শামসুজ্জামান খান (লোকসাহিত্য গবেষক ও বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক)
শামসুজ্জামান খান ২৯শে ডিসেম্বর ১৯৪০ সালে চারিগ্রাম, সিংগাইর, মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। শামসুজ্জামান খানের বাবা এম আর খান কলকাতার সরকারী অনুবাদক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার দাদার দাদা এলহাদাদ খান এবং তার ভাই আদালাত খান ঔপনিবেশিক ভারতে অত্যন্ত প্রশংসিত নামী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। শামসুজ্জামান খান মাত্র দুবছর বয়সে বাবাকে হারান। তার মা এবং দাদি তাঁকে লালন-পালন করেন।
তিনি ১৯৬৩ সালে এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে অনার্স এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৬৪ সালে মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। একই বছর তিনি জগন্নাথ কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন।
তাঁর শিক্ষকতা জীবন হরগঙ্গা কলেজে শুরু করেন। শামসুজ্জামান খান জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৮-৭৩ সাল) এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৯-২০০১ সাল) এর শিক্ষক ছিলেন।
২৪শে মে ২০০৯ সালে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। তাঁর পদের মেয়াদ তিনবার বাড়ানো হয় যা ২৩শে মে ২০১৮ সালে শেষ হয়। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে শামসুজ্জামান খান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক পদে নিয়োগ পান।
তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশের একজন অধ্যাপক, লোক সংস্কৃতি ও পল্লীসাহিত্য গবেষক এবং বাংলা একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্ম হল বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহশালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা সম্পাদনা।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান (১৯৪০ সাল – ২০২১ সাল) ছিলেন বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিসত্তা। একদিকে তিনি ছিলেন শিক্ষাবিদ, সংগঠক, প্রশাসক, সম্পাদক, প্রাবন্ধিক, গ্রন্থকার ও রাজনৈতিক চিন্তক। তিনি তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৬৪ সালে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে। পরবর্তীতে তিনি ১৯৬৪-১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকার জগন্নাথ কলেজে শিক্ষকতা করেন। পেশাগত জীবনে তিনি শিক্ষকতা ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন ১৯৬৮ সালে ময়মনসিংহে পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের [বর্তমান নাম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়] বাংলা বিভাগে সিনিয়র লেকচারার পদে যোগদান করেন। সেখানে তিনি যখন সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান, তখন তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমিতে উপপরিচালক পদে যোগদান করেন। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা একাডেমির উপপরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা একাডেমির পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলা একাডেমিতে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালনকালে তাঁর সাংগঠনিক, প্রশাসনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিচয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
অবশ্য তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ঘটেছিল ১৯৫৭-৫৮ সালে জগন্নাথ কলেজে এইচ.এস. সি অধ্যায়নকালে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যখন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র, তখন প্রথম ছাত্রলীগে যোগ দিই। … দীপু মনির বাবা আবদুল ওয়াদুদ ‘ইত্তেফাক’-এর ম্যানেজার ছিলেন। তিনি আমাকে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন। এর আগে আমি রাজনীতি না করলেও রাজনীতিসচেতন ছিলাম। ভাষা আন্দোলনের মিছিল-মিটিং করেছি। রাজনীতি বিষয়ে স্কুলের নানা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম।
[‘সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রকৃতি শিক্ষিত হওয়া যায় না’: শামসুজ্জামান খান, সাক্ষাৎকার গ্রহণ: স্বকৃত নোমান, ২১ মে ২০১৫ তারিখে অনলাইনে প্রকাশিত]
প্রায় একই সময়ে তিনি বিচিত্র বিষয় নিয়ে লেখক জীবনের সূচনা করেন। এ বিষয়ে শামসুজ্জামান খান তাঁর ‘রচনাবলি’র প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ডের ‘প্রসঙ্গ-কথা’য় লিখেছেন, “লেখালেখির হাতেখড়ি বিগত শতকের পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে। আমার আগ্রহ ও কৌতূহল বিচিত্র বিষয়ে। লেখালেখিও তাই নানা বিষয়েই। কিশোরকালে লেখালেখি শুরু হয়েছিল গল্প ও কবিতা দিয়ে। ১৯৫৭ সালে প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ‘আজাদ’ পত্রিকার ‘মুকুলের মাহফিল’-এর পাতায়; ‘লাল শার্ট’ নামে ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিকের জীবনভিত্তিক একটি গল্প দিয়ে। পরে জীবন-অনুসন্ধিৎসার বিচিত্রগামিতার ফলে গল্প-কবিতায় নিবিষ্ট থাকা সম্ভব হয়নি। সমাজ-রাজনীতি-ইতিহাস-সংস্কৃতি-খেলাধুলাসহ বহু বিষয়ে ভাবুকতা ক্রমশ দীপ্র হতে থাকে। তারই ব্যাখ্যা-বয়ান রচনা তাগিদে কখনও সংস্কৃতি বা বাঙালি জাতিসত্তা বা জাতীয়তাবাদ বিষয়ক তর্ক-তদন্তে লিপ্ত হয়েছি। কখনও রাজনীতি বা খেলাধুলাই হয়ে উঠেছে লেখালেখির বিষয়।”
শামসুজ্জামান খানের নিজের বর্ণনাতেই তাঁর বহুমাত্রিক ব্যক্তিসত্তা সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। এই বক্তব্যকে স্মরণে রেখে আমরা যদি তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহে দৃষ্টি দিই তাহলে বহুমাত্রিক শামসুজ্জামান খানের ব্যক্তিসত্তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। তিনি ১৯৮৩ সালে প্রণয়ন করেন ‘নানা প্রসঙ্গ’ নামে একটি গ্রন্থ। এরপর ১৯৮৫ সালে কল্যাণী ঘোষের সঙ্গে যৌথভাবে রচনা করেন ‘গণসংগীত’, ১৯৮৭ সালে প্রকাশ করেন শিশুসাহিত্য ‘দুনিয়া কাঁপানো বিশ্বকাপ’, ১৯৯৪ সালে প্রণয়ন করেন ‘মাটি থেকে মহীরুহ’, ১৯৯৫ সালে প্রকাশ করেন ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও প্রাসঙ্গিক কথকতা’, ২০০১ সালে প্রকাশ করেন আধুনিক ফোকলোর চিন্তা, ২০০৪ সালে প্রকাশ করেন ‘মীর মশাররফ হোসেন: নতুন তথ্য নতুন ভাষ্যে’, ২০০৬ সালে প্রণয়ন করেন ‘ফোকলোর চর্চা’, ২০১৩ সালে প্রকাশ করেন ‘বাংলাদেশের উৎসব’, ২০১৬ সালে প্রকাশ করেন ‘বাঙালির বহুত্ববাদী লোকমনীষা’, ২০২১ সালে প্রকাশ করেছেন ‘সংস্কৃতি রাজনীতি ও নব-বাস্তবতা’ প্রভৃতি। উলেল্গখ্য, উপর্যুক্ত গ্রন্থসমূহের নাম দেখেই উপলব্ধি করা যায় বিচিত্র বিষয়ে গ্রন্থাকার শামসুজ্জামান খানের আগ্রহ ও আকর্ষণ ছিল। তবে, এ কথাও ঠিক যে, তিনি প্রচলিত গবেষকদের মতো কোনও বিষয়কে আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে একভাবে পূর্ণাঙ্গ কোনো গবেষণাকর্ম করেননি। যেমনটা প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণায় পি.এইচ.ডি, এমফিল সম্পাদিত হয়ে থাকে বা স্বাধীন কোনও গবেষণাকর্ম সম্পাদিত হয়ে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়, তেমন কোনো গবেষণা তিনি করেননি। তাঁর পূর্ববর্তীদের মধ্যে অধ্যাপক মযহারুল ইসলামের ফোকলোর পরিচিতি ও পঠন-পাঠন, ফোকলোর চর্চায় রূপতাত্ত্বিক বিশ্নেষণ-পদ্ধতি, আঙ্গিকতার আলোকে ফোকলোর প্রভৃতি গ্রন্থে যে নিবিষ্ট তাত্ত্বিক-গবেষকের পরিচয় দিয়েছিলেন, তিনি তাঁর গ্রন্থ প্রণয়নে সে পথের অনুসারী হন। তার বদলে তিনি তাঁর অধিকাংশ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত প্রবন্ধ-নিবন্ধ আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করতেন এবং পরে তা গ্রন্থবদ্ধ করতেন। তাই তাঁর অধিকাংশ গ্রন্থকে প্রবন্ধ সংকলন বলা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমিকভাবে শামসুজ্জামান খানের গ্রন্থসমূহ বিচার করলে দেখা যায়, তিনি অনেকটা পরিণত বয়সে ফোকলোর চর্চায় মনোনিবেশ করেছিলেন। বাংলা একাডেমিতে তার পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বাধিক সমাদৃত বাংলাদেশের খ্যাতিমান ফোকলোরতাত্ত্বিক অধ্যাপক মযহারুল ইসলাম যখন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সেই সময়ে। এক্ষেত্রে আমাদের অনুমান অধ্যাপক মযহারুল ইসলামের আধুনিক ফোকলোর চিন্তার দৃষ্টিভঙ্গি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানকে প্রভাবিত করেছিল। বাংলা একাডেমির পরবর্তীকালের মহাপরিচালক যথাক্রমে অধ্যাপক নীলিমা ইব্রাহিম, অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ও ড. আশরাফ সিদ্দিকী নেতৃত্বের সময় অতিক্রম করে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের ফোকলোর চর্চায় নিবিষ্ট হবার সময় আসে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কাজী মুহম্মদ মনজুরে মওলা ও অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা কামালের সময়ে।
জানা যায়, বাংলা একাডেমি ফোকলোর চর্চায় আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ১৯৮৫-৮৬ সালের ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অর্থানুকূল্যে ‘ফোকলোর উন্নয়ন প্রকল্প’ গ্রহণ করে। এই প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন শামসুজ্জামান খান। সে সময় এই প্রকল্পের অধীনে দেশব্যাপী ব্যাপক জরিপ কাজ বা ফোকলোর বিষয়ক একটি সমীক্ষণ চালনা করা হয়। প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২৩শে ডিসেম্বর ১৯৮৫ সাল থেকে ২১ জানুয়ারি ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত চার সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় কর্মশালা আয়োজন করা হয়। কর্মশালার উদ্বোধন করেন উপমহাদেশের প্রবীণ ফোকলোরবিদ অধ্যাপক মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন। কর্মশালায় প্রশিক্ষণের জন্য আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ ও লোকতত্ত্ববিদ অধ্যাপক অ্যালান ডান্ডিস এবং ভারতের ড. জহরলাল হান্ডু ও শ্রী শংকর সেনগুপ্ত প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়া বাংলাদেশের মযহারুল ইসলাম, ড. আশরাফ সিদ্দিকী প্রমুখ বিশেষজ্ঞ গবেষকগণ প্রশিক্ষণ দান করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্বাচিত কুড়ি জন প্রশিক্ষণার্থী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। সরেজমিন প্রশিক্ষণের জন্য তাদের কুমিল্লার ময়নামতি, ঢাকার সোনারগাঁও, রূপসী, ধামরাই ও সাভার, মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও চারিগ্রাম প্রভৃতি ফোকলোর উপাদানে সমৃদ্ধ অঞ্চল নিয়ে যাওয়া হয়। কর্মশালায় বাংলা একাডেমির অধীনে একটি ফোকলোর ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ গৃহীত হয়। [একুশের স্মারকগ্রন্থ সাতাশি, বাংলা একাডেমি, ১৯৮৭ সাল, পৃষ্ঠা. ১২৫] শামসুজ্জামান খান যেহেতু ‘ফোকলোর উন্নয়ন প্রকল্প’-এর পরিচালক ছিলেন, সেহেতু বোঝা যাচ্ছে তাঁর নেতৃত্বে বাংলা একাডেমি সে সময় ফোকলোর উন্নয়নের কর্মসম্পাদন করেন।
উল্লেখ্য, শামসুজ্জামান খানের নেতৃত্বে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাংলা একাডেমি ‘ফোকলোর উন্নয়ন প্রকল্পে’র ধারাবাহিকতা রক্ষায় জামালপুরে ৩০শে নভেম্বর থেকে ৩রা ডিসেম্বর ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত চার দিনব্যাপী প্রথম আঞ্চলিক ফোকলোর কর্মশালা অনুষ্ঠিত করে। যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুরুল ইসলাম খান, আর কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শামসুল হুদা চৌধুরী। সেই কর্মশালায় শামসুজ্জামান খান প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। কর্মশালাটিতে ভারতের বিশিষ্ট ফোকলোর গবেষক ড. তুষার চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশের ফোকলোর বিশেষজ্ঞ আশরাফ সিদ্দিকী, আব্দুল হাফিজ প্রমুখ প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পদ্ধতিতে পরিচালিত এই কর্মশালায় দশ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং ষোল জন পর্যবেক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ জামালপুরের বজরাপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প পল্লিতে শিক্ষা সফর করেন। সেখানে প্রশিক্ষণার্থীকে মৃৎশিল্পের উপকরণ মাটি প্রস্তুত করার পদ্ধতি, কুম্ভকারের চাকা, মৃৎশিল্প পোড়ানোর পদ্ধতি প্রভৃতি সম্পর্কে সরেজমিন অবহিত করা হয়। এছাড়া জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী কাঁসা-শিল্প পল্লিতে শিক্ষা সফর করা হয়।
এরপর বাংলা একাডেমি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সিলেটে দুই দিনব্যাপী ফোকলোর কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় ২৮শে ও ২৯শে জানুয়ারি ১৯৮৭ সালে। এই কর্মশালাতে ভারতের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজের ফোকলোর বিভাগের প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়া বাংলাদেশের ড. আশরাফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক আব্দুল হাফিজ প্রমুখ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দান করেন। একই বছর তথা ১৯৮৭ সালে ঢাকায় ৩রা ফেব্রুয়ারি থেকে তিন সপ্তাহব্যাপী দ্বিতীয় জাতীয় ফোকলোর কর্মশালা নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ফিনল্যান্ডের টুর্কু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর প্রফেসর ও নরডিক ইনস্টিটিউট অব ফোকলোরের পরিচালক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফোকলোর বিশেষজ্ঞ প্রফেসর লরি হংকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর ও ফোকলাইফের প্রফেসর হেনরি গ্লযাসি এবং ভারতের কেন্দ্রীয় ভাষা ইনস্টিটিউটে মহিষাসুর ফোকলোর বিভাগের প্রধান ড. জহরলাল হান্ডু কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের ড. মযহারুল ইসলাম, ড. আশরাফ সিদ্দিকী, মোখলেছুর রহমান, আবদুল হাফিজ, তোফায়েল আহমেদ, ড. আনোয়ারুল করীম ও ড. ওয়াকিল আহমেদ কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। সেসময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন প্রফেসর আবু হেনা মোস্তফা কামাল। তিনি তার স্বাগত ভাষণে বলেন, ‘আজ থেকে ৩৫ বছর আগে আমাদের দেশের যেসব সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল তরুণরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমি তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। তখন থেকেই আপন সংস্কৃতির সন্ধানে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। বর্তমান ফোকলোর কর্মশালা তারই একটি অন্যতম পদক্ষেপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে ফোকলোরের বৈজ্ঞানিক পঠন-পাঠন হচ্ছে। জ্ঞানের ক্ষেত্রে গবেষকের সংখ্যা আমাদের দেশে খুবই নগণ্য। সেজন্য আমরা এই প্রকল্প গ্রহণ করেছি। একদিন বাংলা একাডেমিকে কেন্দ্র করে একটি ফোকলোর ইনস্টিটিউট গড়ে উঠবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।
ফোকলোর শব্দটি সর্বজনগ্রাহ্য। বাংলা প্রতিশব্দ এখনও পাওয়া যায়নি। আমি নবীন ও প্রবীণ সবার কাছে শব্দটির একটি গ্রহণযোগ্য বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ফোকলোর বিজ্ঞান চর্চায় বাংলা একাডেমির কর্মকাণ্ডে আমি সবার সহযোগিতা কামনা করি।’
আবু হেনা মোস্তফা কামালের উপর্যুক্ত বক্তব্যেও পর ‘ফোকলোর উন্নয়ন প্রকল্প’-এর পরিচালক বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগের পরিচালক শামসুজ্জামান খান তাঁর প্রতিবেদন পেশ। এই ফোকলোর কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘লোকসংগীত সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকা দরকার। শুধু বাণী দিয়ে কিছুই বোঝা যাবে না। লোকসংগীত সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে শুরু সংগ্রহ করতে হবে। ছোট ছোট ছেলেমেয়ের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বাংলা একাডেমির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলা একাডেমি থেকে সব ধরনের বই প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন। সুন্দর পরিবেশ না হলে সুন্দর জীবন হতে পারে না। বাংলা একাডেমিকে কেন্দ্র করে একটি ফোকলোর ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। ইংরেজি ভাষায় বাংলাদেশের প্রচার হওয়া আবশ্যক। আমাদের দেশ ও জাতিকে জাগ্রত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে এমনকি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফোকলোর পঠন পাঠন একান্ত হয়ে পড়েছে।’ উল্লেখ্য, দ্বিতীয় জাতীয় ফোকলোর কর্মশালায় মোট ২২ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন।
এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে ২৩শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগের পরিচালক হিসেবে শামসুজ্জামান খান স্বাগত ভাষণ দেন। আমাদের অন্বেষণে যতটুকু দেখেছি এটিই তাঁর ফোকলোর সম্পর্কে প্রথম অভিব্যক্তি, তিনি বলেছিলেন: ‘বাংলাদেশের ফোকলোর চর্চায় রূপান্তর আনার ব্যাপারে এই কর্মশালায় একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত যে ফোকলোর চর্চা হয়েছে, তা বহুলাংশে ঊনবিংশ শতাব্দীর ধারায় অনুসৃত। প্রথম ও দ্বিতীয় জাতীয় কর্মশালার মাধ্যমে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত ফোকলোর চর্চায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের দেশের বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও তা তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা-বিশ্নেষণ তো হয়নি এমনকি সংগ্রহ, সংরক্ষণ প্রচেষ্টাও একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের বিচিত্র ও বিপুল ফোকলোর উপাদান যথাযথভাবে বহির্বিশ্বে প্রচারিত হলে তা শুধু আমাদের পরিচয় তুলে ধরবে না, বরং বিশ্বের ফোকলোর ভূগোলেও বাংলাদেশের ফোকলোর চর্চায় স্থান নির্ধারিত হবে। প্রশিক্ষণ, অধ্যায়ন এবং নতুন গবেষণার মাধ্যমে বাংলা একাডেমি হয়ে উঠুক চর্চার একটি মূল কেন্দ্র, এবং দেশে সৃষ্টি হোক নতুন প্রজন্মের একদল গবেষক। আমাদের জাতিসত্তার পরিচয় ফোকলোর এই মূলত বিধৃত। বাংলা একাডেমি হয়ে উঠুক আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য চর্চার ঠিকানা।’ [একুশের স্মারকগ্রন্থ সাতাশি, বাংলা একাডেমি, ১৯৮৭ সাল, পৃষ্ঠা. ১৫২]
এই অভিব্যক্তি শামসুজ্জামান খান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ধরে রেখেছিলেন। পরে তিনি ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির ফোকলোর চর্চাকে নবরূপে জাগ্রত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমিতে ইন্টারন্যাশনাল ফোকলোর কনফারেন্স এবং আন্তর্জাতিক ফোকলোর কর্মশালা তথা ফোকলোর সামার স্কুল আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আধুনিক ফোকলোর চর্চা ও গবেষণার ধারাকে প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট ছিলেন। তবে, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের বিশেষ আগ্রহ ছিল ইংরেজি ভাষার প্রতি। তাই তিনি ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে বাংলাদেশ ফোকলোর চর্চাকে একই সঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে উজ্জীবিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রচার ও প্রসার করতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি প্রতি বছর ফোকলোর বিষয়ে এক বা একাধিক একটি করে ইংরেজি গ্রন্থ প্রণয়ন করেছিলেন। তাঁর সম্পাদিত শেষ দিকের ফোকলোর বিষয়ক কয়েকটি ইংরেজি গ্রন্থের নাম হলো :সোশ্যাল চেঞ্জ অ্যান্ড ফোকলোর, ফোকলোর নিউ চ্যালেঞ্জেস, ফোকলোর ইন দ্য আরবান কন্টেক্সট, ফোকলোর গ্লোসারি প্রভৃতি।
আসলে জাতি, সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রভাবনার প্রতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের যেমন আগ্রহ ছিল তেমনি তাঁর আগ্রহ ছিল ভাষা-সাহিত্য বিবেচনায়, অন্যদিকে তিনি আকৃষ্ট ছিলেন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি অন্বেষণের আবেগে। একই সঙ্গে তিনি মূল্যায়নে তৎপর হয়েছেন বাংলার বিচিত্র মনীষাকে। যেমন তাঁর মূল্যায়নে উন্মোচিত হয়েছে লালন সাঁইয়ের অমরত্বের প্রতিভা, হাছন রাজার মানুষ ভ্রমণের পটভূমি, শাহ আবদুল করিমের ভাব ও বিদ্রোহের জগৎ, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ঐতিহ্য সাধনা, কাজী আবদুল ওদুদের জীবন ধর্ম ও মনুষ্যত্ব সাধনার স্বরূপ, আবদুল হকের যুক্তিবাদী দ্রোহ, সন্তোষ গুপ্তের সমাজ রাষ্ট্র রাজনীতি এবং শিল্প-সাহিত্যের ভাষ্য, ওয়াহিদুল হকের সমাজ-সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্ব বোধ, যতীন সরকারের উপলব্ধি, সুফিয়া কামালের অদ্বিতীয় মূর্তি, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইয়ের তুলনাহীন মনুষ্য রূপ, জাহানারা ইমামের জীবনশিল্প, অন্নদাশঙ্কর রায়ের বিবেকী কণ্ঠস্বর, মনিরউদ্দীন ইউসুফের খ্যাতিকীর্তি, চিত্তরঞ্জন সাহার সাংস্কৃতিক জাগরণের তৎপরতা, আবুল ফজলের মানবতন্ত্র প্রভৃতি। বাংলার চিন্তা, ভাব, দর্শন, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী প্রায় প্রতিটি ব্যক্তির জীবনসাধনাকে শামসুজ্জামান খান মূল্যায়ন করেছিলেন ধীমান প্রজ্ঞায়। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাব বিস্তারকারী ব্যক্তিসত্তা কেউ মূল্যায়ন করতে দ্বিধা করেননি। এক্ষেত্রে তিনি মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুইজন ফোকলোরবিদের জীবন ও কর্মকে মূল্যায়ন করেছেন, তাঁরা হলেন অ্যালান ডান্ডেস এবং হেনরি গ্লাসি। ফোকলোরের বাইরে তিনি ক্রীড়াঙ্গনের আন্তর্জাতিক কিংবদন্তি ম্যারাডোনাকেও মূল্যায়ন করেছেন। এছাড়া, তিনি অনুবাদ করেছেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘সমাজতন্ত্র কেন?’, বিখ্যাত ইতালিয়ান অভিনেতা ‘মারসেলেল্গা মাস্ত্রইয়ান্নির সাক্ষাৎকার’ এবং পাকিস্তানের ইসলামাবাদের কায়েদে আজম বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক ও উচ্চশক্তি পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. পারভেজ আমির আলি হুডভয়ের প্রবন্ধ ‘ইসলাম যেভাবে নিজ থেকে সরে গেছে’। এর সবকিছুই শামসুজ্জামান খানের ‘রচনাবলি’র প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এত বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ও কর্মতৎপরতা দেখে সত্যিই অনুভূত হতে হয়। তবে, তিনি জীবনের শেষ দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থটির প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত হবার পর এবং মুজিববর্ষের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে লেখক বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন ও স্বরূপ অন্বেষণে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি বঙ্গবন্ধু গবেষণায় তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
গত বছর বাংলা একাডেমির প্রথম সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতিত্বের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ এর সংক্রমণের মধ্যেও তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত বাংলা একাডেমিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত কর্মতৎপর এবং দায়িত্বশীল ছিলেন। তাই তো তাঁকে অতিমারির মধ্যেও গুটিয়ে থাকতে দেখা যায়নি। কিন্তু করোনার অতিমারির ছোবল থেকে তিনি তাঁর কর্মময় জীবনকে রক্ষা করতে শেষাবধি ব্যর্থ হলেন। ১৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার এই মৃত্যু আমাদের গভীর শোক, অসহায়তায় ও তীব্র শূন্যতায় আচ্ছন্ন করেছে। কেননা, তাঁর মতো বহুমাত্রিক বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যক্তিসত্তা আমাদের আরও বহুদিনের জন্য প্রয়োজন ছিল।
শামসুজ্জামান খান বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ঢাকা লিট ফেস্ট আয়োজনের অনুমতি দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। কেননা এই উৎসব আয়োজন বিভিন্ন কারণে বাংলা একাডেমির আদর্শ-নীতি-উদেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। সলিমুল্লাহ খান এক টিভি আলোচনা অনুষ্ঠানে একজন লেখক ও প্রশাসক হিসাবে তার অনুপযুক্ততার দিকে ইঙ্গিত করে তার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
তা’ছাড়া তিনি পুরস্কার পান –
১). অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার (১৯৮৭ সাল)
২). কালুশাহ পুরস্কার (১৯৮৭ সাল)
৩). দীনেশচন্দ্র সেন ফোকলোর পুরস্কার (১৯৯৪ সাল)
৪). আব্দুর রউফ চৌধুরি স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯৮ সাল)
৫). দেওয়ান গোলাম মোর্তজা পুরস্কার (১৯৯৯ সাল)
৬). শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় গবেষণা পুরস্কার (২০০১ সাল)
৭). মীর মশাররফ হোসেন স্বর্ণপদক (২০০৪ সাল)
৮). বাংলা একাডেমি পুরস্কার (২০১৭ সাল)
৯). স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৭ সাল)
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান ২০২১ সালের ১৪ই এপ্রিল ঢাকায় করোনাক্রান্ত হয়ে ৮০ বছর বয়সে মারা যান।
—————————————————————-
[ সংগৃহীত ও সম্পাদিত। তথ্যসূত্র – উইকিপিডিয়া
প্রতিবেদক, নিজস্ব। “বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান আর নেই”। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ – ১৪ই এপ্রিল ২০২১.
“বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান”। ডয়েস ভেল। ৩০শে জানুয়ারি ২০১৭ সাল। সংগ্রহের তারিখ ১৮ই অক্টোবর ২০১৭ সাল।
“বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে শামসুজ্জামান খানের পুনর্নিয়োগ”। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৬ই জুলাই ২০১৫ সাল। ২২শে আগস্ট ২০১৫ সালে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ই অক্টোবর ২০১৭ সাল।
“‘ঢাকা লিট ফেস্ট’-এর পৃষ্ঠপোষকতা ও ইংরেজিকে ‘লিডিং’ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা! | মতামত”। মতামত-বিশ্লেষণ। – ১২ই নভেম্বর ২০১৮ সাল। সংগ্রহের তারিখ – ১৯শে ডিসেম্বর ২০১৮ সাল।
“শামসুজ্জামান খান”। বিডিনিউজ২৪ডটকম। ২১শে সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ই অক্টোবর ২০১৭ সাল।