Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – একাদশ পর্ব

এরপর কৃষ্ণেন্দু আর অন্যন্যা কমিশনার রাজেশ মেহেতার সাথে দেখা করে এবং অন্যন্যার থেকে সমস্ত কিছু বিস্তারিত ভাবে জানতে চায়। অন্যন্যা ও সব কথা স্ববিস্তারে জানায় রাজেশ বাবুকে।
হুম, বুজলাম নিখিলেশ ওর বাবা বললেন আমাদের প্রফেশনে আছে কি নাম বলতে পারবেন? না, আসলে তার জন্য কিছু আটকাবে না তবে কি কোনো বড় পদে থাকলে একটা প্রভাব তাঁর ও তো থাকবেই আমি শুধু নামটা জেনে রাখতে পারলে ভালো হতো। অন্যন্যা জানায়!! ” আসলে স্যার ওখানে আমার খুব বেশী দিনের সংসার তো নয় আর তাছাড়া অয়নের সাথে ও আমার খুব কম কথা হয়েছে আমরা কোনোদিন ভালো করে কথা ও বলিনি আসলে ও কোনোদিন কথা বলার আগ্রহ ও দেখায়নি” তার মধ্যেই যে টুকু বুঝতে পেরেছি সেটা এইটুকুই। তবে স্যার আমি ওদের সম্পর্কের নালিশ করতে বা তার কোনো বিরোধিতা করতে আসিনি দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তাদের একে অপরকে ভালো লাগে আমি সন্মান জানাই সেই ভালো লাগাকে। ওদের সম্পর্ক নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই কিন্তু এই সম্পর্কের মাঝখানে আমি থেকে কি করবো? সারা জীবন একটা মিথ্যে সম্পর্ককে কি করে বয়ে বেড়াবো আমি? ওদের জীবন ওরা বেঁছে নিয়েছে আমার জীবনটা বেঁছে নেওয়ার অধিকার আমার কেনো থাকবে না? ওরা মিথ্যে আভিজাত্যের অহংকার বজায় রাখতে আমাকে ব্যাবহার করতে চাইছে আমার বিরোধিতা সেখানে। কোনো সম্পর্ক নিয়ে আমার কোনো বিরোধিতা নেই। খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে চুপচাপ আমরা সেপারাশন নিয়ে নিতে পারতাম কিন্তু তা না করে ওরা আমাকে ফোনে বারবার হুমকি দিচ্ছে। আমি আমার পরিবারকে নিয়ে চিন্তিত। বিশেষ করে আমার ছোট বোনকে নিয়ে। ও এখন কলেজে পড়ছে ওকে ও রাস্তাঘাটে বেরোতে হচ্ছে আমি আর বিশ্বাস করতে পারছি না যে, ওরা কোনো অসৎ উপায় অবলম্বন করবে না।

I understand অন্যন্যা। আমি বুঝতে পারছি আপনার সব কথা। আপনি কৃষ্ণেন্দুকে নিয়ে লোকাল থানায় একটা ডায়েরি করুন। আমি এখান থেকে নিজে ফোন করে অফিসারের সাথে কথা বলে নিচ্ছি। কোনো সমস্যা হবে না। ওরা গেলেই ডায়েরি করে নেবে। আর হ্যাঁ এরপর থেকে যখনই কোনো অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসবে কলটা রেকর্ড করতে ভুলবেন না। আপনি চিন্তা করবেন না আপনি আইনের থেকে সমস্ত রকম সাহায্য পাবেন। এরপর আরো কিছু কথা বার্তার পর ওরা ওখান থেকে বেরিয়ে সোজা চলে যায় লোকাল থানায়, সেখানে যাওয়ার সাথে সাথেই ওদের কাজ হয়ে যায়। তারপর কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যাকে বাড়ি পৌঁছে বেরিয়ে যায় সেখান থেকে।

বাড়ির বেল বাজতেই অন্যন্যার বাবা ছুটে এসে দরজা খোলে। অন্যন্যা বাবাকে দেখে বলে” ও বাবা তুমি ভালোই হয়েছে তুমি দরজা খুললে, বাবা তোমার সাথে আমার কিছু দরকারি কথা আছে তুমি প্লিজ মাকে ম্যানেজ করে একবার আসতে পারবে আমার ঘরে”? হ্যাঁ, সে নয় আমি গেলাম কিন্তু আগে তুই ঘরে ঢোক তোর মা সারাক্ষণ ঘর বার করছে। তুই ফ্রেশ হয়ে নে আমি যাচ্ছি। কিন্তু কি হয়েছে যে তুই আমাকে আলাদা করে বলতে চাইছিস? অন্যন্যা বলে: অতো চিন্তার কিছু নেই বাবা, কিন্তু মাকে বললে মা অকারণে চিন্তা করবে তাই আমি তোমাকে আলাদা করে বলতে চাইছি।

আচ্ছা আচ্ছা, বেশ তুই ঢোক তারপর যাচ্ছি আমি উত্তর দেয় অন্যন্যার বাবা। অন্যন্যার মা ওকে দেখে প্রশ্ন করে আজকাল অফিসের সব কাজ কি তোকে একাই করতে হচ্ছে? ঘরে ঢোকার কোনো সময় থাকছে না। এরকম হলে চাকরি করতে হবে না, আমি এত দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘরে বসে থাকতে আর পারছি না। ঘরে ঢোকার সাথে সাথে মার এমন কথায় একটু বিরক্ত হয় অন্যন্যা। মা, তুমি কেনো বোঝো না বলতো আমার কাজ তো আমাকে করে তবেই আসতে হবে। সবাইকে করতে হয় আমি তো একা না। এরকম সমস্যা থাকলে তো আমি কোথাও চাকরি করতে পারবো না, তাহলে এত পড়াশুনা শিখে কি লাভ হলো? না করলেই তো হতো।

অন্যন্যার মা দ্বিগুণ বিরক্তি নিয়ে উত্তর দেয়!!! কেনো বলছি সেটা কি বুঝতে পারছিস না? অন্যন্যা শান্ত হয়ে উত্তর দেয়: আচ্ছা মা তাহলে কি এখন ওদের ভয় সবকিছু ছেড়ে বসে থাকতে হবে? তুমি এতো কেনো ভয় পাচ্ছো, আমি তো কোনো দোষ করিনি করছে ওরা। আর সেই ওরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আমাকে সব বন্ধ করে ঘরে বসে থাকতে হবে এটা কেমন কথা। আমি গেলাম ফ্রেশ হতে আর এই কথা আমি শুনতে চাই না। যাবার আগে বাবার দিকে তাঁকিয়ে একবার ইশারা করে গেলো অন্যন্যা।

রিনা দেবিকে রান্না ঘরে যেতে দেখে বিকাশ বাবু চুপিসাড়ে অন্যন্যার ঘরে দিকে গেলো । ততক্ষনে অন্যন্যা ও ফ্রেশ হয়ে চলে এসেছে। বিকাশ বাবুকে দেখে অন্যন্যা বললো: ও, বাবা এসে গেছো? বাবা তোমার সাথে অনেক ইম্পর্ট্যান্ট কথা আছে আমার। বিকাশ বাবু বলেন: হ্যাঁ মা বল সেই জন্যই তো এলাম।

বাবা আজ আমি থানায় গেছিলাম ডায়েরি করতে। বিকাশ বাবু আঁতকে ওঠেন!!!! থানা? থানা কেনো কি হয়েছে? আস্তে আস্তে বাবা আস্তে। এতো ভয় পাবার মতো কিছু হয়নি। তারপর অন্যন্যা সব খুলে বললো ওর বাবাকে। বাবা কৃষ্ণেন্দু বাবু খুব ভালো মানুষ আমাকে অনেকটা সাহায্য করছে এই পর্যন্ত। কমিশনার সাহেব একজন ভালো উকিলের নম্বর ও দিয়েছেন আমাদের। বাবা রবিবার যেতে হবে দেখা করতে কৃষ্ণেন্দু স্যার ও আমাদের সাথে থাকবে। ফোনটা না এলে হয়তো আমি থানায় ডায়েরি করার কথা ভাবতাম না কিন্তু বাবা এখন এটা করে রাখা দরকার ছিল তাই!!!! চুপ করে যায় অন্যন্যা।

বিকাশ বাবু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উত্তর দেয়: কি করতে গেলাম কি হয়ে গেল আমি এমনটা তো চাইনি রে মা। যেটা ঠিক মনে করেছিস করেছিস আমার পুরো সমর্থন আছে তোমার সাথে। কিন্তু রবিবার একসাথে কি বলে বেরোব তোর মাকে কি বলবো? তুমি চিন্তা করো না বাবা আমি কিছু একটা প্ল্যান ঠিক করে নেবো। এর মধ্যেই রিনা দেবী গিয়ে ঘরে ঢোকেন: প্ল্যান কিসের প্ল্যান? কি কথা হচ্ছে তোমাদের? বিকাশ বাবু চুপ করে রইলেন। অন্যন্যা বললো: আরে মা, অনেকদিন আমরা একসাথে কোথাও তো যায়নি তাই বললাম আমার কাজ একটু হাল্কা হলে সবাই যাবো সেই প্ল্যানের কথাই বলছিলাম আর কি। রিনা দেবী বললো ওসব প্ল্যান ট্যান পরে হবে অনেক রাত হয়ে গেছে এখন খেতে গেলে ভালো হয়। না আছে খাবার সময়ের ঠিক না কিছুর চলো সবাই খেতে দেবো। অন্যন্যা আর বিকাশ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ চলে গেলো খেতে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress