Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – সপ্তম পর্ব

খাওয়া দাওয়া শেষে অন্যন্যা নিজের ঘরে এসে বসে। হঠাৎ দরজায় টোকা পড়ার শব্দে তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খোলে অন্যন্যা ভাবে মা এসেছে হয়তো কিছু বলতে। দরজা খুলতেই অন্যন্যা অবাক হয়ে জানতে চায় ” কিরে তুই? ঘুমোসনি এখনো। চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে তিয়াসা। অন্যন্যা বুঝতে পারে তিয়াসা বাবা, মার ভয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে চাইছে না। তিয়াসাকে ভিতরে ডাকে অন্যন্যা: আয় ভিতরে আয় কি হয়েছে শুনি। ভিতরে আসার কথায় আর এক মুহুর্ত দেরী করে না তিয়াসা। ঘরে ঢুকেই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় ও। তারপর খাটের পাশে গিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে মাথা নীচু করে। অন্যন্যা প্রশ্ন করে: কিরে ওই ভাবে দাঁড়িয়ে রইলি যে, কি বলবি বল? হ্যাঁ বলবো বলেই তো এলাম কিন্তু বুঝতে পারছি না বললে তুই রেগে যাবি কিনা? মা বাবা তো আমাকে কোনো কথা বলতেই দিচ্ছে না। আচ্ছা তুই বল আমি কি এখন আর অত ছোটো আছি? যে কিছু বলতেই পারবো না? কিন্তু কথাগুলো তো বলা দরকার। অন্যন্যা তিয়াসাকে কাছে ডেকে বসায় তারপর বলে আসলে বাবা, মা কেউ তো আমাদের সেই ভাবে বড় করেনি তাই জন্যই ওনারা বড়দের মাঝখানে আমাদের কথা বলতে না করে। তুই আমাকে বল আমি শুনছি। কিন্তু দিদিভাই বাবা মাকে ও বুঝতে হবে এখন আর আমরা ছোটো নেই বড় হয়ে গেছি আমাদের কথা ও শোনার দরকার আছে বৈকি। দেখ আজকে তোর কথা শুনলে তো এই দিনটা আসতো না তুই তো বলেছিলি দিদিভাই এতো বড়লোক ঘরে তুই বিয়ে করবি না। অন্যন্যা এবার একটু গম্ভীর হয়ে বলে তিয়া। প্লীজ দিদিভাই তুই অন্তত রাগ করিস না বাবা মা পুরনো ধারণার মানুষ কিন্তু তুই তো না। দিদিভাই আমি এতদিন কথাগুলো কাউকে বলিনি কারণ আমি নিজেই বুজে উঠতে পারিনি কথাগুলোর মানে কি? কিন্তু তারপর সব কিছু রিলেট করতে পারতাম কিন্তু ওই ছোটো ছোটো বলে কিছুতো বলতেই দেয়া হয় না। আচ্ছা ঠিক আছে এখন আমাকে বল উত্তর দেয় অন্যন্যা। দিদিভাই যেদিন তুই এই বাড়ি থেকে গেলি মনে আছে তোর? সেদিন তুই ওই বাড়ি ঢোকা মাত্র জিজু মনে ওই অয়ন কেমন সবাইকে ছিটকে ঘরে ঢুকে গেছিলো তোর মনে পড়ে? তারপর তো সবাই তোকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলো আমি এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে ওদের কিচেনের কাছে চলে গেছিলাম তোর শ্বাশুড়ি সেখানে স্ত্রী আচারের জন্য কিছু আনতে বা রাখতে গেছিলো হয়তো তোর শ্বশুর মশাই ছিল সাথে জানিস খুব ধমকাছিল তোর শ্বাশুড়িকে। বলছিলো তোমার ঐ অসুস্থ ছেলেকে বোঝাও বিয়েটা এখনও মেটেনি বাড়ি ভর্তি লোকজন ও প্রেমে এতো হাবুডুবু খাচ্ছে যে ওর কিছুই খেয়াল নেই তাও যদি মেয়ে হতো? তারপর তোর শ্বাশুড়ি খুব রেগে গিয়ে বললো তোমাদের কারোরই কিছু খেয়াল নেই না তোমার । না তোমার ছেলের। তুমি প্লীজ একটু চুপ করো আর এখন এখান থেকে যাও আমি সব সামলে নেবো। সব কিছু ছেলের দোষ দিয়ে কি আর লাভ বাবা ও তো কিছু কম না শুধু পার্থক্য আমার ভাবতে ও ঘেন্না লাগে। জানিস দিদি ভাই তোর শ্বশুরের ও কিছু কেস আছে। কিন্তু অত গন্ডগোল হৈচৈ তে বুজতে পারছিলাম না, ঠিক শুনছি না ভুল। কিন্তু একটা খটকা লেগেছিল তারপর তোর বিয়ের পর প্রথম বার একা আসা ওই অয়নের তোকে ফোন না করা তোদের রিসেপশনের দিন ও কেমন একটা গা ছাড়া আর ওই ছেলেটার সাথেই সারাক্ষণ সবকিছু মিলিয়ে কিন্তু তোকে ও বলতে সাহস হয়নি আর বাবা মাকে বললে তো কিছু শুনতোই না উল্টে আমাকেই বকাবকি করতো। দিদিভাই তোর খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না? এই বিয়েটা না হলেই ভালো হতো রে। অন্যন্যা বলে তিয়া আমাকে যা বললি আমি শুনলাম কিন্তু এগুলো আর কাউকে কিছু বলতে হবে না আমিও চাই না তুই এসবের মধ্যে জড়িয়ে পড়। কিন্তু দিদিভাই যদি কোর্টে যদি কেস ওঠে সাক্ষী তো লাগবে সেদিন ও কি সব মানে যেটুকু জেনেছি সেই টুকুও আমি বলবো না সত্যিটা জেনে ও চুপ করে থাকবো? অন্যন্যা অস্থির গলায় বলে: হ্যাঁ থাকবি। আমি চাই না তুই থাক এসবের মধ্যে তুই সবার সামনে আসিস এটা আমি চাই না আর বাবা মা ও সেটা চাইবে না। তোর কোনো ক্ষতি হোক এটা আমি মানতে পারবো না। মা বাবা, ওদের কথা ও ভাবতে হবে আমাদের। তাই প্লীজ তিয়া তুই যে ভাবে আছিস সেই ভাবেই থাক। বাবা মার উদ্বেগ আর বাড়াস না। ওরা যে ভালো লোক না সেটা তো আমরা সবাই বুঝতে পারছি। তিয়া প্লীজ আমার একটা রিকোয়েস্ট রাখ যতদিন না সব কিছু ঠিক হচ্ছে তুই চুপচাপ থাকবি আর খুব সাবধানে থাকবি কথা দে আমাকে। দিদিভাই। প্লীজ তিয়া। আচ্ছা বেশ আমি চুপ থাকবো বোবা হয়ে থাকবো আমি তোর কষ্ট হচ্ছে দেখেও কিছু বলবো না তোর সাথে অন্যায় হচ্ছে দেখে ও আমি চুপ থাকবো সব কিছু জানার পর ও না জানার ভান করবো কথা দিলাম আমি। তিয়াসার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে। অন্যন্যা বোনকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। আমি জানি তোরা আমাকে সবাই খুব খুব ভালোবাসিস। আমার চিন্তা করিস। আমি খুব লাকি রে কিন্তু আমার সেই ছোট্ট বোনটা কবে এতো বড় হয়ে গেলো সেটা তো বুঝতেই পারলাম না। চোখের জল মোছ দেখি আমার বোন কাঁদবে সেটা আমি কিছুতেই মানবো না। তোকে আজ আর একা শুতে হবে না। আজকে দুই বোন একসাথে ঘুমোবো সেই ছোটবেলার মতো। আয় শুয়ে পড়তো দেখি আমি তোর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দি। তিয়াসা শুয়ে পড়ে দিদির পাশে আর অন্যন্যা ওর মাথায় স্বস্নেহে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। এভাবে অন্যন্যা ও যে কখন ঘুমিয়ে পড়ে ও টের পায় না।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress