Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : আদিকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 45

রামায়ণ : আদিকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

অযোধ্যাতে জন্ম যদি নিলেন শ্রীপতি।
লঙ্কায় আতঙ্ক দেখে সদা লঙ্কাপতি।।
আচম্বিতে রাবণের সিংহাসন দোলে।
মাথার মুকুট খসি পড়ে ভূমিতলে।।
দশমুখে হায় হায় করে দশানন।
আচম্বিতে মুকুট খসিল কি কারণ।।
কোথা গেল ইন্দ্রজিৎ আন গাণ্ডীবাণ।
পৃথিবী বাসুকি কাটি করি খান খান।।
হেনকালে কহেন ধার্ম্মিক বিভীষণ।
জন্মিয়াছে যে তোমার বধিবে জীবন।।
পৃথিবীর প্রতি ক্রোধ কর কি কারণ।
তোমার বধিতে জন্ম নিল নারায়ণ।।
আর কারো অপরাধ নাহি দশানন।
বাসুকি কাটিতে এবে কহ কি কারণ।।
এইকালে আকাশে হইল দৈববাণী।
দশরথ ঘরেতে জন্মিল চক্রপাণি।।
শুনিয়া চিন্তিত বড় রাজা দশানন।
ডাক দিয়া বলে শুন শুক ও সারণ।।
একে একে দেখে এস পৃথিবী ভুবনে।
আমার শত্রুর জন্ম হৈল কোন্ খানে।।
এখনি মারিব তারে অতি শিশুকাল।
প্রবল হইলে সেই বাড়িবে জঞ্জাল।।
রাবণের আজ্ঞা চর বন্দিলেক মাথে।
সমুদ্রের পার হৈয়া লাগিল ভাবিতে।।
পরম বৈষ্ণব দূত শুক ও সারণ।
বাসবের দ্বারী তারা জানে ত্রিভুবন।।
শুক বলে শুন মোর ভাই রে সারণ।
অযোধ্যায় বুঝি জন্মিলেন নারায়ণ।।
আজি শুভদিন হৈল আমা দোঁহাকার।
ভাগ্যফলে দেখি গিয়া চরণ তাঁহার।।
এত বলি অযোধ্যায় দিল দরশন।
দেখিল অযোধ্যা যেন বৈকুণ্ঠ-ভুবন।।
রতন প্রদীপ জ্বলে প্রতি ঘরে ঘরে।
হৈল হরিদ্রায় পথে চলিতে না পারে।।
অলক্ষ্যিতে সান্ধাইল কৌশল্যার ঘরে।
বসিছেন কৌশল্যা শ্রীরামে কোলে করে।।
যাহার মানসে থাকে যেরূপ বাসনা।
সেইরূপে প্রভুরে দেখয়ে সেই জনা।।
পরম বৈষ্ণব তারা ভাই দুইজন।
চতুর্ভুজ রূপে দেখিলেন নারায়ণ।।
শঙ্খ চক্র গদা পদ্ম চতুর্ভুজ কলা।
কিরীট কুণ্ডল কানে হৃদে বনমালা।।
শত কোটি ব্রহ্মা তাঁরে করিছে স্তবন।
প্রভুর শরীরে দেখে এ তিন ভুবন।।
প্রসঙ্গেতে দেখিল যে সর্ব্ব পারিষদ।
সনক সনাতন আদি প্রহ্লাদ নারদ।।
এইরূপে দুই ভাই প্রভুরে দেখিয়া।
সহস্র প্রণাম করে ভূমে লোটাইয়া।।
ভক্তিভাবে করয়ে অনেক প্রণিপাত।
স্তবন করিছে তারা করি যোড়হাত।।
রাক্ষসের জাতি মোরা বড়ই অধম।
তোমার মহিমা জ্ঞানে আমরা অক্ষম।।
যে পদ ব্রহ্মাদি দেব নাহি পায় ধ্যানে।
হেন পাদপদ্ম দেখি প্রত্যক্ষ প্রমাণে।।
এই নিবেদন করি শুন মহাশয়।
তব পাদপদ্মে যেন সদা মন রয়।।
কৃপার সাগর প্রভু তুমি গুণধাম।
এত বলি গেল তারা করিয়া প্রণাম।।
পথে যেতে দুই ভাই ভাবিলেক মনে।
এ কথা কহিব না সে পাপী দশাননে।।
চুক্ষর নিমিষে তারা লঙ্কাপুরে গিয়া।
রাবণেরে কহে কথা আগে দাঁড়াইয়া।।
একে একে দেখিলাম এ তিন ভুবনে।
তোমার কি শত্রু আছে নাহি লয় মনে।।
মুকুট খসিল রাজা, হবে অপমান।
সকল তীর্থের জলে তুমি কর স্নান।।
সুবর্ণ করহ দান দীন দ্বিজ নরে।
অমঙ্গল ঘুচিবে, আপদ যাবে দূরে।।
দশ মুখ মেলিয়া রাবণ রাজা হাসে।
কেতকী কুসুম যেন ফুটে ভাদ্রমাসে।।
না বুঝিয়া কথা কহ ভাই বিভীষণ।
আমার কি শত্রু আছে হেন লয় মন।।
রাবণের কথা শুনি বলে বিভীষণ।
পরিণামে এই কথা করিবে স্মরণ।।
রাবণ সমুদ্র বলি লাগিল ডাকিতে।
আসিয়া সমুদ্র দাঁড়াইল যোড়হাতে।।
রাজা বলে পৃথিবীতে যত তীর্থ আছে।
সকল তীর্থের জল আন মোর কাছে।।
বাক্যমাত্র বলিতে বিলম্ব না হইল।
সকল তীর্থের জল সম্মুখে আইল।।
তীর্থজলে দশানন করিলেন স্নান।
দরিদ্র দুঃখীকে রাজা করে স্বর্ণদান।।
যতেক কাঞ্চন দিল নাম লব কত।
ধেনু দান শিলা দান করে শত শত।।
দান পুণ্য করিয়া বসিল দশানন।
ভাবিল অমর আমি, নাহিক মরণ।।
কৃত্তিবাস পণ্ডিতের শ্লোক বিচক্ষণ।
রামের প্রীতিতে হরি বল সর্ব্বজন।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress