Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 10

রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

কাতর হইয়া সীতা করেন রোদন।
বিমুখ হইয়া হাসে রাজা দশানন।।
করিতে পরের মন্দ অবশ্য প্রমাদ।
রামজয় বলিয়া পড়িল সিংহনাদ।।
বানরের সিংহনাদে কাঁপে লঙ্কাপুরী।
মুণ্ড লৈয়া পলায় লঙ্কার অধিকারী।।
দশানন গিয়া শীঘ্র বৈসে সিংহাসনে।
তাহারে বেড়িয়া বৈসে পাত্র মিত্রগণে।।
কান্দেন অশোকবনে শ্রীরাম-প্রেয়সী।
হেনকালে আইল সে সরমা রাক্ষসী।।
সীতা বলিলেন, এস সরমা ভগিনী।
তব অপেক্ষায় আমি রাখিয়াছি প্রাণী।।
বিষপানে মরি কিম্বা অনলে প্রবেশি।
এতক্ষণ আছে প্রাণ তোমারে আশ্বাসি।।
যাহ দেখি রাবণ কি করিছে মন্ত্রণা।
সত্য কি প্রভুর প্রতি দিলেক সে হানা।।
জানাইয়া স্বরূপে আমারে কর রক্ষা।
প্রাণ রাখিয়াছি আমি তোমার অপেক্ষা।।
সীতাবাক্যে সরমা হইল এক পাখী।
রাবণ নিকটে গেল চতুর্দ্দিক দেখি।।
রাবণ বলিছে মন্ত্রিগণ কহ সার।
কেমনে রামের সৈন্য করিব সংহার।।
মন্ত্রী বলে, সীতা দিলে হবে অপমান।
স্বয়ং করিয়া যুদ্ধ রামের লহ প্রাণ।।
হেনকালে রাবণের মাতা অতি বুড়ী।
রাবণের কাছে গেল করি তাড়াতাড়ি।।
আশে পাশে চাহে বুড়ী রাবণের পানে।
রাবণেরে বেড়িয়াছে যত মন্ত্রিগণে।।
সবার হইতে পোড়ে মায়ের পরাণ।
কহিতে লাগিল বুড়ী হয়ে আগুয়ান।।
দেবতা গন্ধর্ব্ব নহে সীতা ত মানুষী।
কত বড় দেখিয়াছ তাহারে রূপসী।।
রাক্ষস হইয়া কেন মনুষ্যেতে সাধ।
এখন যে দেখিতেছি পড়িবে প্রমাদ।।
চতুর্দ্দশ সহস্র রাক্ষস যার বাণে।
ত্রিশিয়া দূষণ আর খর পড়ে রণে।।
সে রাম কৃতান্তদণ্ড তুল্য দণ্ডধারী।
কি বুঝিয়া আন তুমি সে রামের নারী।।
আমার বচন শুন পুত্র লঙ্কেশ্বর।
সীতাদেবী দেহ গিয়া রামের গোচর।।
সীতা দিয়া রামের সহিত কর প্রীতি।
নতুবা তোমার নাহি দেখি অব্যাহতি।।
এত যদি বলে বুড়ী মনের সন্তাপে।
শুনিয়া বুড়ীর কথা রাজা মনে কোপে।।
মায়ের গৌরব রাখি তেকারণে সই।
অন্য জন হইলে তাহার প্রাণ লই।।
কুড়ি চক্ষু রাঙ্গা করি চাহে লঙ্কেশ্বর।
নড়ী ভর করি বুড়ী উঠি দিল রড়।।
বুড়ী যদি পলাইল পেয়ে অপমান।
রাবণেরে বুঝায় তখন মাল্যবান।।
এতদিন নাতি তব বিক্রম বাখানি।
বুঝিয়া আপন বল করহ আপনি।।
যত যত রাজা হৈল চন্দ্রসূর্য্য কুলে।
কোন্ রাজা ভাসাইল পাষাণ সলিলে।।
সাগর হইল পার হইয়া মানব।
হেন রামে ঘাঁটাইলে একি অসম্ভব।।
এতদিন শুনিতেছ রামের বিক্রম।
সুজনের বন্ধু রাম দুর্জ্জনের যম।।
কুড়ি চক্ষু রাঙ্গা করি চাহিল রাবণ।
মাল্যবান রহিল হইয়া ভীত মন।।
রাবণ রাক্ষসগণে ডাক দিয়া আনে।
দিকে দিকে রাখিল সে লঙ্কার রক্ষণে।।
মহোদরে দক্ষিণে রাখিল দশানন।
এক লক্ষ রাক্ষস সে দ্বারেতে ভিড়ন।।
পশ্চিমে রাখিল ইন্দ্রজিতে যে প্রধান।
রাক্ষস অর্ব্বুদ কোটি পর্ব্বত প্রমাণ।।
পূর্ব্ব দ্বারে রাখিল প্রহস্ত সেনাপতি।
তিন কোটি রাক্ষস যে তাহার সংহতি।।
রহিল উত্তর দ্বারে আপনি রাবণ।
তিন দ্বারে যত তার ত্রিগুণ ভিড়ন।।
তাহার ছত্রিশ কোটি মুখ্য সেনাপতি।
রহিল উত্তর দ্বারে রাবণ সংহতি।।
অক্ষৌহিণী সত্তরি সহিত সে রাবণ।
সর্তক সশঙ্ক সদা সবে পুরজন।।
সরমা জানিয়া ইহা চলিল সত্বর।
সকল কহিল গিয়া সীতার গোচর।।
রাবণ কহিল মিথ্যা, না করে সংগ্রাম।
সর্ব্বদা কুশলে তব আছেন শ্রীরাম।।
তোমা দিতে বলিল নিকষা রাবণেরে।
কত মত বুঝাইল রামে ভজিবারে।।
মাতার বচন দুষ্ট না শুনিল কাণে।
সেইমত তাড়াইল বুড়া মাল্যবানে।।
কার যুক্তি না শুনিয়া যুদ্ধ করে সার।
বিনা যুদ্ধে সীতা তব নাহিক উদ্ধার।।
বহু কষ্ট গেল সীতা অল্পমাত্র আছে।
দেখিবে রামের মুখ, সুখ হবে পিছে।।
ক্রন্দন সম্বর সীতা ত্যজ অভিমান।
দিন দুই চারি বাদে যাইও প্রভু-স্থান।।
সরমার বাক্যে সীতা সম্বরি ক্রন্দন।
চিন্তেন শ্রীরাম-পদপদ্ম অনুক্ষণ।।
শ্রীরাম বলিয়া সীতা ছাড়েন নিঃশ্বাস।
লঙ্কাকাণ্ডে মায়ামুণ্ড গায় কৃত্তিবাস।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress