহিলেন, তারপর হথাৎ আমার পানে মুখ তুলিয়া বলিলেন, “অজিতবাবু!”
“আজ্ঞে!”
বোমা ফাটার মতো হাসির শব্দে চমকিয়া উঠিলাম। দেখি, অদম্য হাসির তোড়ে কর্তার বিশাল দেহ ফাটিয়া পড়িবার উপক্রম করিতেছে। অকস্মাৎ এত আনন্দের কি কারণ ঘটিল বুঝিতে না পারিয়া ব্যোমকেশের পানে তাকাইয়া দেখি, সে ভরৎসনা পূর্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়া আছে, তখন বুঝিতে পারিয়া লজ্জায় অনুশোচনায় একেবারে মাটির সঙ্গে মিশিয়া যাইতে ইচ্চা হইল। হায় হায়, মুহূর্তের অসাবধানতায় সব নষ্ট করিযা ফেলিলাম।

Pages: 1 2 3 4 5

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress