Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : আদিকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 23

রামায়ণ : আদিকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

রঘু রাজ্য করে দশ হাজার বৎসর।
অজ নামে তনয় তাঁহার মনোহর।।
পুত্রের দেখিয়া রাজা প্রথম যৌবন।
পুত্রে রাজ্য দিয়া গেল বৈকুণ্ঠ-ভুবন।।
অজের সমান রাজা নাহিক সংসারে।
পুত্রের সমান পালে সমস্ত প্রজারে।।
মাথর রাজার কন্যা ইন্দুমতী নাম।
পরমা সুন্দরী সেই লাবণ্যের ধাম।।
ইচ্ছাবতী হইতে কন্যার গেল মন।
কহিল পিতার অগ্রে না করি গোপন।।
স্বয়ম্বরা হইতে আমার আছে মন।
সকল রাজারে আন কির নিমন্ত্রণ।।
যত যত মহারাজ পৃথিবীতে বৈসে।
মাথরের নিমন্ত্রণে সকলে আইলে।।
শুনিয়া এতেক বাণী, তখনি রাজন।
ভাটগণে চতুর্দ্দিকে করিল প্রেরণ।।
স্বয়ম্বরা হবে কন্যা, রূপসী পরমা।
ভাষায় প্রকাশি তার না মিলে উপমা।।
হেন রত্নে যেই জন কর অকিঞ্চন।
ত্বরায় করহ যাত্রা মাথর-ভবন।।
শুনিয়া ভাটের কথা পরম উল্লাসী।
পাইবারে সেই কন্যা সকলে প্রয়াসী।।
হেথায় মাথর-রাজ করিল শোভন।
স্বয়ম্বর-সভা যেন স্বরগ ভুবন।।
রাজার তনয় যত আসিতে লাগিল।
রাজা মহারাজ কত সভায় আসিল।।
প্রথম যৌবন কিবা দেখিতে সুন্দর।
সকলে আইল কেহ না রহিল ঘর।।
অযোধ্যা হইতে হৈল অজের গমন।
সভামধ্যে অজ গিয়া বসিল তখন।।
পশুর মধ্যেতে যেন বসিল কেশরী।
বসিল সকল রাজা অজ মধ্যে করি।।
রঘুর তনয় অজ দিলীপের নাতি।
পৃথিবী-মণ্ডলে যাঁর এক দণ্ডছাতি।।
প্রত্যেকে কহিতে নাম হইবে বিস্তর।
যত সব রাজা এল মাথরের ঘর।।
বসিল করিয়া সভা যত নৃপগণ।
তখন মাথর রাজা করে নিবেদন।।
এক কন্যা দানযোগ্যা আছে মম ঘরে।
আজ্ঞা কর সেই কন্যা আনি স্বয়ম্বরে।।
পরিণামে দ্বন্দ্ব যেন না হয় ঘটন।
তবে শীঘ্র আনি কন্যা এই নিবেদন।।
মম কন্যা বরমাল্য দিবেক যাঁহারে।
সবারে বিদায় দিয়া রাখিব তাঁহারে।।
ভাল ভাল কহিল সকল নৃপগণ।
শীঘ্র ইন্দুমতী আন করিয়া সাজন।।
হেথা যত সখীগণ, করিছে সাজন।
কত মত বেশ করে করিয়া যতন।।
কেশ আঁচড়িয়া তার বান্ধিল কুন্তল।
বিবিধ পুষ্পের মালা করে ঝলমল।।
কপালে সিন্দুর দিল, নয়নে কজ্জল।
চন্দ্রের সমান রূপ অতীব বিমল।।
ভালেতে অলকা দিল নাকেতে বেশর।
বিদ্যুৎবরণী বামা রূপের আকর।।
সুচিত্র বিচিত্র পরে পায়েতে পাশুলি।
বিধাতা গড়েছে যেন কনক পুত্তলী।।
সহচরীগণ সঙ্গে চলিল ঘেরিয়া।
মত্ত মজ-গতি রামা চলিল সাজিয়া।।
যেই জন করে ইন্দুমতী নিরীক্ষণ।
রূপের মোহেতে হরে তাহার চেতন।।
চেতন পাইয়া উঠি বলে নৃপগণ।
এ কন্যা যে পাবে তার সার্থক জীবন।।
কেহ বলে কন্যা মোরে করে নিরীক্ষণ।
কেহ বলে কন্যার আমাতে আছে মন।।
যারে পাছু করি কন্যা করয়ে গমন।
ভূমিতে পড়িয়া সেই যুড়িল রোদন।।
কেহ বলে মম সম কে আছে সুন্দর।
আমারে উপেক্ষা করি কোথা পাবে বর।।
কন্যা কি কুৎসিত রূপ দেখিল আমারে।
আমারে এড়িয়া সে ভজিবে কোন্ বরে।।
একে একে দেখিয়া যতেক রাজগণ।
অজের নিকটে আসি দিল দরশন।।
ধন পাইলে তুষ্ট যেন দরিদ্রের মতি।
গলে মাল্য দিয়া বলে তুমি মম পতি।।
বরমাল্য দিয়া যদি কন্যা ঘরে গেল।
লজ্জিত হইয়া যত রাজা পলাইল।।
বনেতে আসিয়া সবে হয়ে এক মতি।
অজকে মারিতে যুক্তি করিল ভূপতি।।
এক্ষণে সবাই থাকি বনে লুকাইয়া।
অজে মারি ইন্দুমতী লইব কাড়িয়া।।
লুকাইয়া বনে তারা রহে স্থানে স্থান।
হেথায় মাথর রাজা করে কন্যাদান।।
কন্যাদান করে রাজা করিয়া কৌতুক।
নানা রত্ন অশ্ব হস্তী দিলেন যৌতুক।।
তিন দিন ছিল রাজা মাথরের ঘরে।
আর দিন যান রাজা অযোধ্যা-নগরে।।
ইন্দুমতী সহ রথে করি আরোহণ।
কত সেনা সঙ্গে রঙ্গে চলে অগণন।।
নিদ্রায় কাতর রাজা চলিতেছে রথ।
সেইকালে রাজগণ আগুলিল পথ।।
মার মার বলি সবে আগুলিল তথা।
ইন্দুমতী দেখিয়া করিল হেঁটমাথা।।
নিদ্রাতে বিহ্বল পতি জাগান কেমনে।
হুঙ্কার ছাড়িছে আসি যত রাজগণে।।
কেমনে বাঁচাবে স্বামী কান্দে ইন্দুমতী।
সে ক্রন্দনে জাগিলেক অজ মহারথী।।
চতুর্দ্দিকে চাহি হেরে রাজা অগণন।
বেড়িয়া তাঁহারে সবে করে আস্ফালন।।
রাজগণ ডাকে, তাহে ভীত নহে মন।
মলিন দেখিল ইন্দুমতীর বদন।।
ইন্দুমতী বলে, নাথ কি ভাব এখন।
দেখনা তোমাকে ঘেরিলেক নৃপগণ।।
তিন কোটি রাজা আছে পথ আগুলিয়া।
আমায় কাড়িয়া লবে তোমারে মারিয়া।।
অজ বলে প্রসন্ন করহ প্রিয়ে মুখ।
এক বাণে সবে মারি দেখহ কৌতুক।।
এক বাণ বিনা যদি দুই বাণ মারি।
রঘুর দোহাই তবে বৃথা অস্ত্র ধরি।।
এত বলি ধনু লৈয়া দাণ্ডাইল রথে।
অজে দেখি রাজগণ লাগিল গর্জ্জিতে।।
তিন কোটি ভূপতির করি তৃণজ্ঞান।
এড়িলেন অজ সে গান্ধর্ব্ব নামে বাণ।।
এক বাণে গন্ধর্ব্ব হইল তিন কোটি।
আপনা আপনি মরে, করে কাটাকাটি।।
গান্ধর্ব্ব বাণেতে রণে নাহি যায় আঁটা।
এক বাণে তিন কোটি রাজা গেল কাটা।।
তিন কোটি রাজা সেই যুদ্ধেতে মারিয়া।
অযোধ্যাতে গেল অজ ইন্দুমতী লৈয়া।।
অজ রাজা তনু তার প্রাণ ইন্দুমতী।
হইলেন কিছুকাল পরে গর্ভবতী।।
দশ মাস গর্ভ হৈল প্রসব সময়।
হইল তনয় যেন চন্দ্রের উদয়।।
রূপে গুণে দেখি যেন অভিনব কাম।
দশরথ বলিয়া রাখিল তার নাম।।
আমি দশরথের কি কব গুণগ্রাম।
যাঁর পুত্র হইলেন আপনি শ্রীরাম।।
কৃত্তিবাস পণ্ডিত কবিত্বে বিচক্ষণ।
গান দশরথের উৎপত্তি বিবরণ।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress