Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – দ্বিতীয় পর্ব

বিকেলে তৃণা এলে সবার সাথে কথা বলার পর অন্যন্যা ওকে বলে চল আমরা ছাদে যাই ওরা ছাদে যায় তারপর অন্যন্যা সবকিছু খুলে বলে তৃণাকে। তৃণা জানায় বিয়ের দিন বা রিসেপশন এর দিন ওর ও যে অয়নের ব্যাবহার একটু অন্য রকম লাগেনি তা নয় কিন্তু অতটা গুরুত্ব দেয়নি। ও বলে অয়ন কে ফোন করে এখানে ডাকবে কিন্তু অন্যন্যা তাতে ও রাজি না কারণ এই কটাদিনে অয়ন কখনো ভালো করে ওর সাথে কথা পর্যন্ত বলেনি। অগত্যা তৃণা অন্যন্যাকে বলে শোন এটা হতেই পারে যে ওর অন্য কোনো সম্পর্ক আছে বা ওর এখন বিয়েতে মত ছিল না যা কিছু কিন্তু কিছু একটা আছে যেটা লোকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা কি? সেটাই আমাদের জানতে হবে। তুই ওর সাথে একদম স্বাভাবিক থাক যেনো তুই কিছু বুঝতেই পারছিস না কিন্তু খুব সতর্ক থাক ওর প্রত্যেকটা ওঠা নামা চলাফেরা ওর ফোনটা পারলে একটু খেয়াল কর কাকে ফোন করছে কার ফোন আসছে, দেখ খুব তাড়াতাড়ি জানতে পারবি সব। কিন্তু সবকিছু করতে হবে খুব সাবধানে যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে। তোর মতো একটা মেয়েকে বউ হিসেবে পেয়ে কেউ কি করে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারে? কিছু তো ব্যাপার আছে। কিন্তু হ্যাঁ মন খারাপ করিস না হতে পারে আমি তুই ঠিকই ভাবছি হতে পারে ভুল, বড়োলোকের একমাত্র ছেলে হয়তো একটু সেকি আগে থেকে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না আগে পুরো ঘটনা জানতে হবে। তুই ভাবিস না আমি সবসময় আছি তোর সাথে যখন মনে হবে তখন ফোন করবি। তাহলে আজ আমি উঠি। তুই আমাকে সব জানাতে থাকবি হোয়াটসঅ্যাপে।
এরপর অন্যন্যা শ্বশুরবাড়ি ফিরে যায়। তৃণার কথা মতো ও খুব সতর্ক থাকে। কিন্তু ঘরে সারাদিন একা বসে থাকতে ওর ভালো লাগে না তাই শ্বশুর শ্বাশুড়ির অনুমতি নিয়ে কাজে ও জয়েন করে। এখন অন্যন্যা আর অয়ন একসাথে থাকে রাতে বেড ও শেয়ার করে কিন্তু এখনও ওদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মতো কোনো সম্পর্ক তৈরি হয়নি অন্যন্যা এক দুবার অয়নের কাছাকাছি যাবার চেষ্টা করলে অয়ন বলে ও সারাদিন বাদে ক্লান্ত ওর রেস্ট দরকার। তারপর থেকে অন্যন্যা আর কখনো ওর কাছাকাছি যাবার চেষ্টা করেনি। এর কারণ অন্যন্যা কিছুতেই বের করে উঠতে পারে না ওকে নিখিলেশের সাথে সব থেকে বেশি খোলামেলা মনে হয়। ওরা দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘন্টা দুজন দরজা বন্ধ করে কি এত কথা বলে অন্যন্যা বুঝতে পারে না কিন্তু নিখিলেশকে নিয়ে ওর মাথায় তেমন কিছু আসে না কখনো। অন্যন্যা এটা নিয়ে প্রশ্ন করলে ওর শ্বাশুড়ি এটাসেটা করে প্রসঙ্গ পাল্টে দেন এবং মাঝে মাঝেই বলেন বাপের বাড়ি গিয়ে দুটো দিন কাটিয়ে আসো অয়ন কাজে সময় পায় না বাপের বাড়ি গেলে মনটা অন্য রকম লাগবে। খুব অদ্ভুত লাগে অনন্যার কিন্তু মুখে বা ব্যাবহারে সেটা প্রকাশ পেতে দেয় না। অন্যন্যা এই সবকিছু তৃণাকে জানায় তৃণা বলে অফিসের পর ওদের পুরনো কফি শপে দেখা করতে। সেই মতো একদিন অফিস থেকে বেরিয়ে ওরা দেখা করে। কিছু কথা বার্তা হবার পর তৃণা অন্যন্যার হাতে দুটো ওষুধ দিয়ে বলে একটা আজ রাতে অয়নকে খাইয়ে দিতে আর ও ঘুমিয়ে পড়লে ওর ফোনটা আগে ভালো করে দেখতে ওটা দেখলেই সব কিছু উদ্ধার করা যাবে। তবে ওর মনে হয় না অয়নের কোনো মেয়ের সাথে কোনো সম্পর্ক আছে বলে!!! বরং ওই নিখিলেশের সাথেই ওর কোনো ব্যাপার আছে আর যেটা অন্যন্যার শ্বশুর বাড়ির সবাই জানে। আর এই সব কিছু জানা যাবে একমাত্র অয়নের ফোন থেকে।

ভয় পায় অন্যন্যা ওষুধ গুলো দিলে অয়নের যদি কোনো সমস্যা হয়? তৃণা বলে এতে ওর কোনো ক্ষতি হবে না সেটা ওর দায়িত্ব । ওষুধটা ঘুমের ওষুধ যেটা খেলে অয়ন ঘুমোবে আর তাতে অন্যন্যা ওর ফোনটা ভালো করে দেখতে পারবে। কিন্তু অন্যন্যা এবার কি ভাবে সেটা খাওয়াবে সেটা ওকেই ভাবতে হবে এটা একমাত্র পথ যেটা করলে কিছু না কিছু জানা যাবে। অন্যন্যার বাড়ি ফিরতে সেদিন একটু দেরী হয়ে যায়। ঢোকার সাথে সাথে ওর শ্বাশুড়ি অন্যন্যার দেরী হবার কারণ জানতে চায় তারপর এটা ওটা কথা দিয়ে ওকে যেনো আটকে রাখার চেষ্টা করছে অন্যন্যা বুঝতে পারে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না অন্যন্যা যতবার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হবার কথা বলছে ততবারই উনি নানা কথায় অন্যন্যাকে আটকে রাখতে চাইছে কারণটা অন্যন্যা কিছু বুঝতে পারছে না। বেশ কিছুক্ষণ পর ও দেখলো অয়ন আর নিখিলেশ রুম থেকে বের হচ্ছে!!!! ও বুঝতে পারে ওর শ্বাশুড়ি কেনো ওকে আটকে রাখার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু ও যেটা নিশ্চিত হতে পারছে না যে ওরা একসাথে আছে বলে উনি অন্যন্যাকে আটকে রাখার চেষ্টা কেনো করছিলেন? ও নিজের রুমে আসে ফ্রেশ হবার জন্য আর এটাই সারাক্ষণ ভাবতে থাকে যে কি ভাবে ও অয়নকে ওষুধ টা খাওয়াবে? আর কেনই বা ওর শ্বাশুড়ি মা ওকে ও ভাবে আটকে রাখার চেষ্টা করছিলেন? অফিস থেকে ফিরে অন্যন্যা সবার সাথেই থাকে কিন্তু সেদিন ও নিজের ঘর থেকে বের হলো না। নানান কথা ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো। এরমধ্যে অয়ন ওকে ডিনার এর জন্য ডাকতে এলে, ও একটু অবাক হয় কারণ এতদিনে অয়ন এটা কখনো করেনি। ডিনার সেরে অয়ন তাড়াতাড়ি রুমে চলে আসে ওর একটা ফোন এসেছিল যেটা ও সবার সামনে ধরলো না। আর অন্যন্যার মাথায় এটাই ঘুরছিল ও কি ভাবে অয়নকে ওষুধটা খাওয়াবে? ওকে অন্য মনষ্ক দেখে ওর শ্বাশুড়ি বললেন: কি হয়েছে অনু? তুমি কি কিছু নিয়ে চিন্তায় আছো? কোনো অসুবিধা না থাকলে বলতে পারো। অন্যন্যা উত্তর দেয় না না তেমন কিছু না মা বাবার জন্য মনটা একটু খারাপ লাগছে। এই কথা শুনে তিনি উত্তর দেন ও এই ব্যাপার তোমাকে তো বলি মাঝে মাঝে সেখানে গিয়ে থাকো, তুমি যাও না। কালকে চলে যাও কটাদিন কাটিয়ে এসো বাবা মার সাথে। মন খারাপ করার দরকার নেই। আচ্ছা অনু অয়ন দুধটা না খেয়েই চলে গেলো তুমি একটু নিয়ে যাও বলো খেয়ে নিতে। অন্যন্যার কাছে ব্যাপারটা মেঘ না চাইতেই জলের মতো মনে হলো ও দুধ নিয়ে যখন রুমে এলো অয়ন বাথরুমে ছিল এতে আরও সুবিধা হয়ে গেলো অন্যন্যার ও তাড়াতাড়ি করে ওষুধ দুটো ওর দুধে মিশিয়ে দিল। তরপর অয়ন বাথরুম থেকে বেরোলে বললো মামনি দুধটা পাঠিয়ে দিল আপনাকে খেয়ে নিতে বললো ( অন্যন্যা তার শ্বাশুড়িকে মামনি বলেই ডাকতো)। যথারীতি দুধটা খাবার কিছুক্ষনের মধ্যে অয়ন ঘুমিয়ে পড়লো। ওর আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে অন্যন্যা ফোন খুললো কল লিস্ট লাস্ট কলটা ও নিখিলেশের সারাদিন সব থেকে বেশি কল ওর ফোন থেকে। অন্যন্যা এবার অয়নের হোয়াটস অ্যাপ টা খুললো তারপর আর কোনো প্রশ্ন ওর মনে ছিল না ওর কাছে সবটা পরিষ্কার। নিখিলেশ আর অয়নের সমস্ত কথা ওদের অনেক অন্তরঙ্গ মুহুর্ত এমনকি যেদিন অন্যন্যা প্রথম এই বাড়ি আসে সেদিনের সেই সব ভিডিও ছবি গা গুলিয়ে ওঠে অন্যন্যার। ছবি আর কনভারসেশন গুলো ও নিজের ফোনে নিয়ে নেয় তাড়াতাড়ি করে। তারপর ফোনটা চুপচাপ জায়গা মতো রেখে দেয়। অন্যন্যা আর তৃণা দুজনেই যেটা সন্দেহ করেছিল ঠিকই কিন্তু অন্যন্যা যেনো মানতে পারছে না ও বুঝতে পারছিল না কি করবে? সেদিন সারা রাত অন্যন্যার আর ঘুমোনো হয়নি। ও তৃণাকে লিখেছিলো কাল যেনো খুব তাড়াতাড়ি ও অন্যন্যার বাপের বাড়ি তে চলে আসে কাল ও অফিস যাবে না তার থেকে ও বড়ো কথা ও যাবার অবস্থায় নেই।

পরেরদিন খুব তাড়াতাড়ি অন্যন্যাকে ঘুম থেকে উঠতে দেখে ওর শ্বাশুড়ি বলে আজ এত তাড়াতাড়ি? আসলে অফিসে আজ খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং আছে তাড়াতাড়ি যেতে হবে তাই আর কি। খুব তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে বেরিয়ে যায় অন্যন্যা আর যাবার সময় বলে যায় আজ সে বাপের বাড়ি যাবে ফিরবে না। শ্বাশুড়ি বাড়ির গাড়ি নিয়ে যেতে বললে অন্যন্যা বলে ও টেক্সী নিয়ে নেবে গাড়ি দরকার নেই। তারপর টেক্সী ধরে সোজা ওর বাড়ি যায়। ওকে দেখে সবাই খুব উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চায়!!! কি করে তুই এখন কিছু হয়েছে বাড়িতে? তোকে কেমন যেনো লাগছে। বিরক্ত হয় অন্যন্যা। কি আবার হবে আমার কি এখানে আসতে নেই? অফিস যেতে ইচ্ছে করছিল না তাই চলে এসেছি তৃণাকে ও ডেকেছি গল্প করবো আজ সারাদিন। দিদিকে দেখে খুব খুশি হয় তিয়াসা। আজ আমিও তাহলে কলেজে যাবো না। সারাদিন দিদির সাথেই থাকবো। না, না একদম না তুই কলেজ যা আমি আজ থাকবো তুই কলেজ থেকে এলে অনেক গল্প করবো পুরো রাত গল্প করবো। আমি এখন থাকবো কটাদিন অনেক সময় পাবো তুই রেডী হয়ে কলেজ যা এখন। আর মা আমাকে একটু চা দাও না মাথাটা খুব ধরেছে আমি আমার ঘরেই আছি। তুই যা আমি চা নিয়ে আসছি।

অন্যন্যা নিজের ঘরে গিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে বসলো কতদিন বাদে নিজের ঘর নিজের খাট অনেক কষ্টের মধ্যে ও যেনো একটু শান্তি পেলো।চোখ বুঝে হেলান দিয়ে বসে ছিল অন্যন্যা। মা ঘরে চা নিয়ে ঢুকে ওই ভাবে অন্যন্যাকে বসে থাকতে দেখে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো; কিরে খুব মাথা ধরেছে? একটু টিপে দেবো? সত্যি করে বলতো মা বাড়িতে কি কোনো সমস্যা হয়েছে? জামাই এর সাথে কিছু হয়েছে? আমাকে বল, আমি তো মা!!!! আমাকে বলবি নাতো কাকে বলবি? বলছি তো আমার কিছু হয়নি ।তুমি কেনো বিশ্বাস করছো না বলতো? ঠিক আছে চা টা দাও খেয়ে আমি চলে যাচ্ছি। আমি কি তাই বললাম? আচ্ছা আমার অন্যায় হয়েছে রাগ দেখাতে হবে না। মায়ের বুকের উপর মাথা রাখে অন্যন্যা। এরমধ্যে তৃণা ঘরে ঢোকে!!!! ও আচ্ছা আমাকে ডেকে নিয়ে খুব একাই মায়ের আদর খাওয়া হচ্ছে? এই আমি গেলাম। অন্যন্যার মা এক হাত দিয়ে তৃণাকে ও জড়িয়ে ধরে!!!! যেতে দিলে তো যাবে দেখি কেমন যেতে পারো? এক পবিত্র হাসিতে ঘর ভরে ওঠে। ঠিক আছে তোরা কথা বল আমি আর এক কাপ চা পাঠিয়ে দিচ্ছি।
অন্যন্যার মা বেরিয়ে যাবার পর তৃণা ঘরের দরজাটা বন্ধ করে দেয়। এবং জানতে চায় অন্যন্যা কি জানতে পেরেছে যার জন্য এতো তড়িঘড়ি ওকে ডেকে পাঠালো? অন্যন্যা মুখে কোনো কথা না বলে ওর ফোনটা তৃণাকে দেয় আর বলে আমি কিছু বলতে পারছি না আমার ঘেন্না লাগছে আমি ভাবতে পারছি না এসব কিছু। ওর যদি এসব ছিল তাহলে ও আমাকে বিয়ের আগে কেনো বললো না? আমি বাড়িতে কি বলবো? বাবা, মা এসব কি করে সহ্য করবে? তৃণা আমি কিছু বুঝতে পারছি না। তৃণা ফোনটা নিয়ে সবটা দেখলো, তারপর বললো: যা ভেবেছিলাম তাই। অন্যন্যা তুই এতো কিছু না ভেবে পরিষ্কার সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আয়। আর কাকু কাকিমাকে যা বলার আমি বলবো। ওনারা সব শুনে কোনোদিন তোকে ওই রকম একটা ছেলের সাথে থাকতে বলবেন না। বোঝা যাচ্ছে ওরা ছেলের এসব ঢাকতেই সাত তাড়াতাড়ি বিয়েটা দিয়েছে। দেখ যা হবার হয়ে গেছে কিন্তু না জেনে যে ভুলটা হয়েছে সেটা সারা জীবন বয়ে বেড়ানোর কোনো মানেই হয় না। তুই দুটো দিন থাক তারপর বাড়ি গিয়ে অয়নের সাথে কথা বলে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ডিভোর্স টা নিয়ে নেবার চেষ্টা কর। আজ প্রায় চারদিন অন্যন্যা নিজের বাপের বাড়িতেই আছে অয়ন খুব একটা ফোন করে না কিন্তু অন্যন্যার শ্বাশুড়ি নিয়মিত ওর খোঁজ নিয়েছিল।যদিও অন্যন্যা খুব কম কথায় উত্তর দিতো। সেদিন সকালে অন্যন্যা তৈরী হয়েছিল অফিস বেরোনোর জন্য ঠিক তখনই অয়নের ফোন আসে সে বলে মা বলছে তিন চার দিন তো হয়ে গেছে বাড়ি ফিরতে ও যদি চলে আসে তাহলে অফিসে আজকে গাড়ি পাঠিয়ে দেবে। অন্যন্যা জানায় যে সে আজকে ফিরছে কিন্তু তার কোনো গাড়ির প্রয়োজন নেই সে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে বেশি কমফোর্ট। অয়নের অন্যন্যার কথাগুলো একটু অন্য রকম লাগলো। সে মাকে বলল ও আজকে ফিরবে ওর গাড়ি দরকার নেই বলে জানালো।

সন্ধ্যে তখন প্রায় আটটা অন্যন্যা বাড়ি ফিরে নিজের রুমের দিকে যেতে গেলে ওর শ্বাশুড়ি ওকে পিছন থেকে ডাকে আবার সেই আগের দিনের মতো নানা গল্পে ওকে আটকানোর চেষ্টা করলে ও বলে, আজ ও খুব টায়ার্ড তাই আগে একটু ফ্রেশ হতে চায়। বলে ও নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যায়। রুমের দরজা খুলতে গিয়ে ও দরজা বন্ধ পায় এবং বার বার নক করতে থাকে। ওর শ্বাশুড়ি উপরে এসে বলে অয়ন আর নিখিল একটু গল্প করছে, অন্যন্যা চাইলে ওর বাথরুম ইউজ করতে পারে কিন্তু অন্যন্যা তাতে কোনো উত্তর না দিয়ে বার বার দরজা নক করে। বেশ কিছুক্ষন বাদে অয়ন দরজা খুললে নিখিলেশ তাড়াতাড়ি সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। অন্যন্যা রুমে ঢুকলে অয়ন বেড়িয়ে যেতে উদ্যত হলে অন্যন্যা রুমের দরজাটা বন্ধ করে দেয়। অয়ন একটু অপ্রস্তুত হয়ে জানতে চায় হঠাৎ ও দরজাটা বন্ধ কেনো করে দিল? খুব অবাক আর ভয় ভয় জানতে চাইলো: কি হলো আপনি হটাৎ দরজাটা বন্ধ করে দিলেন যে? অন্যন্যা জানতে চায়: তার আগে আপনি আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিনতো!!! আমি আপনার কে? অয়ন অবাক হয়ে জানতে চায়, এই প্রশ্নের মানে কি? মানে একটা আছে অয়ন বাবু!!! আপনি বলুন না আমি আপনার কে? অয়ন উত্তর দেয় আপনি আমার ওয়াইফ। আমি আপনার ওয়াইফ আমাদের নতুন বিয়ে হয়েছে আমি যদি আমার স্বামীর সাথে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দি তাহলে সেটা কি খুব অবাক করা কিছু? অন্যন্যা প্লিজ আপনি একটু বোঝার চেষ্টা করুন আমি খুব টায়ার্ড এখন আপনি যা ভাবছেন বা চাইছেন আমার দ্বারা সম্ভব না। সেতো আমি আমি জানি অয়ন বাবু আপনার দ্বারা যে সম্ভব না আপনি যে টায়ার্ড সেতো আমি আমাদের বিয়ের প্রথম রাত থেকে শুনছি, কিন্তু আজকে এই মুহুর্তে টায়ার্ড হওয়াটা খুব স্বাভাবিক!!! মানে? অন্যন্যা, আপনি কি বলতে চাইছেন? আমি কি বলতে চাইছি সেটার উত্তর এই বেডের অবস্থা টাই বলে দিচ্ছে নাকি অয়ন বাবু? আর আপনারা দুজন ছেলে ঘরে এমন কি করছিলেন? যেটার জন্য আপনার দরজা খুলতে এতটা দেরী হয়ে গেল? একটু বুঝিয়ে বলবেন প্লিজ। অয়ন একটু চেঁচিয়ে বললো কি সব যাতা বলছেন? আপনি জানেন আপনি কি বলছেন? অন্যন্যা এবার বেশ ধমকের সুরে বললো; বেশতো আমি জানি না আপনি আমাকে জানান কি কারণ যে আমি আমার স্ত্রী হবার যোগ্য মর্যাদা পেলাম না? বলুন বুঝিয়ে। অন্যন্যা আমি এখন আপনার সাথে কোনো কথা বলতে চাই না আপনি যা ভাবছেন সেগুলো ভুল আমার করো সাথে এমন কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যন্যা নিজের ফোন থেকে অয়ন আর নিখিলেশের ছবি গুলো অয়নকে দেখালো। কি অয়ন বাবু, এখন কি বলবেন? এগুলো মিথ্যে আমি ভুল? আপনার কোনো সম্পর্ক নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই কিন্তু আপনি আমাকে কেনো এভাবে ঠকালেন? কি ক্ষতি করেছিলাম আপনার? চুপ করে না থেকে উত্তর দিন। অয়ন কি বলবে, কিছু বুঝতে পারছিল না। শুধু আসতে করে জানতে চায়; আপনি এগুলো কোথায় পেলেন? উত্তের অন্যন্যা বলে: আমি এগুলো কোথায় পেলাম কি ভাবে পেলাম সেটা বিষয় নয় অয়ন বাবু। আপনি এটা নিয়ে কি বলবেন সেটা বলুন, কেনো এভাবে আমাকে ঠকালেন?

দরজার আড়াল থেকে এতক্ষণ অয়নের মা সব শুনছিলেন এবার উনি আর থাকতে না পেরে দরজা নক করেন। দরজাটা অন্যন্যাই খুলে দেয়। আমি জানতাম আপনি দরজার বাইরে দাঁড়ানো, শুধু আপনার নক করার অপেক্ষাই করছিলাম। অনু তুমি একটু শান্ত হও আর আমি এটাই বলতে চাই তুমি আমার ছেলেটাকে ভুল বুঝঝ তুমি যা যা ভাবছো তা ঠিক না। মামনি আমি এই ব্যাপারে আপনার না আপনার ছেলের উত্তর চাইছি আপনি উত্তর দিন কোনটা ভুল অয়ন বাবু। অয়ন কোনো উত্তর না দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করলে অন্যন্যা বলে: আপনি বেরিয়ে যাচ্ছেন তাতে আমার কিছু বলার নেই কিন্তু প্লিজ আজ রাতে আপনি আর এই ঘরে আসবেন না। কাল সকাল হলে আমি বরাবরের মতো এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো। I want divorce অয়ন বাবু।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress