একজন রাজহংসী, যেন সে ডেসডেমোনা, এলো
আমার অত্যন্ত কাছে। শুনল কাহিনী অগণিত
বললাম যেসব তাকে। শব্দ গেঁথে গেঁথে বানালাম
তার জন্যে ত্র্যাডভেঞ্চারের এক অলৌকিক ভোজ।
রইল চেয়ে মুগ্ধতায়; গাছের পাতারা গান গেয়ে
ওঠে, পাখি হয় ফুল, চতুর্দিকে গহন উদ্যান
বহু জায়গা জুড়ে রয়। কী করে দস্যুর জাহাজের
নিশান ছিঁড়েছি কিংবা শুনেছি সমুদ্রে বরফের
নেকড়ে-চিৎকার-জানালাম তাকে সবি একে একে।
বাড়ালো মদির চঞ্চু রাজহংসী, জড়াল আমাকে
গাউনের মতো ফুল্ল ডানায় ডানায়। আমি তার
বুকে মুখ রেখে রাঙা উষ্ণতায় হলাম মাতাল।
হঠাৎ একটি কাক, ধূর্ত আর বেজায় হিংসুটে,
স্নিগ্ধ রুমালের মতো সবচেয়ে সুন্দর পাতাটি
ছিঁড়ে নিয়ে গেল উড়ে। ‘আমারই রুমাল’ বলে আমি
দারুণ চিৎকারে নৈঃশব্দকে করলাম তছনছ;
যেন মস্ত হল-এ ঝাড়লণ্ঠনের দীর্ণ হাহাকার!
‘কী করে পেল সে ওই আমার নিজস্ব রুমালের
অধিকার?’ বলে রাজহংসীটির দিকে তাকালাম,
আমার দু’চোখ জুড়ে সবুজ আগুন। অকস্মাৎ
সাঁড়াশির মতো চেপে বসে রাজহংসীর গ্রীবায়
আমার দু’হাত আর ছিন্নভিন্ন নিজেরই হৃৎপিণ্ড
অদৃশ্য বর্শায়; দেখি, কী দারুণ নীল গলা তার,
চোখে নিদ্রা তীব্র এঁটে দিয়েছি, গাউন ছেঁড়াখোঁড়া।